একটা তাবিজের লোক খুব দরকার!

একটা তাবিজের লোক খুব দরকার!

একজন পরিচত লোক জানালো, তার বন্ধুর মেয়ে এক ছেলেকে পছন্দ করে। বন্ধু এবং বন্ধুর পরিবার ছেলেটাকে পছন্দ করে না। জানতে চাইলো আমার কাছে নিয়ে আসলে আমি কিছু করতে পারবো কি-না।

আমি জানতে চাইলাম কি করবো? মানে আমাকে কি করতে হবে? সে বললো, মেয়েটির মন থেকে ছেলেটিকে ভুলিয়ে দিতে হবে। আমি বললাম, না। কে কি পছন্দ করবে, কেনো করবে এটাতো আমরা ঠিক করতে বা পরিবর্তন করতে পারিনা। একেবারে হতাশ না করে তাকে বললাম, তবে নিয়ে আসলে অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা সেটা দেখে দিতে পারি।

কিছুক্ষণ পর সে আবার জানালো, মেয়ের বাড়িতে বেশ কিছু তাবিজ পাওয়া গেছে। আমি বল্লাম, তাতে অসুবিধা কী? সে বললেন, তাবিজ দিয়েই এসব কন্ট্রোল করছে। আমি বললাম, তাবিজগুলো দূরে কিংবা আপনার বন্ধুর কোনো শত্রুর বাড়ির সামনে ফেলে দিতে বলেন। সেখানকার কোনো মেয়ে তখন ছেলেটিকে পছন্দ করা শুরু করবে, আপনার বন্ধুর মেয়ে বেঁচে যাবে।

সে বললেন, এটা হয় নাকি? আমি বললাম, কোনটা? সে বললেন, তাবিজ যার নামে করে তার ক্ষেত্রেই কেবল কাজ করে। আমি বললাম, ওহ! কিন্তু মেয়ের বাড়িতে তাবিজ দিয়ে গেল কেন? দূরে বা তাদের কাছে রেখে দিলেই পারতেন।

সে আমাকে বললেন, আপনি এতো প্যাচান কেনো? যাকে তাবিজ করবে তার বাড়িতে দিবেনা কোথায় দিবে? আমি বললাম, বাড়িতে কেন? সে বললেন, নাইলে কাজ করবে কিভাবে! আমি বললাম, সেজন্যইতো বলছিলাম দূরে নিয়ে ফেলে দেন বা শত্রুর বাসায় ফেলে দেন।

উনি আমার সাথে আর কথা বাড়ায়নি। দুইদিন পর তার সাথে দেখা, তাকে বললাম, কি অবস্থা? সে জানালেন মেয়েটা ছেলেটার জন্য আরও বেশি পাগলামি করছে। তাবিজের উল্টা তাবিজ করার জন্য লোক খোঁজাখুঁজি চলছে এখনো পাওয়া যায় নাই। আমি বড় একটা শ্বাস টেনে আমার নিজের কথা বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না।

বুকের ভিতর কষ্ট নিয়ে বাসায় চলে আসি। মনটা খারাপ। ভাবলাম, আমার কি খুব বয়স হয়ে গেছে? আমি কি আর পারবো না?

আমি জানি, মানুষ তার জীবনের সব আশা পূরণ করতে পারে না। তাছাড়া বউ যদি জানতে পারে, কি হবে! তবু মন থেকে যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ ছটফট করে, ওই লোকটিকে ফোন দিলাম। তাকে বললাম, পাইছেন, তাবিজ করার লোক পাইছেন।

সে বললেন, না। এখনো পাইনি। হতাশ হয়ে শুয়ে পড়লাম। তাবিজের লোকটাকে খুব দরকার, পেলে আমিও একটা শেষ চেষ্টা করে দেখতে পারি। আমার জন্যও কাজ হতে পারে। মনে মনে সব ঠিক করলাম। ছবির মতো মনে আসতে থাকলো, কীভাবে তাবিজ আনবো, কীভাবে ওই বাসায় দিয়ে আসবো। তারপর কি কি ঘটতে পারে।

দুইদিন পর আমাকে সে জানালেন, আপনি কিছু করলেন না! মেয়েটা পালিয়ে গেছে। আমি বললাম, কেন, তাবিজের উল্টা তাবিজ পান নাই? সে আমাকে বললেন, না। উল্টা আমার বন্ধুই এখন মেয়ের জন্য পাগলপ্রায়!

আমি বললাম, তাইলে তাবিজের ব্যবস্থা করতে পারেন নাই? উনি ক্ষেপে গেলেন এবং আামাকে বললেন, আপনি আছেন তাবিজ নিয়া! তারপর হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলেন আমার সামনে দিয়ে।

আমিও দেখলাম আমার এতোদিন পর উঁকি দেয়া স্বপ্নও ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল চোখের সামনে থেকে। আমি যেমন আছি তেমনই থাকবো। হুম! কি আর করা। কিন্তু মন থেকেতো এখনো মুছতে পারলাম না!

অধ্যাপক ডা. সালাহ্‌উদ্দিন কাউসার বিপ্লব এর ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেওয়া।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleচোখ ক্লান্ত দেখায় কেন?
Next articleআবেগের অপব্যবহার কি?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here