কষ্টদায়ক স্মৃতি সামনে এগিয়ে চলার পথে বাঁধা, আরোগ্য প্রয়োজন

0
124
কষ্টদায়ক স্মৃতি সামনে এগিয়ে চলার পথে বাঁধা, আরোগ্য প্রয়োজন

 

গবেষণায় দেখা গেছে অতীতের দুঃখজনক স্মৃতি মনের মাঝে পুষে রাখলে সেটি ভবিষ্যতে এগিয়ে যাবার মানসিক শক্তিকে হনন করে। তাই সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করতে এবং ভবিষ্যতকে অর্থবহ বানাতে মন থেকে এই দুঃখের অনুভূতিকে দূর করতে হবে।

মানুষের মন অত্যন্ত স্মৃতিকাতর। মানুষের এই স্মৃতিকাতরতার উপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে। এসব গবেষণায় দেখা গেছে কিভাবে মানুষের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ অতীতের কোন ঘটনা দ্বারা প্রভাবিত হয়। যে সব স্মৃতি আমাদের মনে সুখানুভূতি সৃষ্টি করে সেগুলো যেমন সামনে এগিয়ে চলার প্রেরণা যোগায়, মনে সাহস যোগায়, তেমনি পীড়ার অনুভূতি সৃষ্টি করা স্মৃতি মনকে অশান্ত এবং কাজ কর্মকে বিফল করে। তাই স্মৃতি যেন আমাদের চলার পথের বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায় সেটি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের মন, আমাদের কর্ম যেন অতীতের কোন কাজের প্রতি বা স্মৃতির প্রতি কাতর হয়ে এবং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই প্রচেষ্টা করতে হবে।

অনেক ক্ষেত্রেই এমন হয় যে, পুরনো কোন ঘটনা মনে পড়লে আজও আপনার মাঝে ঠিক একই রকম অনুভূতি কাজ করে। মনে হয় যে, ঠিক এখুনি বুঝি আপনার সাথে সেটি ঘটছে। যেমন, ভয়ের কোন স্মৃতি ভুলে যাওয়া বেশ কঠিন। অতীতে হয়তো কোন কারণে কখনো ভয় পেয়েছেন আর আজও সেসব আপনাকে একইভাবে ভয় পায়িয়ে দিচ্ছে এবং পুরনো সেই ক্ষতকে  যেন আরও গভীর ও তাজা করছে। এমনটা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ব্যক্তির বর্তমান চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার স্বাভাবিক জীবন ব্যহত হয় এবং মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যান্য বিভিন্ন মানসিক রোগও সৃষ্টি হতে পারে।

বিভিন্ন গবেষণায় অতীতের বিভিন্ন মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী স্মৃতি কিভাবে আমাদের বর্তমানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং কিভাবে এটি থেকে মুক্তিলাভ করে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায় সেসব উপায় নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এগুলো অনুসরণ করলে অতীতের মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী স্মৃতি থেকে নিজেকে দূরে রাখা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আমরা স্মৃতিগুলিকে থার্ড পার্সন পারস্পেকটিভ থেকে মনে করার চেষ্টা করি, যেন মনে হয় যে অন্য কারও অভিজ্ঞতা বা অন্য কারও সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে করছি  তাহলে আমাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঠিক সেই পর্যায়ের হবেনা যতোটা আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে হয়। আমাদের সব সময় চেষ্টা করতে হবে যেন ধীরে ধীরে স্মৃতি গুলো আমাদের মস্তিষ্কে ঝাপসা হয়ে যায়। আমাদেরকে একই সাথে নিজেদের আবেগ নিয়ন্ত্রনের প্রচেষ্টাও করতে হবে। এই স্মৃতিগুলো যেন একইভাবে আমাদের চিন্তাভাবনা, আমাদের অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে সেই প্রচেষ্টা করতে হবে। ভয়, উদ্বেগ সহ সকল ধরণের মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণ করার মানসিক শক্তি অর্জন করতে হবে।

সব সময় এটি মনে রাখতে হবে যে, আমাদেরকে ইতিবাচক স্মৃতি গুলো মস্তিষ্কে ধরে রাখার প্রয়াস করতে হবে, নেতিবাচক গুলি নয়। আমাদেরকে নেতিবাচক ঘটনা গুলি থেকে শিক্ষা নিতে হবে। কিন্তু সেগুলোকে মনের মাঝে ধরে রেখে নিজেদের মানসিক চাপ এবং কষ্টের কারণ করে তোলা যাবেনা।

অন্তত উপরের বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে পুরনো দিনের কষ্টদায়ক ঘটনার স্মৃতি মনকে ভারাক্রান্ত করা থেকে মুক্ত থাকা যাবে। ইতিবাচক অনুভূতিকে আপন করে নেতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলো দূরে ঠেলে দিতে হবে। তাহলেই মন ভাল থাকবে, এবং আমরাও আনন্দে থাকবো।

সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/communications-matter/202012/how-heal-painful-memories

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleসৃষ্টির নেশা: ক্রিয়েটিভ অবসেশন
Next articleভাই আমার শরীরে স্পর্শ করে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here