করোনা আতঙ্কে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ লকডাউন চলছে। ঘরবন্দি বিশ্বের পায় এক পঞ্চমাংশ মানুষ। মানসিক ধকল আর অনিশ্চয়তা সারা পৃথিবীর মানসিক স্বাস্থ্যের অভূতপূর্ব হানি ঘটাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর জেরে উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা ব্যাপক বাড়তে পারে। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়নি এখনো।
বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল লেনসেটে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব নিয়ে গবেষণার পর্যালোচনাতে দেখা গেছে যে অনেক মানুষের মনে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে লকডাউনের কারণে। দুই হাজার সাতশ ৬০ মানুষকে নিয়ে গবেষণা করেছেন গবেষকরা। তারা দেখেছেন ৩৪ শতাংশ মানুষ কোয়ারেন্টিনের কারণে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। উদ্বেগ ও হতাশার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন তারা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিফর্মড সার্ভিসেস ইউনিভার্সিটির এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা কিছু মানুষের মনে না খেয়ে থাকার মতো অবস্থা তৈরি করবে। তাদের মনে তৈরি হতে হতাশা, উদ্বেগ। নিউইয়ার্ক সিটির মনোবিজ্ঞানী জুলি কলজেট বলেছেন, নিজের মতো করে থাকুন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন। এটি অনেক কঠিন সময়। আপনি বাসায় বসে বসে যা পারেন তাই করুন।
করোনার কারণে উদ্বেগ, বিষণ্ণতা এসবের সঙ্গে যোগ হয়েছে বাস্তব সমস্যা, আর্থিক সমস্যা, রোজগারের সমস্যা এবং প্রিয়জনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্নতা, যার জেরে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যও চ্যালেঞ্জের মুখে। একটা বিশাল সংখ্যক জনসংখ্যার কাছে এটা বিশালতর সমস্যা হিসেবে দেখা দেবে। আমরা সবাই সামাজিক দূরত্বের কথা বলছি। আসলে আমাদের প্রয়োজন শারীরিক দূরত্ব, সামাজিক দূরত্ব নয়; কারণ তা ভুল বার্তা দেয়। বরং এই ধকলের সময়টায় আমাদের অনেক বেশি করে সামাজিক একত্রতার প্রয়োজন, সামাজিক আইসোলেশনের চেয়ে বেশি প্রয়োজন সামাজিক সাপোর্ট।
ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সঙ্গে সমঝোতা না করে এটা যদি সম্ভব হয়, তাহলে তাকে উৎসাহ দেওয়া উচিত। আমাদের বার্তা হওয়া উচিত শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখবার, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নেবার, কিন্তু একই সঙ্গে সামাজিক একত্ববোধেরও; যা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেও পালন করা যায়। মানুষের সঙ্গে ফোনে কথা বলুন, অন্য মাধ্যমে কথা বলুন, একে অন্যের সমস্যায় সাহায্য করুন, এভাবেই একটা কমিউনিটি একসাথে লড়াই করতে পারে।
সূত্র : ফক্স নিউজ।
Home করোনায় মনের সুরক্ষা বিশ্ব পরিস্থিতি সামাজিক দূরত্বে বাড়তে পারে মানসিক সমস্যা, বিশষজ্ঞদের আশঙ্কা