মন ভালো রাখবে পোষা প্রাণী

দীর্ঘ সময় থেকে প্রাণী মানুষের জীবনের অংশ হয়ে আছে। রিসার্চ ফার্ম হারিস পোল-এর মতে, পাঁচটি মার্কিন পরিবারের মধ্যে তিনটির বেশি পরিবারে পোষা প্রাণী রয়েছে। সে ‍অনুযায়ী, ৬২ শতাংশ পরিবারে একটি বা তার বেশি কুকুর, বিড়াল, পাখি, সাপ, কচ্ছপ, গিরগিটি বা অন্যান্য প্রাণী রয়েছে।
প্রশ্ন জাগতে পারে, ঠিক কত আগে থেকে মানুষের সঙ্গে প্রাণীদের এই সম্পর্ক?
গবেষকরা বলছেন, ৩২,১০০ থেকে ১৮,৮০০ বছর আগে প্রথম কুকুর গৃহে পালন শুরু হয়। শুরুতে মনে করা হতো বাড়িতে কুকুর থাকলে শিকারে সহায়তা পাওয়া যাবে, নিরাপত্তা থাকবে এবং বিপদে আগে থেকেই সংকেত পাওয়া যাবে।
পোষা প্রাণী থাকার আরও অনেক সুবিধা রয়েছে। যেমন বিড়াল ইঁদুর শিকার করে ফসল রক্ষা করে। আধুনিক পৃথিবীতে মানুষের কল্যাণে প্রাণীর ব্যবহার কল্পনাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এখন ল্যান্ড মাইন শনাক্ত করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ইঁদুরকে।
কিন্তু এসবের চেয়ে অনেক বেশি উপকার করছে পোষা প্রাণীরা। সম্প্রতি একটি জরিপে উঠে এসেছে প্রাণী প্রেমীদের কথা। আর সেসব নিয়ে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, পোষা প্রাণী মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
১. প্রাণীরা মন শান্ত রাখে এবং উদ্বিগ্নতা কমায়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রাণী পোষে তাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।
২. বাড়িতে কুকুর থাকলে আপনার ঠিকই ভোরে বাইরে যাওয়া হবে। এতে সুবিধা হলো, একদিকে যেমন আপনার শরীর চর্চা হচ্ছে- এতে এনডরফিনস বাড়ে। ফলে আপনার শরীর ভালো লাগবে। অন্যদিকে ভোরের আবহাওয়া আপনার উৎসাহ বৃদ্ধি করবে।
৩. কেবল পোষা প্রাণীর কাছ থেকেই পাওয়া যায় নিঃশর্ত ভালবাসা। আপনি কি অবস্থায় আছেন, আপনার ঘর-বাড়ি কেমন, আপনি তাদের কেমন খাবার খেতে দিলেন- এসব কোনো কিছুর পরোয়া তারা করে না।
৪. অনেক সময় বাইরে যেতে বা সেজন্য তৈরি হতে ইচ্ছা করে না। যদি আপনার পোষা প্রাণী থাকে, তাহলে তার কারণেই আপনাকে তৈরি হতে হবে। শুধু তাই নয়, পোষা প্রাণীকে সময় মতো খাবার দিতে গিয়ে আপনারও সময় মতো খাওয়া হয়ে যাবে।
৫. পোষা প্রাণীরা ‘ফ্যান’। তারা আপনাকে দেখতে, আপনার সঙ্গে খেলতে, আপনার সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করে।
৬. বলতে পছন্দ করি আমরা। জরিপে কেউ কেউ বলেছেন, ‘যখন কিছু বলার নেই- সে সময় পোষা প্রাণী কথা বললে মনে হয়েছে আমি আমার সন্তানের কথা বলছি’।
৭. প্রাণী মিশতে সহায়তা করে। প্রাণীর সঙ্গে থাকার ফলে, খুব সহজেই বন্ধুত্ব করতে পারবেন আপনি।
৮. গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাণীকে সাহায্য করলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। প্রাণীদের উদ্ধার করা, তাদের আশ্রয় দেওয়া ইত্যাদি কাজে যুক্ত হলে একইসঙ্গে আনন্দও পাওয়া যায়।
৯. প্রাণীরা অসুস্থ ব্যক্তি, বিষণ্ন ব্যক্তি এবং নিঃসঙ্গ ব্যক্তিকে সাহায্য করে।
১০. যদি আপনার বাড়িতে একাধিক প্রাণী থাকে, দুইটি কুকুর বা দুইটি বিড়াল- এদের নিজের আনন্দ করার সময় দেখার অনুভূতি ‘অসাধারণ’ উল্লেখ করেছেন অনেকে।
যদি আপনার কোনো পোষা প্রাণী নাও থাকে, আপনার যে বন্ধুর বাসায় পোষা প্রাণী রয়েছে- বিষণ্ন সময় তার বাড়িতে যেতে পারেন। গবেষকদের দাবি অবশ্যই ভালো লাগবে।
শুধু তাই নয়, চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যান। পার্থক্য বুঝতে পারবেন। প্রাণীদের জন্য আপনার বাড়ি উন্মুক্ত করেন, জীবন বদলে যাবে।

Previous articleবৈদ্যুতিক শক চিকিৎসা- ইসিটি: সিনেমা ও বাস্তবতা
Next articleনারীদের বিষণ্ণতা থেকে মুক্তি দেয় ক্ষমাশীলতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here