আত্মবিশ্বাস একটি রহস্যময় গুণ। এটি এমন এক জিনিস যা আমরা সবাই পেতে চাই, কিন্তু এটি আসলে কী তা আমরা অনেকেই জানিনা।
অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞানী ও লেখিকা বারবারা মার্কওয়ে তার ‘দ্য সেল্ফ কনফিডেন্স ওয়ার্কবুক’ নামের বইতে লিখেছেন, আত্মবিশ্বাস হলো নিজ আগ্রহ মিশ্রিত সাহস ও ক্ষমতা বা কর্মদক্ষতা। সত্যিকারের আত্মবিশ্বাস কোনো ব্যক্তিকে ফলাফল অনিশ্চিত জেনেও তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে আগ্রহী ও সংযমী করে তোলে।
মার্কওয়ে তার বইয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন। তবে তিনি এমন কিছু বিষয়ের কথা বলেছেন যেগুলো আত্মবিশ্বাসকে তরতরিয়ে বাড়িয়ে দেয়। তার মতে যেসব বিষয়গুলো আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে চলুন সেগুলো দেখে নেয়া যাক
১. আত্মবিশ্বাসের সাথে সফলতা পেয়েছেন এমন একটি সময় মনে করুন। ওই সফলতা ও আত্মবিশ্বাসের জন্য কি কি পদক্ষেপ বা কাজ করেছেন তা মনে ধারণ করে রাখুন।
২. আত্মবিশ্বাসী কোনো ব্যক্তি যাকে আপনার ভালো লাগে তাকে অনুসরণ করুন। তার যেসব গুণাবলীসমূহ আপনার ভালো লাগে সেগুলো লিখে রাখুন। যখন আত্মবিশ্বাস কমে যাবে বা নিজেকে খাঁটো মনে হবে সেগুলো দেখুন।
৩. আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে আপনার সামর্থ্য ও চ্যালেঞ্জসমূহ মেনে নেয়া। নিজের তিনটি বিশেষ কারিশমা যা নিয়ে আপনি গর্ব অনুভব করেন সেগুলো লিখে রাখুন। আবার জীবনের তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ যা আপনাকে অনেককিছু শিখিয়েছে তাও লিখে রাখুন।
৪. কঠোর পরিশ্রম করে একের পর এক কার্যসমাধা করে ফেলছেন প্রতিদিন। এর জন্য নিজেকে ক্রেডিট (কৃতিত্ব) দিতে শিখুন। আজ এমন তিনটি কাজ করেছেন যা বেশ ভালো হয়েছে তা লিখে রাখুন।
৫. অন্যের সমালোচনা মেনে নিতে শিখুন। কেউ খোটা দিয়ে কোনো কথা বললে তাকে হাসিমুখে ধন্যবাদ বলে তার কথা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
৬. কোনো বিষয়ে আপনি বেশ পারদর্শী তবে সে বিষয়ে আপনি খুব একটা পাত্তা দিতে চান না? আপনার ধারণা যে কেউ চেষ্টা করলে এমনটি করতে পারবে? তাহলে এমন যেসব কাজে আপনি পারদর্শী সেসব কাজগুলো লিখে রাখুন নিজেকে উৎসাহ দেয়ার জন্য।
৭. আপনার চিন্তাভাবনা কেবল বর্তমান সময়কেন্দ্রিক হলে তা আরও ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পথ তৈরি করতে পারে। আপনি দেখতে পাচ্ছেন এমন ৫টি জিনিস লিখুন, শুনতে পাচ্ছেন এমন ৫টি বিষয় লিখুন, ছুঁতে পারবেন এমন ৩টি জিনিস, গন্ধ পাচ্ছেন এমন ২টি জিনিস কিংবা স্বাদ নিতে পারবেন এমন একটি জিনিসের নাম লিখুন।
৮. এমন একটা সময় বা কাজের কথা কথা মনে করুন যেটিকে প্রথমে আপনি ব্যর্থ হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছিলেন যে সেটি ছিল সে কাজে আপনার সফলতার প্রথম ধাপ।
৯. নিজের সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বলতে পারেন এমন তিনটি ভালো জিনিসের তালিকা করুন।
১০. লিখুন বা কারো সাথে আলোচনা করুন- আত্মবিশ্বাস বলতে কি বোঝেন আপনি? শরীর কেমন বোধ করছে? নিজের সম্পর্কে কি বলেন আপনি?
১১. এমন কিছু সম্পর্কে আপনার প্রিয় বই অথবা চলচ্চিত্রগুলি তালিকাভুক্ত করুন যা দুর্দান্ত কিছু অর্জনের জন্য সীমাবদ্ধ বিশ্বাসগুলি ধরে রাখে।
১২. আপনাকে এবং আপনার লক্ষ্য সমর্থন করেন এমন মানুষের তালিকা তৈরি করুন। কীভাবে তারা আপনার সেরাটি তুলে ধরে এবং আত্মবিশ্বাসের অনুভূতি বাড়ায় তা বর্ণনা করুন।
১৩. যদি আপনার মধ্যে পৃথিবীর সব আত্মবিশ্বাস এসে ভর করে তাহলে আপনি আজ, ৬ মাস কিংবা ১ বছরে কি হতে পারতেন তা লিখে রাখুন বা বর্ণনা করুন।
১৪. নিজেকে নিয়ে সন্দেহ যে সর্বদাই ক্ষতিকর তা কিন্তু নয়। নিজের প্রতি সন্দেহ এটাই নির্দেশ করে যে, আপনি যথাযথভাবে প্রস্তুত নন কিংবা আপনার আরো জানা প্রয়োজন অথবা আপনাকে অন্যভাকে কাজটি করা উচিত। এরকম ভালো ফল বয়ে আনা নিজের প্রতি করা সন্দেসমূহর তালিকা করুন।
১৫. ছোট একটি পদক্ষেপে অনেক সাহস ও আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন হতে পারে। এমন কোনো কাজের কথা মনে করুন যেটিতে আপনি সফল হয়েছেন এবং যা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল।
১৬. আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে ছোট ছোট পদক্ষেপ নিন। এতে আরো বেশি অনুপ্রাণিত ও আত্মবিশ্বাসী হতে পারবেন।
১৭. সমালোচনার মুখে পড়েও নিজেকে শক্ত রেখে সফলতা পেয়েছেন এমন সময়ের কথা মনে করুন।
১৮. আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় এমন পছন্দনীয় গানের তালিকা করুন।
১৯. সবকিছুরই সীমা আছে। কোনো কিছুই বেশি বেশি কখনই ভালো নয়। আত্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। পরিমিত পরিমাণে আত্মবিশ্বাসই সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি।
২০. ব্যর্থতা মেনে নিতে শিখুন। ব্যর্থ না হলে সফলতার মর্ম বোঝা কঠিন। আত্মবিশ্বাস আপনাকে ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাড়িয়ে সফল হতে সাহায্য করবে। যত চেষ্টা করবেন ততই সফল হবেন। সব চেষ্টাই যে সফল হবে তা নয়। তবে চেষ্টা করলে ফল মিলবেই।
অনুাদ করেছেন: তৌহিদ সোহান
তথ্যসূত্র : সাইকোলজি টুডে
লিংক : https://www.psychologytoday.com/us/blog/shyness-is-nice/201810/20-great-questions-help-increase-your-confidence
১০ বছরের মত ডিপরেশণ এ ভূগছী ্যোলীয়াম ও ট্রিপটীণ ১০ খাই কোন খাদ্য নিয়মিত খেলে সুস্ত হতে পারব ?