বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে ভুগতে থাকা প্রায় দুই কোটি ফিলিপিনো নাগরিককে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করবে ফিলিপাইন সরকার। সম্প্রতি দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে এ সংক্রান্ত একটি আইনে স্বাক্ষর করেন।
নতুন স্বাক্ষরিত হওয়া মানসিক স্বাস্থ্য আইনের প্রধান লেখক এবং দেশটির সিনেটর রিসা হন্টিভেরস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অবশেষে এ সেবার আইনটি চূড়ান্ত হয়েছে। কোনো ফিলিপিনোকেই আর এ নীরব রোগে ভুগতে হবে না। মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে আগে কেবল ফিসফিস করে কথা বলা হলেও এখন সেই অবস্থারও পরিবর্তন হবে।’ এ আইনের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি দেশটির সরকারি স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতির সাথে একীভূত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিরা বিনামূল্যে কাউন্সেলিং ও চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
এ সেবা ফিলিপাইনজুড়ে এমনকি দূরবর্তী জেলা বা গ্রামগুলোতেও পাওয়া যাবে। তা ছাড়া এ আইনের মাধ্যমে মানসিক, মনোসামাজিক এবং স্নায়ুরোগ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ইউনিটও খোলা যাবে। পাশাপাশি স্কুল ও কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষাও প্রদান করা যাবে। উল্লেখ্য, ফিলিপাইনে মানসিক রোগ ও রোগীর প্রকোপ উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে। দেশটিতে প্রতিদিন প্রায় সাতজন ফিলিপিনো আত্মহত্যা করে থাকে এবং মোট জনসংখ্যার প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন কোনো-না-কোনোভাবে মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে।
কেবল ২০১২ সালেই ফিলিপাইনে দুই হাজার ৫৫৮ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে। আত্মহত্যাকারী এই ফিলিপিনোর বেশির ভাগই পুরুষ। বর্তমানে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারীদের বেশির ভাগই রাজধানী ম্যানিলায় বসবাস করেন। বর্তমানে ফিলিপাইনে প্রতি দুই লাখ ৫০ হাজার মানসিক রোগীর জন্য একজন চিকিৎসক রয়েছেন, যা প্রয়োজনের চেয়ে খুবই কম। মানসিক রোগী ও চিকিৎসকের আদর্শ অনুপাত প্রতি ৫০ হাজার মানসিক রোগীর জন্য একজন চিকিৎসক।
অন্য দিকে ফিলিপাইনে প্রতি এক লাখ মানসিক রোগীর জন্য হাসপাতালে ৪.৫টি বিছানা রয়েছে। দেশটি প্রতি বছর তাদের স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৫ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যের পেছনে ব্যয় করে থাকে। যার বেশির ভাগই আবার হাসপাতাল পরিচালনা এবং কর্মচারীদের বেতন বাবদ খরচ করা হয়।
মানসিক সমস্যা মহামারি আকারে: ফিলিপাইনে বিনামূল্যে চিকিৎসা করবে সরকার
Previous Articleগ্রামের হুজুর বলে তাকে জ্বীনে ফেলে দিয়েছে
Next Article ডিমেনশিয়া: ভুলে যাওয়া রোগ