সমস্যা: আমি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সেমিস্টারের ছাত্র। বয়স ২০। গত ৪ বছর ধরে আমি মানসিক সমস্যায় ভুগছি। সবসময় মনে অশান্তি লাগে, অস্থিরতা কাজ করে, কোনো কাজে আনন্দ পাই না, শরীর অলস লাগে, এক ধরনের উদাসীন ভাব সবকিছুতে, শুধু ঘুম আসে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এস.এস.সি এবং ২০১৬ সালে এইচ.এস.সি পরীক্ষার সময় প্যানিক এ্যটাক হয়েছিল, বুক ও মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা করত। ২০১৬ সালে ভাল ফলাফল না হওয়ায় খুব হতাশায় ভুগছি, মেনে নিতে পারছি না কিছু। পড়ালেখায় মন বসাতে পারছি না। চিকিৎসকের পরামর্শে আমি ট্যাবলেট Express 10 সেবন করছি। কিন্তু তেমন উপকৃত হচ্ছি না। -নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
পরামর্শ : আমার কাছে আপনার সমস্যার সমাধান জানতে চাওয়ার জন্য ধন্যবাদ। তবে আপনার প্রশ্নটাই প্রশ্নবিদ্ধ। আপনি প্রশ্নের শুরুতে বলেছেন ৪ বছর ধরে ভুগছেন। পরে বলছেন, ২০১৪ ও ২০১৬ তে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন এবং প্যানিক এটাক-এ ভুগেছেন। আবার বলেছেন এইচএসসি পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন। সব মিলিয়ে প্রশ্নে কিছুটা ঘোলাটে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে ৪ বছর আগে থেকে যে সমস্যাগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন তাতে মনে হয় আপনি দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্ণতা বা ক্রনিক ডিপ্রেশন বা ডিসথাইমিয়া রোগে ভুগছেন। মাঝে পরীক্ষার কারণে প্যানিক অ্যাটাকের উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। আমি মনে করি আপনি বর্তমানে ডাবল ডিপ্রেশনে ভুগছেন। আপনি যে ঔষধ খাচ্ছেন তা আপনার রোগ চিকিৎসার জন্য খুবই কম ক্ষমতা সম্পন্ন ও পরিমাণেও অপ্রতুল। তাই আপনাকে অবশ্যই পরিমাণমত উচ্চ
ক্ষমতা সম্পন্ন ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখবেন ভাত রান্না করতে হলে পানি ফোটাতে হবে আর পানি ফোটাতে হলে অবশ্যই তাপমাত্রা ১০০ সে. এ ওঠাতে হবে। অসুখে ঔষধের আশানুরূপ ফল পেতে হলে ঔষধের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে। ঔষধের পাশাপাশি আপনাকে সিবিটি বা কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি নিতে হবে।
তাই থেরাপি এবং ঔষধের ধরন ও পরিমাণ ঠিক করার জন্য আপনাকে অবশ্যই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা নিকটবর্তী কোনো হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে।