শিশুর যেসব ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেবেন না

0
71
শিশুর যেসব ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেবেন না
শিশুর যেসব ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেবেন না

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি শেয়ার করতে সবাই পছন্দ করেন। এমনকি কিছু লেখার চেয়ে অনেকে বরং ছবিই দেন বেশি। শুধু নিজেরই না, বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের ছবিও থাকে এতে। সেখানে থাকে শিশুদেরও ছবি। শিশুদের কোনো কোনো ছবি আপনি দেবেন না, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। এসব ছবি আপনার সন্তানকে পরবর্তীতে বিপদে ফেলতে পারে।
অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার সময় কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সঙ্গে শিশুর ছবি দিয়ে থাকেন। এটি পরিহার করা উচিত। শিশুর এমন ছবি দেখে অন্যরাও প্রভাবিত হতে পারে। শিশুর সামনে ইন্টারনেট ব্যবহারও তাদের এর প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। তখন অনেকে শিশুর হাতে তুলে দেন স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ। এটি শিশুর মানসিক বিকাশে বড়ধরনের বাধা।
শিশুদের গোসল করার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতে দেখা যায় অনেক বাবা-মাকে। এতে শিশুর গায়ে কোনো ধরনের জামা থাকে না এমন ছবিও থাকে। অনলাইনে প্রকাশ হওয়ার পর এ ছবি ছড়িয়ে যেতে পারে অনেক জায়গায়। সেই সঙ্গে থেকে যাবে দীর্ঘদিন। এতে শিশুর জীবনের গোপনীয়তা লঙ্ঘন হয়। এমনকি বিকৃতমনস্ক ব্যক্তিরা এসব ছবির অপব্যবহারও করতে পারে চাইলে।
অনেকেই সন্তানের অসুস্থতার ছবি দিয়ে থাকেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সম্প্রতি মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাবা-মায়েরা এটা করে থাকেন মূলত নিজেদের আত্মপ্রচারণার জন্যই। অনেকেই সন্তানের এসব ছবি দিয়ে মানুষের কাছ থেকে সহানুভূতি পান। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, অসুস্থ সন্তানের প্রতি খেয়াল না রেখে মানুষের সেই সহানুভূতিই তাকে বেশি আকৃষ্ট করে। এমনকি পরবর্তীতে সন্তান সুস্থ হয়ে উঠলেও সবার সহানুভূতি তিনি পেয়ে থাকেন। যা তাকে আরও বেশি আসক্ত করে তোলে মোবাইল স্ক্রিনের প্রতি।
শিশুর বেড়ে ওঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বড়দের সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ। বিশেষ করে বাবা-মায়েদের দেখেই তারা বড় হয়ে উঠে। নিজের সন্তানের এমন কোনো গোপন বা লজ্জাজনক কিছু বা ছবি শেয়ার করা উচিত না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই বিভিন্ন উদ্ভট নামসহ শিশুর ছবি দেন। এসব পরবর্তীতে শিশুদের জন্য সুখকর নাও হতে পারে।
বাচ্চাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন বা গেছেন সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া থেকে পরিহার করুন। কেউ আপনার শিশুকে নিয়ে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। সেটি এমনকি স্কুলে কোনো পুরস্কার নেওয়ার ছবিও হতে পারে। শিশুর গতিবিধি তখন অপহরণকারীদের জন্য সহজ হয়ে যায়।
প্রাপ্তবয়স্করা যদি ব্যক্তিগত ছবি অনলাইনে প্রকাশ করতে না চান তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তা কেন হবে? স্বাভাবিকভাবেই বড়রা টয়লেট ব্যবহারের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেন না, একইভাবে সন্তানের টয়লেট ব্যবহার শেখার সাফল্যের ছবিও শেয়ার করা উচিত হবে না। এটি একসময় সন্তানের জন্য বিব্রতকর হতে পারে।
শিশুদের বন্ধু বা অন্যান্য ভাই-বোনদের সঙ্গে ছবি দেওয়ার সময়ও খেয়াল রাখতে হবে প্রাপ্তবয়স্কদের। কারণ আপনার বাচ্চার ছবি দেওয়া ঠিক থাকলেও ছবিটি অন্য শিশুদের জন্য নিরাপদও না থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে ছবি শেয়ার দেওয়ার আগে তাদের বাবা-মাকেও জিজ্ঞাসা করে নেওয়া উচিত। কারণ তাদেরও কোনো বিষয় নিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করার বিষয় থাকতে পারে।
বাচ্চাদের নিয়ে কেউ দুষ্টামি করছে এমন ছবি পরিহার করা উচিত। কারণ মজা করতে গিয়ে শিশুর দুর্বলতাও প্রকাশ হয়ে পড়ে। এটি তাদের জন্য রীতিমতো অপমানস্বরূপ।
বিয়ার বা সিগারেট কিংবা কনডমের ছবি সহকারে আপনার শিশুকে কোনোভাবেই উপস্থাপন করা উচিত না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ছবি আপনার শিশুর জীবনকে অনিরাপদ করে তুলতে পারে।

Previous article‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল গাইডেন্স’ শিশুদের হাতে নিরাপদ ইন্টারনেট তুলে দেবে
Next articleবিএসএমএমইউ মনোরোগবিদ্যা বিভাগের মার্চ মাসের বৈকালিক সেবা সময়সূচি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here