হাসির যত গুণ

হাসি
স্বাভাবিকভাবে আমরা তখন হাসি যখন আমাদের মন ভালো থাকে। অন্যভাবে বলতে গেলে হাসি আমাদের সুখানুভূতি প্রকাশ করতে সহায়তা করে।  এছাড়াও এই কাজটি আমাদের মনের ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

হাসি ঠিক অন্যান্য অনুভূতির মতোই আমাদের কাছে বেশ স্বাভাবিক এবং সুন্দর একটি অনুভূতি প্রকাশক। আমরা বিভিন্ন সময়ে হাসি। মন ভালো থাকলে হাসি, আনন্দ পেলে আমরা হাসি, আবার দুঃখ লুকানোর ক্ষেত্রেও অনেক সময় আমরা হাসির সহায়তা নিয়ে থাকি। ঠিক এরকম ভাবেই আমাদের ঠিক কখন কখন হাসি পায় বা কি কি কারণে আমরা হাসি এবং হাসলে আমাদের কি কি উপকার হয় সে বিষয়ে আজ বিস্তারিত জানার প্রয়াস করবো।

১) হাসি আমাদের ইতিবাচক মানসিকতার প্রকাশ ঘটায়ঃ
যখন আমাদের সাথে ভালো কিছু হয় এবং আমরা সবাইকে আমাদের মনের সেই সুখানুভুতি বোঝাতে চাই তখন আমরা হাসি। এই হাসিই আমাদের মনের ইতিবাচক ভাবকে প্রকাশ করে। আমরা সামাজিক প্রাণী। সবার সাথে মিলেমিশে আনন্দ করে জীবন অতিবাহিত করতে চাই। আর  আমাদের হাসি অন্যদের সাথে আমাদের এই সামাজিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করে। আমাদের মুখের হাসি অন্যদেরকে তাদের প্রতি আমাদের ইতিবাচক মানসিকতার নির্দেশনা বা সংকেত প্রদান করে এবং এতে আমাদের প্রতি তাদের মানসিকতাও ইতিবাচক হয়।

২) মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা উপশম করেঃ
এমন অনেক সময়ই আসে যখন পরিস্থিতির চাপে আমাদের মনে বাসা বাধে নানা ধরণের দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠা। আর মনের এই প্রভাব পড়ে আমাদের আচার আচরণে। আমাদের মুখ গোমড়া থাকে, আমরা হাসতে ভুলে যাই। কিন্তু এই মন খারাপ, মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কম করার বেশ সহজ একটা উপায় কিন্তু আমাদের হাতেই রয়েছে। কোন কারণে মন খারাপ থাকলেও জোর করে হাসতে চেষ্টা করুন। মন খারাপে মুখ গোমড়া করে না থেকে স্বাভাবিক থাকার প্রচেষ্টা করুন, হাসুন এবং প্রাণ খুলে বাঁচুন। দেখবেন মন খারাপ, দুশ্চিন্তা সব কিছুর নেতিবাচক প্রভাব অনেকটাই উপশম হয়ে গেছে।

৩) হাসি মন ভালো রাখার একটা থেরাপিঃ
অনেক মনস্তত্ত্ববিদেরা সুখে থাকার, সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে হাসিকে একটা নিয়মিত অভ্যাস ,ব্যায়াম বা থেরাপি হিসেবে নিয়েছেন। বর্তমানে এর প্রচলন প্রায় সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ হাসলে আমাদের মন, আমাদের মস্তিষ্ক সব কিছু দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকে। আমাদের মধ্যে উদ্বিগ্নতা বাসা বাঁধতে পারেনা।

৪) সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্কে ঋদ্ধতা বাড়েঃ
যখন পরিবারে ও সমাজে অন্যন্যদের সাথে একজন মানুষ হেসে কথা বলে তখন তার প্রতি অন্যান্যদের এক ইতিবাচক মানসিকতা সৃষ্টি হয়। একের সাথে অপরের মানসিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়। পারস্পরিক ঋদ্ধতা আরও বাড়ে। তাই সব সময় অন্যের উপর নিজের ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে একটু হেসে কথা বলা বেশ ভালো একটি কৌশল যা আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে সহায়তা করে।

৫) কঠিন কাজ সহজ হয়ে যায়ঃ
কর্মক্ষেত্র ও জীবনের অন্যান্য পর্যায়ে আমাদের অনেক মানুষ ও অনেক পরিবেশের সম্মুখীন হতে হয় যা আমাদের অনুকূল থাকেনা। এ সময়ে নিজের মতামত এবং প্রাধান্য বজায় রাখতে এবং প্রতিকূল পরিবেশ নিজের অনুকূলে নিয়ে আসতে নিজেকে ধীর স্থির রাখা খুবই প্রয়োজন। এই কাজটি খুব সহজে করা যায় যখন আমরা বিচলিত না হয়ে মুখে হাসি ধরে রেখে নিজেকে ও চারপাশের পরিবেশকে স্বাভাবিক রাখতে পারি।  আর এটা সহজ হয় যখন আমরা অন্যান্যদের সাথে হেসে কথা বলি।

হাসি আমাদের কঠিন থেকে কঠিনতর কাজ সহজ করে দেয়। আমাদের মানসিক অবস্থার উপর হাসির সরাসরি প্রভাব রয়েছে এবং যদি হাসিকে মন নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে বেছে নেওয়া যায় তাহলে সব সময়, সবখানে নিজের সফলতা নিশ্চিত করা সহজ হয়ে যায়।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleআপনার সন্তানকে ভাল কাজে উৎসাহিত করুন
Next articleএই শাক খেলে কি মন ভাল থাকতে পারে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here