ঘুম মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আদিকাল থেকেই মানুষ ঘুমের একটা মোটামুটি রুটিন মেনে চলে। নিজের জানা ও অজান্তে সেই রুটিনের মধ্যে দিয়েই দিন অতিবাহিত করছে। আমাদের সুস্থ থাকার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় ঘুমের দরকার। এর কম বা বেশি কোনটাই না হওয়াই ভালো। স্থান, কাল, পাত্র, পেশা ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে ঘুমের সময়কাল একটু এদিক ওদিক হতে পারে। কিন্তু বেশি এদিক ওদিক হলে ঝামেলা শুরু হতে থাকে। দৈনিক কতক্ষণ ঘুমানো দরকার এটা বেশ জনপ্রিয় প্রশ্ন। মজার ব্যাপার হল সবাই এটা নিজের অভ্যাসের সাথে মিলে এমন উত্তর খোঁজেন।
ঘুমের সাথে মানসিক ও শারীরিক সকল স্বাস্থ্য সাঙ্ঘাতিকভাবে জড়িত। শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে ঘুমের অসুবিধা হতে পারে। আবার ঘুমের অসুবিধা হলে শারীরিক, মানসিক সকল অসুবিধা দেখা যেতে পারে। ঘুমের অসুবিধা হয় না এমন মানসিক রোগ খুজে পাওয়া বেশ মুশকিল হয়ে যাবে। অনেক মানসিক রোগের শুরুর দিকে ঘুমের অসুবিধা হয় এবং সেটাই একমাত্র লক্ষণ হতে পারে। কারো সুস্থ থাকার জন্য ঘুমের অভ্যাসের ঠিকঠাক পরিচর্যা দরকার। অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ঘুমের অভ্যাস শুনেই বলা যায় কোনো অসুবিধা আছে বা হচ্ছে কিনা। হঠাৎ করে কারো ঘুমের অভ্যাসের পরিবর্তন অবশ্যই লক্ষণীয়। আবার অনেকের আস্তে আস্তে পুরা ঘুমের সময়ই পরিবর্তন হয়ে যায়। সারা রাত ফেসবুকিং করে ও দিনে ঘুমায়। মাদক আমাদের সমাজে এক ভয়াবহ থাবা। উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েরা মাদকাসক্ত হওয়ার প্রথম লক্ষণ হতে পারে ঠিক সময় না ঘুমানো ও ঠিক সময় ঘুম থেকে না ওঠা। বাবা মারা অনেক সময় খেয়ালই করেন না বাচ্চা কয়টায় ঘুমায় ও কয়টায় উঠে। একটু খেয়াল করলেই আমরা আগে আগেই বুঝতে পারব।
আবার অনেকের ঘুম না হলে হালকা ভাবে নেন এবং দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে থাকেন হয়তো এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। আরেক দল আছেন যারা ওষুধের দোকানে গিয়ে তাদের পছন্দ মত দিনের পর দিন ঘুমের ওষুধ খেতে থাকেন। আমরা অনেককেই পাই যারা ৫,৬,৭ বছর যাবত ঘুমের ওষুধ খাচ্ছেন এবং এখন আর ঘুমের ওষুধ না খেলে ঘুম আসে না। তাদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক একটি মানসিক রোগের সাথে সাথে আরেকটি যুক্ত হয়ে যায় ঘুমের ওষুধের আসক্তি। তখন রোগী ও চিকিৎসক দুজনের জন্যই চিকিৎসা করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।
ঘুমের রুটিনের প্রতি সবারই খেয়াল রাখা দরকার। কোনো বৈধ কারণ ছাড়া এর ব্যাতয় হলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের স্মরণাপন্ন হওয়া ভালো।
প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।