মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় আমরা কী করতে পারি!

0
26

সম্প্রতি ব্রিটিশ জার্নাল অব সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত ‘কান্ট্রি পেপার অন মেন্টাল হেলথ- বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮.৭ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত। প্রতিবেদন অনুসারে, মহামারি করোনার কারণে মানসিক রোগের ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

কিন্তু মনের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে শরীরও অসুস্থ হয়ে যায়। শরীরের অসুস্থতা দৃশ্যমান হলেও মানসিক অসুস্থতা বোঝা যায় না। হুট করে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনার মাধ্যমে হয়ত আমরা জানতে পারি, কিন্তু ততক্ষণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে না আর। এজন্য নিজেকে ভালো ও সুস্থ রাখার জন্য অবশ্যই মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া জরুরি।

কীভাবে আমরা নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে পারি, তেমন কিছু বিষয় আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করছি।

পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে

ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এই রাসায়নিকগুলো আমাদের মেজাজ ও আবেগ ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই নিজের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানো উচিত।

সুষম খাবার খেতে হবে

শরীর এবং মনের জন্য অবশ্যই সুষম খাবার প্রয়োজন। কিছু খনিজ আছে যা আমাদের মেজাজ পরিবর্তনের জন্য দায়ী। আবার মাংসের প্রতি আকর্ষণও আমাদের শরীরের ক্ষতি করে থাকে। এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফেইন গ্রহণ করলে আমাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, হতাশা এবং উদ্বিগ্নতা বেড়ে যায়। তাই আমাদের সুষম খাবার প্রয়োজন।

ভিটামিন ডি আমাদের শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে আমাদের মস্তিষ্কে অ্যান্ডোরফিন ও সেরোটোনিন এর উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। যা আমাদের মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও প্রতিদিন অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও রোদের আলো গায়ে মাখা প্রয়োজন। অনেকে শীতকালে হতাশ হয়ে পড়েন। যা সিজনাল অ্যাফেকটিভ ডিজঅর্ডার নামে পরিচিত। তাই পর্যাপ্ত সূর্যের আলো গায়ে মাখুন, এতে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করা উচিত। এতে নিউরোক্যামিকেল হরমোন রিলিজ হয়। যা আমাদের আনন্দে থাকতে সহায়তা করে। এছাড়াও নিয়মিত শরীরচর্চা করলে উদ্বিগ্নতা, চাপ, ক্লান্তি দূর হয়। এছাড়াও এটা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করেন। তাই আমাদের নিয়মিত শরীরচর্চা করা উচিত।

সামাজিক হওয়ার চেষ্টা করুন

নিজেকে ঘরের মধ্যে আটকে না রেখে সামাজিক হওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের মধ্যে না থেকে সবার সাথে মেশার চেষ্টা করুন। নিজের জগতে থাকলে তখন মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হলে সেটার ফলাফল ভালো হয় না। তাই সবার সাথে মেশা উচিত।

নেশা এবং অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন

অনেকে হতাশা কাটানোর উপায় হিসেবে মাদক এবং অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু এটা ভুল একটা সিদ্ধান্ত। এগুলা হতাশা কাটায় না বরং শরীর ও মনে বাজে প্রভাব ফেলে। লম্বা সময় ধরে অ্যালকোহলে আসক্ত হলে শরীরে থায়ামিনের অভাব ঘটে। যা আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমিয়ে ফেলে। ফলে আমাদের স্মৃতি বিভ্রাট থেকে শুরু করে মনোযোগের অভাব ও চোখের সমস্যা হতে পারে।  এছাড়াও অন্য নেশাজাতীয় দ্রব্যও শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে। তাই নিজের জন্য হলেও মাদকমুক্ত থাকা উচিত।

অন্যকে সাহায্য করুন এবং প্রয়োজনে নিজেও সাহায্য নিন

কাউকে সাহায্য করলে নিজের মধ্যেও অন্যরকম ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করে। তাই চেষ্টা করুন অন্যের জন্য কিছু করতে। তাহলে আপনার মন ভালো থাকবে। এছাড়াও নিজের প্রয়োজনে যে কারো কাছেই সাহায্য চাইবেন। মানসিক কোনো অস্বস্তিবোধ করলেও যে কারো সাথে নিজের বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। দ্বিধা করবেন না।

সূত্র: মেন্টাল হেলথ/পিপল ফার্স্ট ইনফো

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

Previous articleদুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক বৈকল্য
Next articleআমি যৌন কিছু দেখলে, ভাবলে লিঙ্গের আগায় বীর্য আসে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here