প্রযুক্তির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটি দিক থাকে। এটি হতে পারে গেমিং ইন্ডাস্ট্রি বা অন্য যে কোনো কিছু। তবে এটি ঠিক আছে ততক্ষণ, যতক্ষণ পর্যন্ত এটা নেশার পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে।
কিন্তু সম্প্রতি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে ভিডিও গেম ইন্ডাস্ট্রি। যেখানে গেম আসক্তদের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। যে কারণে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ‘গেমিং ডিজঅর্ডারকে অন্তর্ভুক্ত করেছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, এটিকে সার্বজনীন সমস্যা হিসেবেও চিহ্নিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে গেমিং ডিজঅর্ডার কে অন্তর্ভুক্ত করেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ভ্লাদিমির পোজনায়েক বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রমাণ আছে যে, এই একই রকম সমস্যা এবং তার পরিণতি ভোগ করছে আমেরিকা, আফ্রিকা , ইউরোপে দেশগুলো। ফলে এটিকে আমরা একটি সার্বজনীন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এ জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রও চালু হয়েছে বলে বিবিসির ঐ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। যেখানে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের শহর থেকে দূরে ‘প্রিমরোজ লজ’ নামের একটি আবাসন পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু হয়েছে। যেটি মাদক, জুয়া ও ভিডিও গেমে আসক্তদের চিকিৎসা করে।
এখানেই একজন গেম আসক্ত পিটার, তাঁর সাথে কথা বলে বিবিসি। সে জানায়, ‘আমি খুব গেম আসক্ত ছিলাম। অ্যাকশন ও শুটিং গেমগুলো খেলতে পছন্দ করতাম এবং সারারাত বসেই গেম খেলতাম। যার কারণে আমার সব হারিয়েছি। এর কারণে অফিস থেকে চাকরি চলে যায়, পরিবারেও আসে চরম বিপর্যয়।’ কিন্তু তার হুশ ফিরেছে যখন কি নেশা তার সব কিছুই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
এই কেন্দ্রের থেরাপিস্ট ম্যাথু রিস বলছেন, ‘প্রাথমিক দিকে বিভিন্ন নেশায় আক্রান্ত মানুষগুলো এখানে আসতো। কিন্তু গত দেড় বছরে গেম আসক্তদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
কিন্তু এসব পুনর্বাসন কেন্দ্রের খরচ অনেক বেশি বলেও জানায় বিবিসি। তাই যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস ‘গেমিং ডিজঅর্ডারদের’ নিয়ে আলাদা করে চিন্তা করছে।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য গেম ইন্ডাস্ট্রি ট্রেড বডি’র প্রধান নিবার্হী ড. জো টুইস্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে পুরোপুরি দ্বিমত পোষণ করেছেন। তিনি বলছেন, একটি ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে অনেকগুলো একাডেমির সাথে আমাদের কাজ করতে হয়, গবেষক এবং সমাজ বিজ্ঞানীদের সাথে কাজ করতে হয়। আর আমরা বিশ্বাস করি এটা একদমই প্রাথমিক পর্যায়ে হয়ে গেছে ‘গেমিং ডিজঅর্ডার’ বলাটা। কিন্তু এর স্বপক্ষে খুব শক্ত কোন ও নির্ভরযোগ্য সার্বজনীন কোন প্রমাণ আছে বলে আমরা মনে করি না।
এই খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন যেহেতু গেমিং ইন্ডাস্ট্রিটা দিন দিন খুব জনপ্রিয় হচ্ছে, এটা ঘিরে অনেক নতুন সমস্যা ও তৈরি হচ্ছে। যে সমস্যাগুলো নিঃসন্দেহে চিন্তার কারণে বটে বলেও জানানো হয় ঐ প্রতিবেদনে।