শিশু যখন তার কল্পনার জগতের মনগড়া গল্পগুলো বলে তখন বাবা মা খুব আনন্দ নিয়ে শোনে। আহ্লাদের বুলিগুলো খুব মিষ্টি লাগে বাবা-মায়ের। কিন্তু একটু বড় হয়ে স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর যখন শিশু মন গড়া কথা বলে তখন সেই কথাগুলোই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় অভিভাবকের। সন্তানের মিথ্যা কথা বলার অভ্যাসের কারণে বিব্রত হতে হয় তাদের।
শিশুদের মিথ্যা বলার অভ্যাস দূর করতে বাবা-মাকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। বকা-ঝকা না করে সন্তানকে ধীরে ধীরে বুঝিয়ে মিথ্যা থেকে দূরে সরিয়ে আনতে হবে। জেনে নিন সন্তানের মিথ্যা বলার অভ্যাসে বাবা-মায়ের করণীয় সম্পর্কে।
নিজে মিথ্যা বলা ছাড়ুন
শিশু পার্ক কিংবা চিড়িয়াখানায় টিকিট কেনার সময় যদি সন্তানের মিথ্যা বয়স বলেন কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত মেহমান এড়াতে যদি ঘরে থেকেও ‘নেই’ বলে দেন, তাহলে আপনিই সন্তানকে মিথ্যা বলা শেখাচ্ছেন। সন্তানের সামনে সচেতন কিংবা অসচেতনভাবে অনেক অভিভাবকই মিথ্যা বলেন। আপনি যা করছেন সেটাই আপনার সন্তান শিখছে। তাই সন্তানের মিথ্যা বলার অভ্যাস দূর করতে প্রথমে আপনাকে মিথ্যা বলা ছাড়তে হবে।
শাস্তি কিংবা বকা নয়
যেসব শিশুকে কারণে-অকারণে বকা কিংবা শাস্তি দেওয়া হয় সাধারণত সেসব শিশুদের মিথ্যা বলার প্রবণতা বেশি থাকে। শাস্তি কিংবা বকার ভয়ে বাবা মায়ের কাছে সত্যটা লুকায় তারা। তাই সন্তান কোনো অপরাধ করলেও শাস্তি না দিয়ে বরং তাকে খারাপ-ভালোর পার্থক্যটা বুঝিয়ে দিন।
সত্যের প্রশংসা করুন
আপনার সন্তান যখন কোনো অপরাধ করে এসেও সত্য স্বীকার করে নেবে, তখন তার প্রশংসা করুন। এছাড়াও কার্টুন কিংবা গল্পের বইতে যখন কোনো চরিত্রকে সত্যবাদী হিসেবে দেখানো হবে, তখন সেই চরিত্রের প্রশংসা করুন। এতে সত্য বলতে উৎসাহী হবে আপনার সন্তান।
সমস্যার সমাধানে সহায়তা করুন
আপনার সন্তান স্কুলে কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা হলে তাকে সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করুন। সন্তানকে দোষারোপ না করে তাকে কীভাবে ঝামেলা মোকাবেলা করতে হবে সেই ব্যাপারে উপদেশ দিন। আপনার সহযোগিতায় সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং আপনার সঙ্গে মিথ্যা বলার অভ্যাস কমে যাবে তার।
মিথ্যা বলার অভ্যাস একদিনে গড়ে ওঠে না। নানা কারণে ছোটবেলা থেকেই ধীরে ধীরে মিথ্যা বলার অভ্যাস বাড়তে থাকে। তাই মিথ্যার বীজ গোড়াতেই উপড়ে ফেলতে সচেষ্ট থাকতে হবে বাবা-মাকে।
সূত্র: ফেমিনা।