আজকাল শহুরে শিশুরা দেরি কথা বলছেন বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। এজন্য খেলার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকা ও পারিবারিক একাকিত্বসহ নানা বিষয়কে দায়ী মনে করা হয়। তবে গবেষণা বলছে, শিশুর দেরিতে কথা বলার বড় কারণ হচ্ছে ‘স্ক্রিন’ ব্যবহার।
বিষয়টি নিয়ে গত দুই বছর ধরে কানাডায় একটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, শিশুদের খাওয়ানোর কাজটা সহজ করতে অনেক পিতা-মাতা এসব স্ক্রিনের সাহায্য নিয়ে থাকেন। বাচ্চাদের হাতে তুলে দেন মোবাইল, ট্যাব বা স্ক্রিনযুক্ত ডিভাইস। এতে শিশুরা ওই ডিভাইসের স্কিনে বুধ হয়ে থাকে।
কিন্তু এর পরিণতি যে মারাত্মক ক্ষতিকর তা হয়তো তারা জানেনই না। ফলে শিশুদের দক্ষতার বিকাশে বিলম্ব ঘটে। এর মধ্যে কথা বলতে এবং অন্যান্যদের সাথে মেলামেশা শিখতে দেরি হয়।
কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাচ্চার বয়স দেড় বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদেরকে স্ক্রিন ব্যবহার করতে দেওয়া ঠিক নয়। তবে এজন্যে সুনির্দিষ্টভাবে কোন বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া খুব কঠিন বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
গবেষণায় দেখা গেছে, দুই বছর বয়সী বাচ্চারা প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১৭ ঘণ্টা করে স্ক্রিনের সামনে কাটায়। কিন্তু তাদের বয়স যখন তিনে পৌঁছায় তখন তাদের স্ক্রিন টাইমও বেড়ে দাঁড়ায় সপ্তাহে ২৫ ঘণ্টা। আবার যখন পাঁচ বছর হয় তখন সেটা কমে হয় ১১ ঘণ্টা। সাধারণত শিশুরা এই সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু করে।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, স্ক্রিন টাইম বেড়ে যাওয়ার কারণে শিশুদের বিকাশে যে দেরি হয় সেটা খুব সহজেই চোখে পড়ে। দেখা গেছে, ঠিক তখনই স্ক্রিন টাইম আরো বেড়ে গেছে।
গবেষকরা বলছেন, বাচ্চারা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে যে সময়টা পার করছে, এই সময়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ আরো অনেক কিছু শিখতে পারতো। এই সময়ে আরেকজনের সাথে কথা বলা ও শোনার দক্ষতা তৈরি হতে পারে। দৌড়ানো, কোন কিছু বেয়ে উপরে ওঠার মতো শারীরিক দক্ষতাও সে অর্জন করতে পারতো।