যৌন মিলনে অনীহা, মুক্তিতে কাউন্সেলিং

যৌন মিলনে অনীহা, মুক্তিতে কাউন্সেলিং

বৈবাহিক জীবনে যৌন মিলনে অনীহা থেকে মুক্তি পেতে সবচেয়ে বড় ওষুধ হচ্ছে কাউন্সেলিং। অর্থাৎ একজন আপনাকে সঠিক উপদেশ দিবেন এবং আপনাকে সততার সাথে মন খুলে তার উপদেশ গ্রহণ করতে হবে। পাঠক যদি এই শর্তে রাজি থাকেন তাহলে আসুন কাউন্সেলিং বিষয়ে আলোচনা করা যাক।

যৌন মিলনে অনীহা থেকে মুক্তিতে কাউন্সেলিং

মেয়েদের জন্যে যৌন মিলনে ভালোবাসা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কখনোই এমন ব্যক্তিকে বিয়ে করবেন না যাকে দেখে আপনার মনে ভালোবাসা বা শ্রদ্ধাবোধের সৃষ্টি হয় না। প্রেম করেই বিয়ে করতে হবে তা না। কিন্তু অজানা অচেনা মানুষকেও বিয়ে করা ঠিক নয়। বাবা-মাকে বুঝিয়ে বলুন তাদের পছন্দ করা পাত্রকে আপনি একটু বুঝে নিতে চান।

কর্মজীবী মহিলারা এমনকি গৃহিণীরাও কাজে কত ব্যস্ত থাকেন তা স্বামীরা বুঝতে চান না। কিন্তু স্বামীর যৌন আগ্রহে তখন অসহায় বোধ হয়। অনেক সময় বুঝিয়ে বলা যায়। কিন্তু রোজ রোজ এমন করলে স্বামীরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। আপনি নিজেকে ফ্রেশ করতে, ক্লান্তি দূর করতে গোসল করতে পারেন। হাত মুখ ধুয়ে বা ওজু করে নিলেও ক্লান্তিবোধ কম হয়। সুন্দর সুগন্ধিও আপনার ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

একটি মানুষের সাথে দীর্ঘ দিন থাকলে একঘেয়ে লাগতেই পারে। কিন্তু যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা থাকে তবে কোন বাঁধাই বাঁধা নয়। আপনি একই পরিবেশে যৌন মিলন না করে বিভিন্ন পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেন।

এতে লজ্জা বা হাসির কিছু নেই। দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া বা শোবার ঘরের গেটআপ চেঞ্জ করতে পারেন। যেমন- ক্যান্ডেল দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের নাইটি, সুন্দর পোশাক আপনাকে আকর্ষণীয় করবে। আপনিও তখন যৌন মিলনে আগ্রহ বোধ করবেন।

মন ভালো রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে কারো কাছে কিছু আশা না করা। কারণ তা বেশির ভাগ সময়ই পূরণ হয় না। কিছু মানুষ আছেন যারা কখনো আপনাকে নিরাশ করবেন না। যেমন- বাবা, মা, ভাই, বোন তাদের কাছে রাখুন। দেখবেন মনের ভাষাও বদলে যাবে।

যৌন মিলনে কষ্ট একটি কমন সমস্যা। গাইনিকলজিস্টের সাথে দেখা করে আপনার কোন শারীরিক ত্রুটি আছে নাকি পরীক্ষা করে নিন। আর লুব্রিকেশনের অভাব নিয়ে যাদের সমস্যা তারা আমার পুরাতন একটি আর্টিকেল পড়ে নিতে পারেন (সাজগোজের)।

তীব্র ঘৃণা বোধ তা যার উপরেই হোক, এমন সময় যৌন মিলনের চেষ্টা করাও ঠিক নয়। সঠিক সময়ের জন্যে স্বামীকে এ ব্যাপারে অপেক্ষা করতে হবে। চেষ্টা করবেন রাগ ক্ষোভ কম রাখতে। শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদের সাথে বুদ্ধিমত্তার সাথে সহজ সম্পর্ক রাখতে চেষ্টা করুন যেহেতু সংসারটা আপনারই।

যৌন মিলনে আনন্দ না পাওয়ার পেছনে উপরোক্ত কারনগুলো দায়ী। আর যদি মনে করেন আপনি আপনার স্বামীকে ভালোবাসেন এবং অন্য কোন সমস্যা নেই, তবে একজন সাইকিয়াট্রিস্ট দেখিয়ে আপনার কোন ডিজঅর্ডার আছে নাকি বুঝে নিন। আরেকটা কারণ হতে পারে আপনার স্বামীর কো-অপারেটের অভাব বা তিনিই আপনাকে তৃপ্ত করতে পারছেন না। তবে দেরি না করে তাকেও ডাক্তার দেখান।

স্বামীর যদি যৌন মিলনে চাহিদা কম থাকে স্ত্রীরও এক সময় অনীহা তৈরি হবে এটাই স্বাভাবিক। সকল কর্ম ব্যস্ততা থেকে সময় বের করতে বলুন। আপনার সাথে সুখ দুঃখের আলোচনা করতে বলুন। সপ্তাহে এক দিন অন্তত বাইরে নিয়ে যেতে বলুন। ঘর টিপ টপ ভাবে গুছিয়ে রাখুন, যাতে তারও ঘরে ফিরে শান্তি লাগে। ফুলদানিতে ফুল, এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন। নিজেও পরিপাটি থাকুন, যাতে আপনাকে দেখলেও স্বামীর রোমান্স করতে আগ্রহবোধ হয়।

যৌন মিলন স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের এমন একটি ধাপ যা শুধু দুটি শরীর নয়, মনকেও যুক্ত করে। এটি খুবই স্বাভাবিক; সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি ব্যবস্থা যা বংশ বৃদ্ধির জন্যে অত্যাবশ্যক। অহেতুক ভয় ও আতংক আপনাদের মধ্যে শুধু দূরত্বেরই সৃষ্টি করবে।

যৌন মিলনে একটিভ ভূমিকা পুরুষেরই। আপনি শুধু কো-অপারেট করবেন। আপনার স্বামীকে যদি বোঝাতে চান যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন। এই সামান্য কষ্টটা আপনাকে হাসিমুখেই মেনে নিতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

শেষ করার আগে একটি কথা বলে নেই। আপনি যদি চান আপনার প্রিয় পুরুষটি আপনার প্রতি ভালোবাসায় আর্দ্র থাকুক তবে সব জটিলতাই কাটিয়ে উঠতে পারবেন । আন্তরিকতা, বিশ্বাস, শ্রদ্ধার এই সুন্দর সম্পর্কে সুখী থাকুন এবং ভালো থাকুন।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

Previous articleঅটোফ্যাজিয়া রোগীরা নিজেকে খেতেও দ্বিধাবোধ করে না
Next articleস্বাধীনতার অপব্যবহার জীবনের শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here