অনলাইনে অধিক সময় ব্যয় করছেন? সীমারেখা টানুন কিছু সহজ পদক্ষেপে

অনলাইনে অধিক সময় ব্যয় করছেন? সীমারেখা টানুন কিছু সহজ পদক্ষেপে

সারাক্ষণ অনলাইনে থাকার অভ্যাস যেমন নিরর্থক তেমনি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।

আমরা বিভিন্ন প্রয়োজনে অনলাইনে সময় ব্যয় করছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা এর মধ্যে অন্যতম বড় একটি কারণ। এছাড়াও অনলাইনে গেম খেলা, মুভি দেখা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া, ভিডিও চ্যাট ইত্যাদি কাজেও সময় ব্যয় করছি।

অনেকের ক্ষেত্রে এই ব্যবহার এতোটাই মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায় যে তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হয়। এসব ব্যক্তি দিনের অধিকাংশ সময়ই অনলাইনে থাকে এবং অন্যান্য কাজ যথাযথভাবে করতে ব্যর্থ হয়। তারা সঠিকভাবে খায় না, ঘুমায় না, এমনকি পড়াশুনাতেও দেখা যায় অত্যন্ত অমনোযোগী।

ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সাথে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত জীবনও বিভিন্ন সমস্যা ও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

অতিরিক্ত অনালাইনে থাকার ফলে ব্যক্তির শরীর, মন ও মস্তিষ্ক সব কিছুর উপরেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে হওয়া শারীরিক সমস্যা গুলোর মধ্যে অন্যতম হল- ক্ষুধামন্দা বা অতিরিক্ত আহার, নিদ্রাহীনতা বা অসময়ে অত্যাধিক ঘুম, ওজন কমে যাওয়া কিংবা অতিরিক্ত ওজন, চোখে কম দেখা, মাথা ব্যাথা ইত্যাদি।

এছাড়াও রয়েছে বহু সংখ্যক মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। যেমন- উদ্বিগ্নতা, মানসিক অস্থিরতা, অতিরিক্ত ক্রোধ  বা যখন তখন রেগে যাওয়া, অবিবেচনা প্রসূত আচরণ ও কথাবার্তা, হতাশা, একাকীত্ব ইত্যাদি।

মানসিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব ব্যক্তি স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন না করার ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মানসিক স্বাস্থ্য দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনিদ্রা ব্যক্তির মস্তিষ্ককে সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা দেয়।

ফলে ব্যক্তি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এসব সমস্যা দূর করতে হলে প্রথমত ও একমাত্র উপায় হল অনালাইনে থাকার পরিসর কমিয়ে আনা। আর এ বিষয়ে সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যক্তি বিভিন্ন উপায়ে অনালাইনে থাকার সময় সীমিত করার প্রয়াস করতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হল পরিবারের অন্যান্যদের সাথে সময় অতিবাহিত করা। তাদের সাথে গল্প করা, একসাথে বসে লুডো, ক্যারম বা দাবা খেলা, একসাথে রান্নাসহ নানা সৃজনশীল কাজ করা যেতে পারে।

যতবেশি সময় আপনি তাদেরকে দেবেন, আপনার অনালাইনে থাকার সময় কমাতে সহায়তা করবে। তাছাড়া ফোন থেকে দূরে থাকতে বা অনালাইনে সময় কমাতে নিজের পছন্দসই অন্য কোন কাজ করতে পারেন।

পছন্দের কোন ফুল গাছ লাগাতে পারেন বা বাগান করতে পারেন, ছবি আঁকতে পারেন, সেলাই করা, রান্না করাসহ অন্য যে কোন কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন। মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে নিলে অবশ্যই স্ক্রিন টাইম কমবে।

আবার অনেকের ক্ষেত্রে মানসিক ও শারীরিক অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, তারা নিজ থেকে সচেতন হতে এবং কার্যকরী ও সহায়ক কৌশলগুলো অবলম্বন করতে অসমর্থ হয়। সেক্ষেত্রে অভিভাবক ও কাছের মানুষদের তাদের স্বার্থে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যেন তারা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।

এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং তার নির্দেশনা অনুসারে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে ওষুধের ব্যবস্থা করতে হবে।

সব ধরণের অসুবিধা গুলো জানার পর আশা করা যায় সবাই এ বিষয়ে সচেতন হবেন এবং শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অনলাইনে থাকার সময়ে লাগাম টানবেন।

লিখেছেন- প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

Previous articleনিজেকে নতুন রূপে আবিষ্কার করতে যা করবেন
Next articleকল্পনা ও প্রতিভার বিকাশ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here