Close Menu
    What's Hot

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Monday, July 7
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম July 2, 2025

      বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

      Recent

      বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

      অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

      সাইকিয়াট্রি বিভাগের মে মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর May 3, 2025

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      Recent

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

      রাতে ঘুমাতে পারি না, সবসময় এক ধরনের অস্থিরতা অনুভব করি

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      দিনের চিঠি April 28, 2025

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      Recent

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      জীবনের ফাঁদে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছি, কায়দা করেও আর যেন বাঁচতে পারছি না!

      মা আর নিজেকে চেনেন না — ঘুম নেই, স্মৃতি নেই, পরিচ্ছন্নতাও নেই!

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      ফিচার December 5, 2023

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      Recent

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » প্যানিক ডিজঅর্ডারের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ
    মনস্তত্ত্ব

    প্যানিক ডিজঅর্ডারের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

    মনের খবর ডেস্কBy মনের খবর ডেস্কJanuary 16, 2022No Comments8 Mins Read0 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ভাবে নেমে আসা ভয় ও দুঃশ্চিন্তার ঝড়। এটা সাথে নিয়ে আসে আরো নানাবিধ শারীরিক উপসর্গের ঢল! বুক ধড়ফর করা, ঘামে শরীর ভিজে যাওয়া, ভয়ের সাথে কাঁপুনি, হৃদপিন্ডের গতি অত্যধিক বেড়ে যাওয়া, যেন মনে হওয়া শ্বাসরোধ হয়ে যাচ্ছে! হুট করে মনের মধ্যে চলে আসে তীব্র ভীতি যে হয়তো মৃত্যু আসবে অথবা ভয়ংকর কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে! অনেক সময় মনে হয় নিজের উপর সমস্ত নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে, মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ভয়ে কুঁকড়ে যায় শরীর ও মন! কখনো শুরু হয় তীব্র বুকে ব্যাথা, শরীরে বয়ে যায় শিরশিরে অনুভূতি, অসাড় হয়ে আসে অনুভূতি! মনে হয় এই তীব্র ভয়ের আক্রমণ থেকে মুক্তি অসম্ভব! হঠাৎ করে শুরু হয়ে মুহূর্তেই তীব্র ভয় আর দুঃশ্চিন্তা সুনামিতে পরিণত হয় যেন! বেশিক্ষণ থাকেনা এই লক্ষণগুলো; কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েক ঘন্টাও চলতে পারে। এরপর আবার যেমন এসেছিল সেভাবেই মিলিয়ে যায়। তবে যে দুঃশ্চিন্তার জন্ম দিয়ে যায় তার রেশ কাটেনা; ভয় হতেই থাকে আবার কখন হবে এই দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা! এই ঘটনা যখন বারবার অপ্রত্যাশিত ভাবে ঘটতে থাকে; আবার আসবে এই অ্যাটাক সেই ভয়ে বিপর্যস্ত হয় ব্যক্তি জীবন; ব্যক্তির দৈনন্দিন আচরণ পরিবর্তিত হয়ে যায় এক মাসের বেশি সময় ধরে তখন চিকিৎসাবিজ্ঞানের অভিধানে তাকে বলা হয় প্যানিক ডিজঅর্ডার।

