দৈনিক শরীরচর্চা করলে হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয় কম থাকে একথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু দ্য ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত ১টি গবেষণা থেকে জানা গেল যে একেবারেই যারা শরীরচর্চা করেন না তাদের তুলনায় যারা প্রতিদিন দেড় ঘণ্টা বা ৯০ মিনিটের বেশি সময় শরীরচর্চা যেমন সাইক্লিং, অ্যারোবিক্স বা জিম করেন তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি বেশি ঘটে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটি ও যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের গবেষক দল এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এই গবেষণায় দেখা গেছে সপ্তাহে ৩ থেকে ৫ বার ৪৫ মিনিট করে শরীরচর্চা করলে বেশী উপকার পাওয়া যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. অ্যাডাম চেকউর্ড জানান, ‘আগে মনে করা হতো, যত বেশি শরীরচর্চা করা যাবে মানসিক স্বাস্থ্য তত বেশি ভালো থাকবে। কিন্তু আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে আসলে তা ঘটে না। মাসে ২৩ বারের বেশি শরীরচর্চা করলে বা দিনে ৯০ মিনিটের বেশি শরীরচর্চা করলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পরে।’
যুক্তরাজ্যের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাংলায় এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় নামেও পরিচিত) মনোরোগবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. স্টিফেন লাউরি বলেন, আমি সংক্ষেপ করে বলতে চাই যে প্রতিদিন ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টা শরীরচর্চা করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তবে। এর চেয়ে বেশি না করাই ভালো।
গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চাশ রাজ্যের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক কসরত করা, শিশুর দেখভালকারী, গৃহকর্মী, বাগান পরিচর্যাকারী, মাছ ধরা, সাইকেল চালাক, জিমনেশিয়ামে ব্যায়ামকারী, দৌঁড় বা স্কিইংয়ে অংশগ্রহণকারী ১.২ মিলিয়ন পূর্ণবয়স্ক মানুষের তথ্য নেওয়া হয়।
যারা খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত, সাইক্লিং, অ্যারোবিক্স বা জিমে যেতে অভ্যস্ত তাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি মানসিক সমস্যা দেখা যায়, যার হার যথাক্রমে ২২.৩%, ২১.৬% এবং ২০.৬%।
যে সব মানুষের আগে বিষণ্নতার চিকিৎসা করা হয়েছে তাদের নিয়মিত শরীরচর্চার ফলে ৩.৭৫% মানুষের মানসিক সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা গেছে।
এমনকী যারা বাড়ির কাজকর্ম করেন তাদের ক্ষেত্রেও ১০% মানুষের মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে গবেষণায় জানা গেছে।
তথ্যসূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ ও এনডিটিভি।