আমাদের মাঝে অনেকেই আছে এমন যারা একই বিষয় নিয়ে বারবার ভাবতে থাকে এবং পুনরায় করে। কেউ রান্না করছে তো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে লবন হলো কি হলো না, কাপড় ধুচ্ছে তো চিন্তা হচ্ছে পরিস্কার হলো কি হলো না এজন্য বারবার বা ধুচ্ছে। কোনো কাজ নিখুঁতভাবে করার পরও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা যাতে কোনো খুঁত রয়ে গেলো কিনা।
এমন লোকদেরকে আমরা সাধারণত খুঁতখুঁতে স্বাভাবের বলে চিহ্নিত করি। এটাকে শুচিবাই বলা হয়। অনেকে এটাকে সন্দেহ বাতিকও বলে থাকেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগটির নাম ‘অবসেসিভ কম্পালশিভ ডিসঅর্ডার’ বা সংক্ষেপে ‘ওসিডি’ (‘Obsessive Compulsive Disorder’ or ‘OCD’.)
এই পর্বে আমরা জানবো ওসিডির লক্ষণগুলো কী ও কেমন। যা থেকে আমরা সহজেই ওসিডির ঝুঁকি বিবেচনা করে রোগ নির্ণয় করতে পারবো।
লক্ষণ ও রোগ নির্ণয় : এই রোগের কমন কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ রয়েছে। যেগুলো পর্যালোচনা করে সহজেই নির্ণয় করা যাবে কেউ ওসিডি আক্রান্ত হয়েছে কিনা কিংবা সম্ভাবনা রয়েছে কিনা। প্রাথমিকভাবে উপসর্গগুলো দেখা যাওয়া মাত্রই ওসিডি আক্রান্ত বলে ধরে নেয়া যাবে না। এর একটা পর্যায় আছে যা পর্যালোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ সাপেক্ষে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। প্রথমেই লক্ষণগুলো জেনেই নেই।
- আপনি কি অতিরিক্ত ধোয়ামোছা করেন অথবা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকেন?
- আপনি কি কোনো কিছু অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই করেন?
- আপনার মাথায় অযাচিতভাবে কি কোনো চিন্তা আসে? যা কিনা আপনি চাইলেও মাথা থেকে সহজে বের করতে পারেন না।
- আপনার দৈনন্দিন কাজ শেষ করতে কি অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়?
- আপনার মধ্যে আসবাব, বই, খাতা, কাপড়চোপড় অথবা যেকোনো জিনিস নির্দিষ্ট ছকে গুছিয়ে রাখার প্রবণতা আছে কি?
- এসব প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ মানে আপনি ওসিডি ঝুঁকিতে আছেন।
রোগ নির্ণয়/নিশ্চিতকরণ : এই যে সন্দেহ বাতিক; এটা কমবেশি সবার মধ্যেই আছে। তাহলে কি আমরা সবাই ওসিডি আক্রান্ত? না। তাহলে কে আক্রান্ত? চিকিৎসাবিদদের মতে, উল্লিখিত সমস্যাগুলির কোনো একটি ঘটনা যদি টানা দু’সপ্তাহের বেশি বজায় থাকে এবং তার জন্য যদি পড়াশোনা বা কাজকর্ম ব্যাহত হয়, অতিরিক্ত সময় নষ্ট হয় তখন তিনি ‘ওসিডি’-তে আক্রান্ত বলে ধরা হবে।
রোগের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সময় নষ্টের পরিমাণও বাড়তে থাকে। দিনে যদি এক ঘণ্টা বা তার বেশি সময় নষ্ট হয়, তাহলে আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগে আক্রান্তদের মধ্যে অন্য কিছু মানসিক সমস্যাও দেখা যায়। প্রায় অর্ধেক ক্ষেত্রে রোগীর মন খারাপ বা ‘ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার’ দেখা দেয়। এ ছাড়া, উদ্বিগ্নতার সমস্যা, ‘ফোবিয়া’, ‘প্যানিক ডিসঅর্ডার’, ‘টিক ডিসঅর্ডার’ ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন
দ্বিতীয় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন
ওসিডি হলে করণীয় কী? : (চতুর্থ ও শেষ পর্ব)
চতুর্থ পর্ব পড়তে চোখ রাখুন এই লিংকে
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে