ইতিবাচক মানসিকতা সব সময়ই শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে শরীর সুস্থ রাখতে সুস্থ ও সুন্দর মন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।
শরীর সুস্থ থাকা বা সুস্বাস্থ্য মানে শুধু রোগ বিহীন একটা শরীর নয়। বরং জীবনের এমন একটা অবস্থা যখন আপনি জীবনকে পূর্ণ মাত্রায় উপভোগ করতে পারবেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুস্বাস্থ্য বা ভালো থাকাকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে যে, স্বাস্থ্য বা সুস্থতা মানুষের সেই অবস্থা যখন সে পূর্ণ রূপে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক ভাবে কুশল এবং শুধুমাত্র সেই অবস্থা নয় যখন তার শরীর শুধুমাত্র রোগ বা জরা মুক্ত। তাই শরীর সুস্থ রাখতে বা ভালো থাকতে হলে শুধু শরীরের নয় বরং মনের ও যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
ইতিবাচক মানসিকতা এবং সামাজিক সদ্ভাব একজন ব্যক্তির ভালো থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরী। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কথা আমরা আমাদের পারিপার্শ্বিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই উপলব্ধি করতে পারছি। মহামারী কালীন সময়ে আমরা আমাদের শরীরের সাথে সাথে মনের যত্ন নেওয়াটা যে কতোটা জরুরী সেটা বুঝতে পারছি। দীর্ঘ দিন ধরে করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে আমরা গৃহবন্দী জীবন যাপন করছি। এতে করে আমরা করোনা থেকে সুরক্ষিত তো থাকতে পারছি, আমাদের শরীর করোনা আক্রান্ত হওয়া থেকে দূরে রয়েছে, কিন্তু আমরা তাতেও ভালো আছি কি? করোনা মুক্ত থাকাই কি আমাদের ভালো রাখতে পারছে? পারছেনা।
এতো কিছুর পরেও বিভিন্ন ধরণের সমস্যায় ভুগছি যার মধ্যে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন জটিলতা অন্তর্ভুক্ত। তাই শরীর ভালো রাখতে আমাদের মানসিক ভাবেও সুস্থ থাকা আবশ্যক। সুস্থ থাকা শুধু শরীরকে রোগ মুক্ত রাখা নয়, বরং জীবনকে সুস্থ ও প্রশান্ত চিত্তে উপভোগ করা।
উন্নত মানসিক অবস্থা কিভাবে শারীরিক তথা সম্পূর্ণ সুস্থতা ত্বরান্বিত করে সেটি নিয়ে আমাদের সবার একটি পরিষ্কার ধারণা থাকা আবশ্যক। বিশেষত তাদের জানা দরকার যারা দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছেন, বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও ভালো থাকার প্রয়াস করছেন এবং শরীর ও মনের যত্ন নিয়ে সুস্থ থাকতে চাইছেন। যখন কারও কোন রোগের চিকিৎসা করা হয় তখন যদি সরাসরি শুধু সেই রোগের প্রতিষেধক প্রদান করা হয় তবে তার সামগ্রিক উন্নতি কখনোই হবেনা। কিন্তু, যখন সেই ব্যক্তির মানসিক অবস্থা, জীবনাচরণ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, ইচ্ছা-অনিচ্ছা ইত্যাদি জেনে নিয়ে তারপর সেই অনুসারে তার সমস্যার সমাধান করা হয়, তখন তার সমস্যার নিবারণ অনেক সহজ এবং সফল হয়। কারো শারীরিক, মানসিক বা পারিপার্শ্বিক, যে কোন সমস্যার সমাধান করতে ব্যক্তির মনের জোর, স্বদিচ্ছা এবং ইতিবাচক মানসিক অবস্থা থাকা অত্যাবশ্যক। আর একজন মানুষ যখন মন থেকে প্রফুল্ল থাকবে, তার শরীর ও ভালো থাকবে। তার চারপাশ তার কাছে অত্যন্ত প্রীতিকর মনে হবে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বেশ কিছু মানসিক টোটকা বা দাওয়াই আছে যার সাহায্যে একজন ব্যক্তি নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে সুস্থ রাখার লক্ষ্যে নিজের জীবন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রচেষ্টা করতে পারবে। এগুলো অনুসরণ করলে ব্যক্তি তার শরীর ও মনে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হল-
১) সব কিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশঃ সব সময় আমাদের সাথে জুড়ে থাকা এবং দূরে থাকা সব ব্যক্তি এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। মনকে সব সময় সবার প্রতি প্রসন্ন রাখা উচিৎ।
২) বিনীত হওয়াঃ মনে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও অন্যদের সাথে বিনীত আচরণ করা।
৩) দয়াশীল মানসিকতা লালন করাঃ হিংসা ত্যাগ করে সব সময় দয়াশীল দৃষ্টিভঙ্গি লালন করা।
৪) সামাজিক জীবনযাপন করাঃ সবার সাথে মিলেমিশে সামাজিক জীবনযাপন করা।
৫) লক্ষ্য নির্ধারণঃ জীবনকে সঠিক দিশায় পরিচালিত করা।
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে