প্রাক-কৈশোর বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে আত্মহত্যার পরিমাণ এখনো বেশ বিরল হলেও এর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বর্তমানে এটি চোখে পড়েছে গবেষকদের। গত ২৩ আগষ্ট ডেনভারর জেমস মাইলসের আত্মহত্যার ঘটনা, এই বিষয়টিকে আরো জোড়ালো করেছে।
নয় বছর বয়সী এই শিশু জেমস মাইলস আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যুবরণ করে। তার মা জানান, জেমস তার সহপাঠীদের নিপীড়নের শিকার।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনে’র এর তথ্যমতে ২০০৬ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে মৃত্যুর হার প্রায় ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০১৪ সালের সিডিসি প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী শিশুর মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে দশ নাম্বারে আছে এই আত্মহত্যা। প্রতি লাখে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে মৃত্যুর পরিমাণ প্রায় বেড়ে ০.৯ থেকে দাঁড়িয়েছে ২.১ জনে।
এলজিবিটিকিউ তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যা উদ্বেগের বিষয়। জেমসের মা বলেন, জেমসের নিপীড়নের পিছনে কারণ ছিল সে সমকামী।
এ বছর হোপল্যাবের একটি জরিপে পাওয়া গেছে যে, ১৪-২৪ বছর বয়সী এলজিবিটিকিউ তরুণরা সবচেয়ে বেশি ডিপ্রেশন বা বিষন্নতার বিষয়ে তথ্যের জন্য অনলাইনে খুঁজেছে। যা কিনা সাধারণ কিশোরদের তুলনায় প্রায় দুইগুণ। এলজিবিটিকিউ তরুণদের মধ্যে এই সংখ্যা ৭৫ শতাংশ ও অন্যদিকে সাধারণদের মধ্যে এই সংখ্যা ৩৬ শতাংশ।
‘ওয়েল বিইং ট্রাস্টের’ প্রধাণ কৌশল অফিসার বেঞ্জামিন মিলার বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যম এই সমস্যার পেছনে একটি বিশাল কারণ’। তিনি আরো বলেন, প্রাক-কৈশোর ও কৈশোর বয়সের বাচ্চারা প্রতিদিনকার ভারী ও আবেগজনিত সম্যসা গুলোকে প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য যথেষ্ট সময় পাচ্ছে না।
সহপাঠীদের কাছ থেকে নিপীড়নের শিকার হওয়া ও আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ৩৪ টি গবেষণা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। যেখানে অংশগ্রহনকারীদের বয়স ছিল ৯ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের মধ্যে আত্মহত্যার হার ঐ বয়সী শ্বেতাঙ্গ শিশুদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য সংস্থ্যা (ইউএসএ) এই প্রতিবেদনটি তৈরি করে। তবে কিশোরদের ক্ষেত্রে এই হার শ্বেতাংদের মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গদের তুলনায় বেশি।
মিলার আরো জানান, প্রাক-কিশোর এবং কিশোরদের মধ্যে আত্মহত্যার এই ঊর্ধ্বগামী হারকে প্রতিরোধ করতে বিদ্যালয়গুলোতে আরো মানসিক স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: ইউএসএ টুডে।
অনুবাদটি করেছেন মাঈশা তাহসিন অর্থী।