তারকা বলতেই আমাদের চোখে কিছু সুখী মানুষের চিত্র ভেসে ওঠে। যাদের দেখলেই মনে হয়, এদের মতো জীবন কাটাতে পারলে আর কিছুই চাওয়ার থাকতে পারে না। কিন্তু সব দেখাই কী সত্য? পর্দার ওই পাশের মানুষ সবসময় সুখী থাকতে পারে?
আসলে পারে না। তারকারাও মানুষ, তাদেরও মন খারাপ হয়। তাদেরও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। তবে সেখান থেকে উন্নতির উপায়ও খুঁজে নেন তারা। বিশ্বব্যাপী এমন অনেক তারকা আছেন, যারা মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়েছেন। এমনকি সুস্থ হওয়ার পর মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করেছেন। পপ সঙ্গীতশিল্পী সেলেনা গোমেজ তাদেরই একজন।
২০১৮ সালে এই গায়িকা মডেল মারাত্মকভাবে মানসিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এক পর্যায়ে তিনি নিজেকে আড়াল করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সবকিছু থেকে নিজেকে আড়াল করে নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে অবশ্য মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। সেই দুঃসময় থেকে মুক্ত হয়ে নিজেই মানুষকে সচেতনের কাজে নেমে পড়েন সেলেনা গোমেজ।
নিজের কাজের সাফল্যের জন্য ২০১৯ সালে মেন্টাল হেলথ অ্যাডভোকেসির জন্য ম্যাকলেন অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলেন সেলেনা। নিজের সেই সময়ের অবস্থা নিয়ে সেলেনা গোমেজ বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা যখন সত্য কথা বলি তখন বেশি ভালো থাকি। আমি আমার জীবনের কিছু সত্য কথা বলবো। ২০১৮ সালে আমি মানসিকভাবে এবং আবেগীয় দিক থেকে অনেক বেশি ভুগছিলাম। আমি আসলে এই বিষয়গুলো লুকিয়ে রাখতে চাচ্ছিলাম। চেয়েছিলাম, নিজের মধ্যে রেখে এগুলার সমাধান করে ফেলতে। কিন্তু সম্ভব হচ্ছিলো না। সবার সামনেই আমার দুঃখগুলো প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছিলো। আমি হাসতে পারছিলাম না এবং স্বাভাবিক থাকতে পারছিলাম না।
এই সঙ্গীতশিল্পী আরও যোগ করেন, ‘আমার মনে হচ্ছিলো যে, সব দুঃখ-কষ্ট আমাকে ভাসিয়ে দিচ্ছিলো, আমি দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলাম। আমি মনে হয়, জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছিলাম।’
মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া নিয়ে এই পপ তারকা আরও যোগ করেন, ‘সে সময় নিজের জন্য, আমার হতাশা, দুঃখ, উদ্বিগ্নতা কারো সাথে শেয়ার করা খুব খুব প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিষয়টা এত সহজ ছিলো না। আমি ভয় পাচ্ছিলাম, কেউ যাতে আমার এই দূর্বলতা গুলো শুনে ভুল না বুঝে এবং বিচার না করে। এরপর আমি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করি। এবং নিজেকে সেই খারাপ সময় থেকে বের করে আনি।’
মানুষকে সচেতন করা নিয়ে সেলেনা গোমেজ আরও বলেন, ‘আমি জানি, আমি মানুষকে এমন অভিজ্ঞতা দিয়েছিলাম যে, জীবনটা খুব সুন্দর এবং অসাধারণ। আর সেই আমিই কিনা নিজের চিন্তা এবং অনুভূতি নিয়ে জীবনে সংগ্রাম করছিলাম। কিন্তু এটা আমার দোষ না। সাময়িকভাবে এটা হয়তো আমাদের ভেঙ্গে দেয়। কিন্তু দূর্বল হওয়া যাবে না। বরং এটা আমাকে মানসিকভাবে এখন আরও পরিণত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। সবাই আমরা চাইলেই এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারি। এজন্য আমাদের সাহায্য প্রয়োজন এবং একে অপরকে ভীষণ প্রয়োজন।’
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে
