অভিভাবকদের নিজেদের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা

অভিভাবকদের নিজেদের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা

অভিভাবকদের শুধু সন্তানদের যত্ন নিলেই চলবে না বরং নিজেদের খেয়ালও রাখতে হবে। কারণ নিজেদের যত বেশী খেয়াল রাখা যায়, অন্যদের জন্য ততো বেশী কিছু করার সুযোগ পাওয়া যায়।

শিশুরা নিজেদের চাহিদা সম্বন্ধে সচেতন থাকে না। তাই তাদের সব ধরণের দেখাশোনা অভিভাবকদেরকেই করতে হয়। তাদের উপরই তাদের সন্তানদের সব দায়িত্ব থাকে। তারাই তাদের সন্তানকে সব রকম সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সর্বোত্তম উপায়ে বড় করে তোলে।

অপরদিকে সন্তানদের চাহিদা পূরণে এবং বড় করে তোলার এই প্রক্রিয়ায় অভিভাবকগণ নিজেদের কথা ভুলেই যান। তারা ভাবেন যে শুধু সন্তানদের দেখাশোনা করলেই সব কিছু ঠিক থাকবে। অনেকেই ভাবেন নিজেদের সুযোগ-সুবিধা দেখলে বা নিজেদের জন্য একটি সীমারেখা অংকন করলে সেটি হয়তো স্বার্থপরতা হিসেবে বিবেচিত হবে। যা একেবারেই একটি ভ্রান্ত ধারণা।

অভিভাবকগণ যখন নিজেদের প্রয়োজনগুলোর খেয়াল রাখেন, নিজেদের ভালো রাখার প্রয়াস করেন তখন তারা আরও বেশী শারীরিক ও মানসিক শক্তি লাভ করেন এবং সন্তানদের দেখাশোনা আরও ভালোভাবে করতে পারেন।

মনস্তত্ত্ববিদগণও সব ক্ষেত্রেই নিজের যত্ন নেওয়ার উপর সব থেকে বেশী গুরুত্ব প্রদান করেছেন। অন্যদের সব থেকে ভালো সেবাটি প্রদান করার জন্য বা নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোত্তম ব্যবহার করার জন্য সব কিছুর আগে আমাদেরকে নিজের যত্ন নিতে হবে। একই কথা অভিভাবকদের জন্যও প্রযোজ্য।

সন্তানদের বড় করে তোলা একটি ফুলটাইম কাজ। শিশুরা সব সময়ই পিতামাতার সান্নিধ্যে থাকতে চায়। বিভিন্ন ধরণের বায়না করে এবং প্রায় সবটুকু সময় পিতামাতা তাদের পেছনেই ব্যায় করে। ফলে অভিভাবকদের সব ধরণের কাজ বা চিন্তা ভাবনায় সন্তানরাই প্রাধান্য বিস্তার করে থাকে। এভাবে সব সময় নিজেদের প্রয়োজনকে গুরুত্ব না দিয়ে তারা তাদের চাহিদা পূরণেই ব্যস্ত থাকে এবং নিজেদের প্রয়োজনকে বিসর্জন দেন।

সন্তানদের প্রয়োজনের কথা অবশ্যই মাথায় রাখা উচিৎ। কিন্তু এমনটিও হওয়া উচিৎ নয় যে, অভিভাবকদের জীবনে শুধু সন্তানদের লালন-পালনই একমাত্র কাজ। অভিভাবকদের নিজেদের শারীরিক ও মানসিক চাহিদার সাথে সন্তান লালন-পালনের কাজের মধ্যে একটি সামাঞ্জস্য বিধান প্রয়োজন।

শিশুর প্রয়োজনের খেয়াল রাখার সাথে সাথে নিজের মন ভালো রাখা, শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকা, ঘুরতে যাওয়া, নিজেদের সুস্থতা-অসুস্থতাকে গুরুত্ব দেওয়া অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক সময় আমরা মনে করি, নিজের জন্য কিছু করা মানেই স্বার্থপর মানসিকতার পরিচয় দেওয়া। এ ধরণের চিন্তা ভাবনা ধীরে ধীরে মানুষের সর্বস্ব শূণ্য করে দেয়। তখন তার অন্যদেরকে দেওয়ার মতো কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। তাই সব সময় নিজের মনের ও শরীরের খোরাক সম্বন্ধে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যেন সে নিজের সাথে সাথে অন্যদের জন্যও উপযোগিতা বজায় রাখতে পারে।

নিজের প্রয়োজন দেখা মানেই শিশুকে অবহেলা করা নয়। অন্যদের সাথে সাথে আপনার নিজের জীবনও গুরুত্বপূর্ণ। আপনি সুস্থ না থাকলে কখনোই অন্যদের সুস্থ রাখার প্রয়াস করতে পারবেন না। তাই শিশুর প্রয়োজন এবং নিজেদের প্রয়োজন মেটাবার মধ্যে একটি সামাঞ্জস্য বিধান করে চলুন। এটি যেমন শিশুর জন্য ইতিবাচক, তেমনি আপনাদের জন্যও ইতিবাচক।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/adolescents-explained/202107/the-importance-self-care-parents

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleঅতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়
Next articleসাজেদা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘স্বজন’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here