দুশ্চিন্তার সমীকরণ!

0
110
দুশ্চিন্তার সমীকরণ

বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তার কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। যেগুলো নিজের অজান্তে মানুষ মেনে চলে। ড. রবার্ট এল লেহি তার “দুশ্চিন্তা মুক্তি” বইতে এ বিষয়ে বিস্তর তথ্য তুলে ধরেছেন। দুশ্চিন্তায় আমাদের আচরণ আর চিন্তাকে খুব ভালভাবেই এই গুঁঢ়- অবচেতন পদ্ধতি দিয়ে বর্ণনা করা যায়। প্রাকৃতিকভাবে আমাদের মস্তিষ্কের এমন কিছু পদ্ধতি যেন ঠিক করে দেয়া। দুশ্চিন্তার সময় নিয়ম করে একটার পর একটা ঘটতে থাকে। যেন দুশ্চিন্তা সৃষ্টি সফটওয়্যারের মত। পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা যায়।

প্রথম ধাপ: বিপদ শনাক্তকরণ
প্রথম ধাপ খুব দ্রুত বিপদ শনাক্ত করা যাতে তা দূর করা বা তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দুশ্চিন্তার সময় আমরা সব সময় বিপদের আশঙ্কা করি। বিপদ খুঁজতে থাকি। এর মানে আমাদের দুশ্চিন্তাপ্রীতি নয়। আমাদের আশেপাশে হুমকিস্বরূপ অনেক কিছুই আছে। সে সম্পর্কে সচেতন হবার চেষ্টাই এই কারণ। কিন্তু বাস্তব কোনো হুমকি না থাকলেও আমরা তা খুঁজে বেড়াই দুশ্চিন্তায়। হয়তো মাকড়শায় ভয় পান, নিজেই খুঁজে বের করবেন। না থাকলেও কল্পনা করবেন। অন্যের সমালোচনা নিয়ে দুশ্চিন্তা ভয় থাকলে কারো না কারো চোখে ভুকুটি খুঁজে পাবেন। যে ধরনের সংবাদে ভয় পান, পত্রিকায় সেদিকেই চোখ চলে যাবে। দুশ্চিন্তায় মন সতর্কভাবে সর্বত্র বিপদ খোঁজে যেন পৃথিবীটা একটা কঠিন হুমকির মাঝে ঝুলে আছে।

দ্বিতীয় ধাপ: বিপদের অতিমূল্যায়ন
পরবর্তী ধাপ হল যে কোনো বিপদকে চরম বিপর্যয় হিসেবে নিজের কাছে ব্যাখ্যা করা। উদাহরণ হতে পারে, কেউ হয়ত কোনো সাক্ষাতে আপনার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেনি, তার মানে নিজেকে ভাবতে পারেন তুচ্ছ অভাগা। শরীরের কোথাও কোনো সামান্য ক্ষতকে ক্যান্সার বা কোনো দুরারোগ্য কিছু ভাবা। যেখানে হয়তো ভাবার কিছু নেই, সেটাও অস্বস্তিকর হতে পারে। হয়তো রাস্তায় কোনো আকস্মিক দুম শব্দ মনে হতে পারে কোনো দুর্ঘটনার শব্দ।

তৃতীয় ধাপ: পরিস্থির নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা
তৃতীয় ধাপ হল আশেপাশের বিষয়কে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নিজের দুশ্চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা। হয়তো হাতে জীবাণুর মত কিছু লাগল,  ছুটে গেলেন বেসিনে। অথবা অফিসে কোনো কাজ ভুল হয়েছে মনে হল, দৌড়ে অফিসে যেয়ে আবার সেই কাজে হাত দিলেন। প্রকৃতপক্ষে দুশ্চিন্তায় বিষণ্ণতা কাটাতে যে ছোটাছুটি তা নতুন বিষণ্নতা সৃষ্টি করে।

চতুর্থ ধাপ: এড়ানো বা পালানো
তৃতীয় ধাপের বিকল্প ধাপ হলো পরিস্থিতির সামনাসামনি হবার আগেই পরিস্থিতিকে হুমকি ভেবে এড়িয়ে যাওয়া। আর সামনা সামনি হলে যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি থেকে পালানোর চেষ্টা করা। যদি কারো সাথে দেখা করতে নার্ভাস লাগে, দেখা না করেই চলে যেতে পারেন। অথবা দেখা হলে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে যাবার চেষ্টা করতে পারেন। কোনো পরিস্থিতিতে আপনি আপনার ভয় গুলোর সম্মুখীন হতে চান না।

নিজের দুশ্চিন্তার সময়ের অভিজ্ঞতা দিয়ে যে কেউ মিলিয়ে দেখতে পারেন। কোনো বিষয়ে দুশ্চিন্তা হতেই পারে। তবে সে সময় দুশ্চিন্তার এই ধারা গুলো ভেঙ্গে ফিরে পেতে পারেন চমৎকার এক প্রাণবন্ত জীবন।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleমাদকাসক্তির ইতিহাস:প্রাচীন যুগ
Next articleকরোনায় ২০ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে বলে ডব্লিউএইচও-র আশঙ্কা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here