মহামারীকালে মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ডিজিটাল জীবন ব্যবস্থার যত গুণাগুণ

মহামারী কালীন এই দুঃসময়ে আমাদের সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থাই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গেছে। আমরা বাইরে যেতে পারছিনা। শিশুদের শিক্ষা, বড়দের কর্ম জীবন, বৃদ্ধদের দিন যাপন সব কিছুই ঘরে বসে চালিয়ে নিতে হচ্ছে। আর এসব কাজে আমাদের মাঝে ব্যাপক ভাবে বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। এই ডিজিটাল জীবনের যেমন ইতিবাচক দিক রয়েছে তেমনি নেতিবাচক দিকও রয়েছে। আজ আমরা কোভিড-১৯এর সময় ডিজিটাল জীবনে পালনীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য বিধির ইতিবাচক দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করবো।

এটা সত্যি যে, ডিজিটাল ডিভাইস বা প্রযুক্তির অতি মাত্রায় ব্যবহার আমাদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু কোভিড-১৯এর দুঃসময়ে এই ডিজিটাল ব্যবস্থার গুণেই আমাদের কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা ব্যবস্থা সচল রয়েছে, এবং বন্ধু ও কাছের মানুষদের সাথে দেখা হচ্ছে। মহামারী কালীন দুশ্চিন্তা, সবার থেকে দূরে থাকার একাকীত্ব যেমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে দূর হচ্ছে, তেমনি করোনা কালীন সার্বিক সুরক্ষায় নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানকারী আমরা এই ডিজিটাল মাধ্যম থেকেই পাচ্ছি। এসব কিছুই আমাদের উপর ফেলছে ইতিবাচক প্রভাব যা আমাদের এই মহামারী কালে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপনে সহায়তা করছে। কিন্তু এর অতি ব্যবহার এড়িয়ে এই ইতিবাচক দিক গুলি কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল স্বাস্থ্য বিধি পালন কিভাবে নিশ্চিত করতে পারি এবং সুস্থ থাকার একটি কার্যকরী উপায় করে তুলতে পারি সে সংক্রান্ত কিছু টিপস নিচে উল্লেখ করা হল।

১) ডিজিটাল ব্যাল্যান্সঃ
মহামারীকালে ডিজিটাল ডিভাইস সমুহ সামাজিক দূরত্ব এবং আইসোলেশন মেনে আমাদের কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা ব্যবস্থা, কাছের মানুষদের সাথে দেখা করা, দৈনন্দিন কেনাকাটা করা সহ সব কিছুই সুরক্ষিত করেছে। উপরন্তু করোনা মহামারী মুক্ত থেকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার এটি সব থেকে কার্যকরী এবং নিরাপদ উপায়। তবে আমাদের ডিজিটাল সেবা নেবার এই সুযোগ সমুহের ব্যবহার যথেচ্ছ করলে চলবে না। এটি ব্যবহারে আনতে হবে সীমাবদ্ধতা এবং বিশেষ করে শিশুদের জন্য এর ব্যবহারে আনতে হবে ব্যাল্যান্স। তাহলেই সুফল গুলি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

২) সকালে ঘুম ভেঙ্গে প্রথম কাজ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা একদমই নয়ঃ
হ্যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সব ধরণের খবরই আমাদের সংগ্রহ করতে হবে এবং থাকতে হবে আপডেটেড। তবে ঘুম ভেঙ্গেই এর দিকে মনোযোগ শরীর ও মনের উপর ফেলতে পারে বিরূপ প্রভাব। সারা দিনের কর্মকাণ্ড করতে পারে প্রভাবিত। যাতে আপনার মাঝে কাজের স্পৃহা এবং অনুপ্রেরণা দুটোই হারিয়ে যেতে পারে এবং দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই ঘুম থেকে উঠেই ডিজিটাল ডিভাইসেরর ব্যবহার একদম নয়।

৩) সময় কাটাতে চেষ্টা করুন প্রযুক্তি ব্যবহার না করেঃ
সারাক্ষণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় না কাটিয়ে চেষ্টা করুন পরিবারের সবার সাথে মিলে সময় কাটাতে। এতে এর অতি ব্যবহার থেকে আমাদের ঝোঁক কমবে এবং আমরা ডিজিটাল হাইজিন নিশ্চিত করতে পারবো।

৪) অধিক মাত্রায় ইতিবাচক খবর শুনুনঃ
মহামারী সংক্রান্ত খবর শুনে সেটিকে সুরক্ষিত থাকার কাজে লাগান। কিন্তু অতি মাত্রায় মহামারী সংক্রান্ত সংবাদ ফেলতে পারে নেতিবাচক প্রভাব এবং আমাদের মাঝে সৃষ্টি করতে পারে হতাশা, বিষণ্ণতা সহ নানা ধরণের মানসিক সমস্যা। তাই ডিজিটাল স্বাস্থ্যবিধি হিসেবে আমরা ঠিক ততোটাই শুনবো এবং জানবো যতোটা আমাদের প্রয়োজন।

করোনা কালে ডিজিটাল জীবন ব্যবস্থা হয়ে উঠতে পারে আমাদের ডিজিটাল স্বাস্থ্যবিধি, যদি আমরা উপরের এই সহজ কিছু কৌশল অবলম্বন করি।

সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/psychological-trauma-coping-and-resilience/202105/digital-hygiene-during-covid-19

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা 

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

 

Previous articleআত্মসমালোচনার অভ্যাস: ফাঁদ নাকি আশীর্বাদ?
Next articleমহামারীতে সৃষ্ট ভয় এবং উদ্বিগ্নতায় মানিয়ে নিতে করণীয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here