মনোরোগ-স্নায়ুরোগ নিরাময়ে মস্তিষ্কে বিদ্যুৎ চালনা

0
20
মগজ-কোষের গভীরে সরাসরি বিদ্যুৎ চালনার মাধ্যমে দূর করা সম্ভব হয়ে উঠবে পারকিনসন, বিষাদগ্রস্ততাসহ মনো-দৈহিক নানা বৈকল্য। এমনই আশাবাদের কথা শোনাচ্ছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।
গত বৃহস্পতিবার ‘সেল’ নামের একটি জার্নালে এমআইটির গবেষক দলটির গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষকরা ইঁদুরের ওপর সফল পরীক্ষা চালিয়েছেন। তাতে কিছু আশার আলোও দেখতে পেয়েছেন তারা।
এখন তারা এসব রোগে আক্রান্ত-নন-এমন কিছু সুস্থ ব্যক্তির ওপরও পরীক্ষা চালাচ্ছেন। উদ্দেশ্য, মানব-মস্তিষ্কে এটা কাজ করে কিনা দেখা। পরীক্ষায় সুফল মিললে পরে রোগাক্রান্তদের ওপর পরীক্ষা চালানো হবে। এর মানে এখন অপেক্ষা শুধু ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের। তখন বোঝা যাবে এই পদ্ধতির প্রয়োগ কতোটা কার্যকর ও নিরাপদ।  অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়াটি কেমন হয় তা জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দেয়া।  তখনই দেখা ও জানা যাবে পদ্ধতিটির চূড়ান্ত ফল।
এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘টেম্পোরাল ইন্টারফারেন্স’ যেখানে করোটিতে ইলেক্ট্রোড স্থাপন করে নিউরণে প্রবাহিত করা হয় ফলে মানসিক প্রফুল্লতার সৃষ্টি হয়।
তারা জানান, “আপাতত এটি একটি কার্যকরী ও নিরাপদ প্রক্রিয়া। এটি নিউরোলজিক্যাল এবং সাইকোলজিক্যাল রোগীদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কম খরচে ও ব্যাপকভাবে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।”
গবেষক দলটি একটি ইলেক্ট্রিক ডিভাইসও আবিষ্কার করেছেন যা রোগীরা বহন এবং প্রয়োজনমত ব্যবহার করতে পারবেন। দামও তুলনামূলক কম হবে।
ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Emory University) সাইকিয়াট্রিক, নিউরোলজি ও রেডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক এবং এই চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রয়োগিক প্রবর্তক ড. হেলেন মেবার্গ বলেন, “তারা সূচারু রূপে মগজের ভেতর বিদ্যুৎ পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছেন কোনো প্রকার ক্ষতি ছাড়া।”
অন্যদিকে এমআইটি-র নিউরোবায়োলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহ-পরিচালক ও সিনিয়র লেখক এডওয়ার্ড এস বয়ডেন জানান-“আমি ও আমার সাহকারীরা মিলে সফলভাবে এবং কোন প্রকার ক্ষতি ছাড়াই মগজে বিদ্যুৎ পরিবাহিত করতে পেরেছি। তবে দীর্ঘকালীন ক্লিনিক্যাল রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।”
ক্লিনিক্যাল রিপোর্টে সফলতা আসবে বলেও আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “এ প্রক্রিয়ায় কম ভোল্টেজের বিদ্যুৎ দিয়ে কাজ হয় না । কেননা যদি আপনি মস্তিষ্কে ১০০০ হার্টজ ও ১০০১ হার্টজ বিদ্যুৎ প্রবাহিত করান তাহলে নিউরনে এটি ১ হার্টজ হিসেবে প্রবাহিত হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে দুইটি সংযোগ একটি সিগন্যাল দেখাবে।”
গবেষক দলের ব্যাখ্যায় পাওয়া যায় ইঁদুরের মগজে তড়িৎ প্রবাহিত করার পর নিউনেঁ তড়িৎ-এর কোনো প্রমাণ বা ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বলেছেন এমআইটির পরিচালক লি হিউয়েই সাই।
এছাড়া বোস্টন শিশু হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের নিউরোমডুলেশন বিভাগের পরিচালক নিউরোলজিস্ট ড. আলেকজান্ডার রোটেনবার্গ বলেন, তিনি মৃগীরোগের সমাধানের আশায় এই দলকে সহযোগিতা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “মৃগীরোগের ক্ষেত্রে হাজারে প্রায় দশজন রোগী থাকেন যাদের ঔষধের মাধ্যমে রোগ নিরাময় সম্ভব হয় না। এই প্রক্রিয়ায় তার সমাধান হবে।”
Previous articleমানসিক রোগ নির্ণয়ে বাংলায় রিসার্চ স্কেল নির্ধারণে বিএসএমএইউ’তে কর্মশালা
Next articleমিথ্যাবাদী চিনবেন যেভাবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here