একা খাওয়া শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, বলছে গবেষণা

0
16

আজকের যান্ত্রিক যুগে অনেকেই কাজের চাপে কিংবা অন্যান্য ঝামেলায় একা একা লাঞ্চ অথবা ডিনার করে থাকেন। কিন্তু অতীতের অনেক গবেষণা একা খাওয়ার কারণে শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা হওয়ার কথা বলেছে, বিশেষ করে বার্ধক্যজনিত একাকিত্বের কথাও বলেছে।
সম্প্রতি একটি কোরিয়ান গবেষণা বলছে একা খাওয়া খারাপ অভ্যাস, বিশেষ করে পুরুষদের বেলায়। Obesity Research & Clinical Practice জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় দেখা যায় যেসব পুরুষ দিনে অন্তত দু’বার একা খেয়ে থাকেন তাদের ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা ৮০০ প্রাপ্তবয়স্ক (পুরুষ এবং মহিলা) দক্ষিণ কোরিয় নাগরিককে বেছে নেন। তাদেরকে প্রশ্ন করা হয়েছিল সপ্তাহে ক’দিন তারা একা খেয়ে থাকেন। তাদের উত্তরের সাথে তাদের বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ধুমপানের অভ্যাস, মদ্যপান, কর্মক্ষেত্র এবং তাদের স্বাস্থ্যের সাথে মিলিয়ে বিজ্ঞানীরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
পুরুষ অংশগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যারা দিনে অন্তত দু’বার একা খেয়ে থাকেন, তাদের স্থূলতা হওয়ার সম্ভাবনা ৪৫ শতাংশের বেশি এবং মেটাবলিক সিন্ড্রোম হওয়ার সম্ভাবনা ৬৪ শতাংশের বেশি। মেটাবলিক সিন্ড্রোম (metabolic syndrome) হচ্ছে যখন তিন বা তার বেশি স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকে, যেমন, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ মাত্রার কলেস্টেরল এবং প্রি ডায়াবেটিস। মেটাবলিক সিন্ড্রোম হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় অবিবাহিত পুরুষদের ক্ষেত্রে। তাদের ঝুঁকি ছিল অন্যদের তুলনায় ৩ গুণ বেশি।
অন্যদিকে নারীদের বেলায় এই ঝুঁকিগুলি কম দেখা যায়। তাদের মেটাবলিক সিন্ড্রোম হওয়ার ঝুঁকি ছিল ২৯ শতাংশের বেশি।
পূর্বের গবেষণায় দেখা যায় যারা সাধারণতঃ একা খেয়ে থাকেন তারা একাকিত্বে ভোগেন। তারা অস্বাস্থ্যকর খাদ্য বেশি খান, শাক-সবজি ও ফল-মূল কম খান এবং খাওয়া-দাওয়া করেন অবেলায়।
ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া’র এনালিন কঙ্কলিনও একা খাওয়া এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকির ব্যপারে গবেষণা করেছেন। এ গবেষণাতেও দেখা যায়, অবিবাহিত পুরুষদের ক্ষেত্রে একা খাওয়াটা অন্যান্যদের তুলনায় বেশি ভয়াবহ। কঙ্কলিন বলেন, মেয়েদের বেলায় এই গবেষণার ফলাফল অতটা পরিষ্কার নয় এবং এর জন্য প্রয়োজন আরও গবেষণা।
নিউ জার্সির রাটগার্স ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এন্ড্রু আবেইটা বলেন, একাকি মানুষদের মধ্যে সব সময়ই ক্রনিক রোগ এবং অসময়ে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। আমরা মানসিক চাপ কমাতে আন্তরিক সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে থাকি। একাকী মানুষদের সামাজিক পৃষ্ঠপোষকতা মজবুত নয়, তাই তাদের ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ এবং উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

Previous articleযৌবন ধরে রাখতে সহায়ক যেসব খাবার
Next articleপাবনা মানসিক হাসপাতাল নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here