ডিপ্রেসন বা বিষণ্ণতা – বর্তমান সময়ের একটি বহুল প্রচলিত শব্দ। মানসিক এ অসুখ সম্পর্কে আমরা যা ভাবি, এটি তার চেয়েও বেশি জটিল ও ভয়ঙ্কর। অনেক বিশেষজ্ঞই এ অসুখ থেকে মুক্তি পেতে ভুক্তভোগীদের কফি খাওয়ার কিংবা ইতিবাচক চিন্ত-ভাবনা করার পরামর্শ দেন। কিন্তু, এসব বিষয় বিষণ্নতা দূরীকরণে সাহায্য করে – তা নিয়ে রয়েছে বিস্তর দ্বিমত।
আবার অনেক গবেষণায় দেখা যায়, দৈনন্দিন শারীরিক ব্যায়াম বিষণ্ণতা দূর করে। তবে অনেকেই শারীরিক ব্যায়াম করতে পছন্দ করেন না কিংবা তাদের সেই শক্তিও থাকে না। সেই সব ব্যক্তির জন্য রয়েছে সুখবর।
নতুন একটি বৈজ্ঞিানিক গবেষণার দাবি, শুধু একটি সহজ কাজই আপনার বিষণ্ণতা দূর করবে। কি সেই কাজ, ভাবুন তো? গরম পানিতে গোসল! কী অবাক হচ্ছেন তাই না!
জার্মানির ফ্রিবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ৪৫ জন লোকের ওপর এ গবেষণা পরিচালনা করেন। অংশগ্রহণকারী সকলেই বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন। তাদেরকে দু’টি দলে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম দলটিকে প্রতিদিন ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম পানিতে ৩০ মিনিট গোসল করার নির্দেশনা দেয়া হয়। অন্যদিকে, দ্বিতীয় দলটিকে সপ্তাহে দুই বার ব্যায়াম করতে বলা হয়।
এর আট সপ্তাহ পর বিষণ্ণতার স্কেলের সাহায্যে অংশগ্রহণকারীদের মানসিক অবস্থা পরিমাপ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, গরম পানিতে গোসল করা প্রথম দলটির স্কোর আগের চেয়ে ৬ পয়েন্ট কম। অন্যদিকে, ব্যায়াম করা দলটির স্কোর আগের চেয়ে মাত্র তিন পয়েন্ট কম।
সুতরাং, এটা প্রমাণিত যে বিষণ্ণতা দূরীকরণে নিয়মিত গরম পানিতে গোসল ব্যায়ামের চেয়ে বেশি কার্যকর।
গরম পানিতে গোসল কেন বিষণ্ণতা দূর করতে সাহায্য করে? এর বৈজ্ঞানিক কারণ হলো – সার্কাডিয়ান রিদম। সার্কাডিয়ান রিদম হলো ২৪ ঘণ্টার দেহ ঘড়ি, যা আমাদেরকে বলে দেয় কখন ঘুমাতে হবে। এছাড়া এটি এর তাপমাত্রা দ্বারা জৈব রসায়ন এবং আমাদের দেহের আচরণকে প্রভাবিত করে।
বিষণ্ণ লোকজনের মধ্যে অকার্যকর বা নিশ্চুপ সার্কাডিয়ান রিদম লক্ষ্য করা যায়, যার ফলে তারা ইনসমনিয়ায় ভুগে। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে যে কেউ তার সার্কাডিয়ান রিদমের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে, যা বিষণ্ণতা রোধে সাহায্য করে।
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে