সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, স্ন্যাপচ্যাট, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি। সবাই এসব মাধ্যমের সঙ্গে যেভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে, তা সত্যিই চিন্তার বিষয়। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়াটা আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের মধ্যে।
অনেক চেষ্টার পরও অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এসব অভ্যাস ছাড়াতে পারছেন না। ফলে সন্তানদের অনেকেই নানা পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যায় ভুগছে।
শিশু-কিশোরদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের কুফল নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু চিকিৎসক ও শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞও। একদল মার্কিন শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন। এতে তারা ‘মেসেঞ্জার কিডস’ নামে বাচ্চাদের মেসেজিং অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানান।
তারা বলেন, ‘১৩ বছরের কম বয়সিদের এই প্ল্যাটফরমটি ব্যবহার করতে উৎসাহিত করাটা দায়িত্বজ্ঞানহীন।’ তারা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন, সামাজিকমাধ্যমের কারণে কিশোর-কিশোরীদের মানসিকতায় অস্বাভাবিক সব পরিবর্তন হচ্ছে। ২০১৭ সালে ‘রয়াল সোসাইটি অব পাবলিক হেলথ’ ১১ থেকে ১৫ বছর বয়স্ক দেড় হাজার কিশোর-কিশোরীর ওপর একটি জরিপ চালায়।
এতে দেখা যায়, স্ন্যাপচ্যাট ও ইনস্টাগ্রাম তাদের মনে সবচেয়ে বেশি হীনমন্যতা ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। ১০ জনের মধ্যে ৭ জন বলেছে, ইনস্টাগ্রামের কারণে তাদের নিজেদের দেহ নিয়ে মন খারাপ হয়েছে। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সের তরুণ-তরুণীদের অর্ধেকই বলেছে, ফেসবুকের কারণে তাদের মানসিক দুশ্চিন্তা ও অশান্তি বেড়ে গেছে। দুই-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতা বলেছে, ফেসবুকের কারণে সাইবার বুলিং বা অনলাইনে অপমান-হয়রানি করার প্রবণতা গুরুতর আকার নিয়েছে।
ব্রিটেনের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ লুই থিওডোসিও বলেছেন, ‘দু-তিন বছর আগেও তার সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্টের মাঝখানে কোনো শিশু তাদের ফোন ব্যবহার করছে বা টেক্সট করছে এমন ঘটনা ছিল অস্বাভাবিক। কিন্তু এখন এটা খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। শিশুরা তাদের ফোন নিয়ে খুব বেশি সময় কাটাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে টিনএজাররা বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তা বা অন্যান্য মানসিক সমস্যায় ভুগছে।
এসব শিশু-কিশোর এক কল্পনার জগতে বাস করছে। এতে তাদের শারীরিক স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অভিভাবকদের জন্য পরিস্থিতি খুব কঠিন হয়ে গেছে। তিনি এমন অভিভাবকের কথাও শুনেছেন, যারা ওয়াইফাই রাউটার নিজেদের সঙ্গে নিয়ে ঘুমান, যাতে সন্তানরা মাঝরাতে উঠে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না পারে। বিশেষজ্ঞরা তাই অভিভাবকদের পরামর্শ দিচ্ছেন সন্তানদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর নজর রাখতে এবং তা সীমিত করতে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এসব ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

https://youtu.be/WEgGpIiV6V8