শুধু যৌনক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ নয়, পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে অবসাদ, চুল পড়ে যাওয়া-সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অন্যান্য হরমোন সম্পর্কে জানা না থাকলেও পুরুষালী হরমোন ‘টেস্টোস্টেরন’য়ের নাম সম্ভবত সবাই জানেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, এই হরমোন তৈরি হয় অণ্ডকোষে এবং এটাই পুরুষের যৌনক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে।
একজন পুরুষের শরীরে এই হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়া বা তা তৈরি হওয়া একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়াটা শারীরিক সমস্যা। এর ফলাফল শুধু যৌনক্ষমতা কমে যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সঙ্গে আছে অবসাদ, চুল পড়ে যাওয়া, পেশির ঘনত্ব কমে যাওয়া, বদমেজাজ ইত্যাদি। পাশাপাশি পুরুষদের যৌনতা ও শারীরিক গড়নেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এই হরমোনের অভাব।
নারীর দেহও এই হরমন উৎপন্ন করে। তবে সেটা খুবই অল্প পরিমাণে। স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যের আলোকে ‘টেস্টোস্টেরন’য়ের মাত্রা কম থাকার লক্ষণগুলো এখানে জানানো হল।
আদর্শ মাত্রা
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’য়ের তথ্য মতে, ‘টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রা হল প্রতি ডেসিলিটারে ৩০০ থেকে ১০০০ ন্যানোগ্রাম। প্রতি ডেসিলিটারে এই হরমোনের মাত্রা ৩০০ ন্যানোগ্রামের নিচে নেমে আসলেই তাকে ধরা হবে মাত্রা কমে গেছে। তরুণ বয়স পর্যন্ত এই হরমোনের মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকে আর মধ্যবয়স থেকে ক্রমশ কমতে থাকে।
সনাক্ত করার পদ্ধতি
মনে রাখতে হবে, পুরুষের শরীরে ‘টেস্টোস্টেরন’য়ের মাত্রার তারতম্য হয় প্রতিদিন। তাই এই হরমোনের মাত্রা কমেছে কিনা তা জানতে হলে একাধিক রক্ত পরীক্ষা ও কয়েকটি উপসর্গের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
যৌনক্ষমতায় ভাটা: পুরুষের যৌনসসঙ্গমের ক্ষমতা এবং শুক্রানু উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ‘টেস্টোস্টেরন’। তাই এর মাত্রা স্বাভাবিকের নিচে নেমে এলে যৌনক্ষমতা মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি এই হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে সঙ্গমের আগ্রহও কমে যেতে পারে।
লিঙ্গের দৃঢ়তা ধরে রাখায় সমস্যা: ‘ইরেক্টাইল ডিসফাংশন’ হল পুরুষ জননাঙ্গের দৃঢ়তা অর্জন করা কিংবা তা ধরে রাখার অক্ষমতা। ‘নাইট্রিক অক্সাইড’ সরবরাহের মাধ্যমে ‘টেস্টোস্টেরন’ হরমোনই মূলত লিঙ্গ দৃঢ় হওয়ার ঘটনাটি ঘটায়। ফলে শরীরে এই হরমোনের অভাব থাকলে লিঙ্গের দৃঢ়তা ধরে রাখা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি একজন পুরুষের আত্মবিশ্বাসের উপরেও এই হরমোনের বড় ধরনের প্রভাব বিদ্যমান।
অবসাদ: সারাদিন নানান কাজে ব্যস্ত থাকার পর অবসাদ দেখা দেবে সেটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে যেসব পুরুষের ‘টেস্টোস্টেরন’য়ের অভাব রয়েছে তাদের কর্মক্ষমতা অনেকাংশে কমে যায়। ফলে দিন শেষে তারা অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে যান।
মন ও মেজাজ: ‘টেস্টোস্টেরন’য়ের অভাবের সঙ্গে আবেগতাড়িত বিভিন্ন সমস্যা জড়িয়ে আছে যেমন- মন খারাপ থাকা, মানসিক চাপ, খিটখিটে মেজাজ, মানসিক অস্বস্তি ইত্যাদি। এর কারণ হল, শারীরিক বিভিন্ন দিকের পাশাপাশি মস্তিষ্কের কার্যাবলীতেও প্রভাব ফেলে এই হরমোন। তাই এর অভাবে একজন পুরুষের মানসিক অবস্থা অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে যায়।
অণ্ডকোষ ছোট হয়ে যাওয়া: স্বাভাবিকের তুলনায় অণ্ডকোষ যদি ছোট মনে হয় তবে হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করানো উচিত। কারণ, ‘টেস্টোস্টেরন’য়ের অভাবে অণ্ডকোষ এবং পুরুষাঙ্গ দুটোর আকার ছোট হয়ে যেতে পারে।