আলোচ্য পরিপোষকগুলি একসাথে কাজ করে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
আমরা সাধারণত শারীরিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক বিশেষ বিশেষ পরিপোষক গুলির প্রতিই মনযোগী থাকি। কী খেলে বা কী করলে আমাদের শরীর ভালো থাকবে? আর আমাদের ব্লাড প্রেশার ঠিক থাকবে, আমরা নীরোগ থাকতে পারবো বা সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে সেগুলিই আমাদের মূল চিন্তার বিষয় হয়ে থাকে।
যেমন, আমরা আমাদের নিজেদের ও পরিবারের সবার জন্য সেই ধরণের খাদ্য নির্বাচন করি যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী এবং নিশ্চিত করি হাঁটা, পর্যাপ্ত পরিশ্রম করাসহ অন্যান্য শরীর চর্চা যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখবে। তবে, শরীরের দিকে মনযোগী হলেও আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভুলে যায়।
পরিপূর্ণ সুস্থতায় মানসিক স্বাস্থ্যও যে শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ সেটিকে অনুধাবন না করতে পারলে কখনোই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব নয়। তাই কী কী করলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে সেটি জানা সবার জন্যই জরুরী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিশেষ পরিপোষক বা ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস রয়েছে যেগুলি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য জরুরী বা অত্যাবশ্যক। এই জীবন প্রণালীগুলি আমাদের মনের খাবার যা আমাদের মনকে যেকোনো নেতিবাচক অবস্থার সাথে লড়াই করার সক্ষমতা প্রদান করে। এই পরিপোষকগুলি একসাথে কাজ করে একটি মানসিক সুস্বাস্থ্য বলয় তৈরি করে যেটি নির্ধারণ করে জীবনে আসা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ আমরা কত সফলভাবে মানসিক দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করতে পারবো।
আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আমরা যেকোনো মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী পরিস্থিতি ধৈর্য ও সাহসের সাথে মোকাবেলা করতে পারি। শারীরিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাক্ষার জন্য সুষ্ঠু প্রয়াস করতে পারি এবং জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারি।
নিচে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আবশ্যক পরিপোষকগুলি নিয়ে আলোচনা করা হল-
১। বর্তমানে বাঁচুন
বর্তমানে বাঁচার অর্থ হল, বর্তমানে যা কিছু আছে সেগুলিকেই পরিপূর্ণরূপে উপভোগ করা এবং নিজের মাঝে শূন্যতার অনুভূতি যেন না তৈরি হয় সেজন্য যা কিছু আছে তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা। জীবনে যেমন সমস্যা, অসুবিধা, দুঃখ-কষ্ট, বিপদ আসবে, তেমনি ভালো দিন ও সুখের দিনও আসবে। বর্তমানে পূর্ণ রূপে বাঁচতে পারলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও জীবন যাপনে দক্ষ ভূমিকা পালন করা সম্ভব হবে। তাই দুশ্চিন্তা, আশঙ্কা, লালসা ত্যাগ করে বর্তমানে সন্তুষ্টি নিয়ে বাঁচতে হবে।
২। নিজেকে গুরুত্ব দিন
নিজের যত্ন বা নিজের ভালোলাগা মন্দলাগার প্রতি গুরুত্ব দিলে তথা নিজেকে মূল্য দিতে পারলে সেটি যে কারও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নিজেকে গুরুত্ব দেওয়ার অর্থ হলো জীবনে সেসব কাজ করা যা আপনাকে প্রতিনিয়ত বাঁচার আনন্দ প্রদান করবে। তাই নিজের ইচ্ছেগুলোকে মর্যাদা দিন, জীবনে যা কিছু করতে ইচ্ছে করে সেগুলো নির্দ্বিধায় করুন এবং মানসিক সন্তুষ্টি নিয়ে বাঁচুন।
৩। মেনে নেওয়ার মানসিকতা অনুশীলন করুন
মেনে নেওয়ার মানসিকতা জীবন যাপনকে অনেক সহজ ও সরল করে দেয়। জীবনে অনেক বাধা বিপত্তি আসবে, প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার কষ্ট আসবে, হতাশা আসবে, কিন্তু সব শেষে সকল পরিস্থিতি ও আবেগকে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারলে জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সফলতা আসবে।
৪। লক্ষ্য নির্ধারণ ও অর্জনে দৃঢ়চিত্ত থাকুন
জীবনের লক্ষ্য আপনার জীবনকে সঠিক পথে পরিচালনা করবে। বাধা বিপত্তিতে হতাশ হয়ে পড়লে চলবে না। মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে হবে এবং সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এমন অদম্য মানসিকতা থাকলেই মানসিক ভাবে একটি সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব হবে। ধৈর্য, সহ্য শক্তি, নমনীয় মানসিকতা, প্রতিশ্রুতিশীল মনোভাব এই সব পরিপোষকগুলি আপনাকে একটি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ জীবন উপহার দেবে।
সাইকোলজি টুডে থেকে অনুবাদ করেছেনঃ প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে