সিজোফ্রেনিয়া: কিছু কথা

সিজোফ্রেনিয়া এক ধরনের দীর্ঘমেয়াদী, গুরুতর মানসিক রোগ যা মানুষের চিন্তা ভাবনায় বিঘ্ন ঘটায় এবং এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার আচরণে। বস্তুতপক্ষে, এই রোগ একদিকে যেমন আত্মবিধ্বংসী অন্যদিকে তেমনি সমাজ থেকে আস্তে আস্তে তাকে দূরে সরিয়ে দেয়। চিন্তা-ভাবনায় গোলমালের কারণে তার নিজের ক্ষতি, পরিবারের ক্ষতি এমনকি সমাজেরও ক্ষতি হয়ে থাকে। মাঝে মাঝে এই রোগীরা হত্যা বা আত্মহত্যার মত দূর্ঘটনাও ঘটিয়ে থাকে।

বাংলাদেশের সবচাইতে অবহেলিত মানসিক রোগের মধ্যে সিজোফ্রেনিয়া রোগ অন্যতম। যদিও দেশের একটি বড় অংশ এ রোগে ভুগছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাংলাদেশের প্রায় ১৩ লক্ষ লোক (মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ) সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত।
এই রোগের লক্ষণগুলো হলো-
১। এরা নিজেকে সমাজ থেকে গুটিয়ে নেয়
২। মাঝে মাঝে আবোল-তাবোল কথা বলে, যেগুলোকে আমরা গ্রামের মানুষরা জীন বা ভূতের আছর বা ভর বলে বিশ্বাস করে থাকি।
৩। উদ্ভট ভ্রান্ত বিশ্বাস, বা আবেগের অবনতি ইত্যাদি

সাধারণত কৈশরের শুরুতে এই রোগের প্রকাশ বেশি ঘটে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ রোগের প্রকাশ ঘটে ১৭ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে, তবে যে কোনো বয়সেই এই রোগের আক্রমণ হতে পারে। বৈজ্ঞানিক চিকিৎসায় এবং কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর সাইকোথেরাপি একজন রোগীকে মোটামুটি সুস্থ্য জীবন যাপনে ফিরিয়ে আনতে পারে। বর্তমানে এ রোগের চিকিৎসায় উন্নত ধরনের অনেক ঔষধ ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী প্রায় সম্পুর্ণরূপে ভালো হয়ে স্বাভাবিক কর্মক্ষম জীবনে ফিরে আসতে পারে। তবে এজন্য চাই রোগীর পরিবারের লোকদের সচেতনতা এবং সঠিক সহযোগিতা। আসুন আমরা সকলে মিলে এই অবহেলিত রোগীদের সেবায় এগিয়ে আসি।


প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।

Previous articleকিছু চিন্তা করতে গেলে দম বন্ধ হয়ে আসে, শ্বাস কষ্ট হয়
Next articleআমি ধৈর্য্য ধরে কোনো কাজ করতে পারি না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here