একটি কৌশল নির্ধারণের মাধ্যমে বাংলাদেশে শিশুদের জন্য অনলাইন সুরক্ষা জোরদার করতে গ্রামীণফোন, টেলিনর গ্রুপ ও ইউনিসেফ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
“বাংলাদেশে শিশুর অনলাইন সুরক্ষার মাত্রা বাড়ানো ও জোরদার করা” শীর্ষক প্রকল্প ১২ লাখ শিশু-কিশোরকে অনলাইনে নিরাপদ থাকার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে। বাবা-মায়েদের সংবেদনশীল করে তোলাও এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য, কারণ ইন্টারনেটে শিশুরা কী ধরনের বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হয়— তা নিয়ে ভীতির কারণে অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে বাধা দেয়। এটা শিশুদের ইন্টারনেট থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগকে ব্যাহত করে। শিশুদের অনলাইন সুরক্ষায় সহায়তা দিতে এই প্রকল্পের আওতায় চার লাখ বাবা-মা, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
ইউনিসেফ-এর ডেপুটি রিপ্রেসেনটেটিভ ডারা জনস্টন বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিটি শিশু যাতে সুরক্ষিত এবং সব ধরনের সহিংসতা থেকে মুক্ত থাকে তা নিশ্চিত করতে কাজ করে ইউনিসেফ। বাংলাদেশের সব শিশুকে অবশ্যই যথাযথ দক্ষতা অর্জন করে নিরাপদে এবং উপযুক্ত পরিবেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হতে হবে। আমরা আশা করি, এই অংশীদারিত্ব শিশুর অনলাইন সুরক্ষা সম্পর্কে বাস্তবসম্মত পরামর্শগুলোর প্রাতিষ্ঠানিকরণ করবে এবং এগুলো বাংলাদেশে শিশুদের জন্য শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।”
গ্রামীণফোন লিমিটেডের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার ওলে বিয়র্ন বলেন, ‘আমরা যেহেতু ডেটা যুগে প্রবেশ করেছি, তাই সববয়সী মানুষের বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে অনলাইনে নিরাপত্তার বিষয়টি কীভাবে আমাদের সমাজকে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রভাবিত করে তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ইন্টারনেট যেভাবে একটি শিশুর শেখা, বিকাশ ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে তা আমরা অস্বীকার করতে পারি না।”
চুক্তি স্বাক্ষরের সময় টেলিনর গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট, (সাসটেইনইবিলিটি) মনীষা ডগরা বলেন, ‘টেলিনর গ্রুপ বিশ্বাস করে যে সংযোগ সমাজের ক্ষমতায়ন করতে এবং বৈষম্য কমাতে পারে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১০ নম্বর লাখ অর্থাৎ বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের বৈশ্বিক অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আমরা ২০২০ সালের মধ্যে যেসব দেশে আমাদের কার্যক্রম রয়েছে সেসব দেশজুড়ে ৪০ লাখ শিশুকে অনলাইনে শিশুর নিরাপত্তা বিষয়ে শিক্ষিত করে তুলতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এই প্রকল্প দেশব্যাপী ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী চার লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী এবং ৭০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক, বাবা-মা ও লালন-পালনকালীদের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা পদক্ষেপকে ঘিরে আরও ভালো বোঝাপড়া, সচেতনতা ও সংবেদনশীলতা গড়ে তুলতে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল এবং একটি ইতিবাচক ডিজিটাল শিক্ষার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক— উভয়েই এটা গ্রহণ করতে পারে।’