প্রতি বছর বিশ্ব ধরিত্রী দিবস পালিত হয়ে আসছে। গতকাল ২২ এপ্রিল ছিল ৫০ তম বিশ্ব ধরিত্রী দিবস। প্রতিবছর এ ধরিএী দিবস পালিত হয় পরিবেশ ও প্রকৃতির বৈচিত্র্য ধরে রাখার উদ্দেশ্যে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এই ধরিত্রী দিবস পালিত হয়ে থাকে। এ বছর এ দিবস পালনের প্রয়োজন ছাড়াই প্রকৃতি এক সুন্দর নতুন রূপ ধারন করে আছে। যার জন্য প্রতি বছর এতো আয়োজন হয়, সেই প্রকৃতি আজ আয়োজন ছাড়াই তার পুরনো মনোমুগ্ধকর রূপ ধারন করে আছে।
সর্ব প্রথম ১৯৭০ সালের মার্কিন সিনেটর গেলর্ড নেলসন ধরিএী দিবসের প্রচলন করেন। এবছর এ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘ক্লাইমেট একশন’। পরিবেশ এবং প্রকৃতি রখার মাধ্যম ধরিএীকে টিকেয়ে রাখাই এই দিবসের লখ্য। আর এ বছর এ লখ্য অন্যরকম এক আর্শীবাদ হিসেবে প্রকৃতির উপর প্রভাব ফেলছে। যে করোনা ভাইরাস পৃথিবীর মানুষের কাছে হয়তো অভিশাপ রূপে জায়গা করে নিয়েছে, সেই অভিশাপই হয়তো পরিবেশ ও প্রকৃতির বুকে টিকে থাকা প্রাণী কুলের কাছে আর্শীবাদ রূপে জায়গা করে নিয়েছে।
সারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় নানা প্রজাতির প্রাণী কুল, পাখির আনাগোনা, সমুদ্রে নানা প্রজাতির মাছের বিচরণ দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে বছরের পর বছর ঐসব প্রাণীকুল তাদের বিচরণের অপেক্ষায় ছিল। ঐসব প্রাণীকুল জানান দিচ্ছে পৃথিবী কারো একার নয়, এই পৃথিবীর বুকে তাদের ও অবস্থান আছে। আর আমরা মানুষ জাতি এই ধরিনীকে শুধু আমাদেরই করে রেখেছি। যার পরিণতিতে আমরা পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে দাড়াচ্ছে। সারা বিশ্বে বয়ে চলা করোনা ভাইরাসের কারনে ধরিএীকে এক নতুন রূপে চিনছে এই মানুষ জাতি।
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই লক ডাউন চলছে। যার কারনে স্মরন কালের সবচেয়ে দূষণমুক্ত সময় পার করছে এই মানুষ জাতি। প্রায় ৫০ ভাগ দূষণ কমেছে ধরনীতে, হয়তো ভাবা যায় না। আধুনিকতার নামে পৃথিবীর বুকে বয়ে চলা অত্যাচার আজ একরকম বন্ধ প্রায়। কলকারখানা থেকে বের হওয়া দূষিত পানি, কালো ধোঁয়া বের হওয়া আজ প্রায় বন্ধ। আকাশ তার চিরচেনা নীল রঙে নিজেকে মাতিয়ে রাখছে। কিন্তু কতদিন পারবে আকাশ তার নীল রঙকে ধরে রাখতে। যেখানে দূষিত ধোঁয়া, কার্বনডাই-অক্সাইডের ভারে আকাশ নুয়ে পড়েছিল, সেটা যদি আবার ফিরে আসে। আবার যদি শুরু হয় বন উজাড়, তাহলে প্রাণীরা হারাবে তাদের আবাসস্থল, বেড়ে যাবে গ্রীনহাউজ গ্যাসের নিঃসরন। ধরনী হারবে তার অস্তিত্ব। আর আমরা পৃথিবীর সৃষ্টির সেরা জীব তা চুপচাপ দেখেই যাবো হয়তো।
এখনই সময় ধরনীকে তার অস্তিত্ব হারাতে না দিয়ে তার বৈচিত্র্য ধরে রাখতে মানুষ জাতিকে সচেতন হয়ে উঠার। নানা বৈচিত্র্যের প্রাণীকুলকে তাদের ও পৃথিবীতে বসবাসের উপযোগ্য করে দিতে সাহায্য করা। দূষণমুক্ত অক্সিজেন সবারই কাম্য। ধরনীকে তার অস্তিত্ব হারাতে না দিয়ে সকল প্রাণীকুলের বসবাসের উপযোগ্য গড়ে তোলার এখনই সময়।
লিখেছেন: সৈয়দা মুমতাহিনাহ সোনিয়া