    উল্লেখ্য প্যানিক ডিজঅর্ডারের এই ভয়ের দৃশ্যত কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায়না ওই মুহুর্তে! ফোবিয়ায় যেমন সুনির্দিষ্ট কোন বস্তু বা পরিস্থিতি ভয় ও দুঃশ্চিন্তার জন্ম দেয়, এইক্ষেত্রে সেরকম কিছু অনুপস্থিত থাকে। কোথায় থেকে জন্ম হয় এই তীব্র ভয়ের এই উত্তর আন্দাজ করতে উদ্ভব হয়েছে অনেক তত্ত্বের। ইতিহাসে সর্বপ্রথম এই ধরনের মানসিক রোগের বৈজ্ঞানিক বিবরণ পাওয়া যায় জ্যাকব মেন্ডিস ডি কস্তার লেখায়। আমেরিকার রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের অনেক সৈনিক এরকম উপসর্গে ভুগেছিলেন। ডি কস্তা ভেবেছিলেন এটা হৃদপিন্ডের অসুখ। নামকরণ করা হয়েছিল ইরিটেবল হার্ট সিন্ড্রোম! পরবর্তীতে সিগমুন্ড ফ্রয়েড এই জাতীয় লক্ষণ সংবলিত অসুস্থতাকে ‘এনজাইটি নিউরোসিস’ নামে অভিহিত করেছিলেন। তিনি মনে করতেন অত্যাধিক অসঙ্গত দুঃশ্চিন্তার জন্ম হয় অচেতন মনে জমে থাকা অমীমাংসিত অন্তর্দ্বন্দ (conflict) থেকে। হয়তো অন্তর্দ্বন্দে ভরা চিন্তা বা অনুভূতিগুলো আমরা সচেতন মন থেকে ঠেলে পাঠিয়ে দেই অচেতনে। আর সেখান থেকেই তারা তীব্র ভয় ও দুঃশ্চিন্তা হয়ে বের হয়ে আসে। যার কারণ হয়তো সেই মুহূর্তে খুঁজে পাওয়া যায়না! এছাড়া ফ্রয়েড মনে করতেন দুঃশ্চিন্তা দুই প্রকার- একটা প্রকৃত বিপদের (real danger) সময় হয়, যার নাম অটোম্যাটিক এনজাইটি। আরেক ধরনের দুঃশ্চিন্তা বিপদের হুমকি বা সম্ভাবনা (threatened danger) থাকলে হয়। এই দুঃশ্চিন্তার নাম সিগনাল এনজাইটি। সিগনাল এনজাইটি মানুষকে আসন্ন বিপদের জন্য প্রস্তুত করে। প্যানিক ডিজঅর্ডারে ব্যক্তির ইগো অটোম্যাটিক আর সিগনাল এনজাইটির মধ্যে তফাৎ করতে পারেনা! ফলে আসন্ন বিপদ বা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার ভয় থেকে আসা দুঃশ্চিন্তায় ইগো শরীরের সব এলার্ম সিস্টেমকে চালু করে দেয়। সেই পরিস্থিতিতে মনে হয় সত্যিই কল্পিত অসুস্থতা বা বিপদ ঘটছে! সেগাল (১৯৫৪) এ বিষয়ে কিছুটা ভিন্ন মত দিয়ে বলেছিলেন আক্রান্ত ব্যক্তিরা মনস্তাত্ত্বিক বিকাশের আদি পর্যায়ের প্যারানয়েড সিজোয়েড পজিশনে চলে যায়। যেখানে ব্যক্তি তার নিজস্ব সত্তার অনাকাঙ্ক্ষিত অংশকেই বাইরের কোন বস্তু, ব্যক্তি বা অবস্থার উপর প্রক্ষেপণ (projection) করে। তখন ওই জিনিসগুলো তার জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়! প্যানিকের সময় ইগো ছোট শিশুদের মনের মতো কাজ করে অনেকটা, যেকোন হতাশা বা খারাপ লাগাকে মৃত্যুভয়ের মতো করে অনুভব করে!

    সাইকোএনালাইটিক তত্ত্ব অনুযায়ী আমাদের মনে দুঃশ্চিন্তা আসাটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়। দুঃশ্চিন্তা আমাদের টিকে থাকতেও সহায়তা করে! মানুষের মন দুঃশ্চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন ডিফেন্স মেকানিজম ব্যবহার করে থাকে। প্যানিক ডিজওর্ডারে আক্রান্তদের ডিফেন্স মেকানিজম দুঃশ্চিন্তাকে আগলে রাখতে অসফল হয়! ফলে সামান্য দুঃশ্চিন্তাও তীব্র ভয় ও শারীরিক লক্ষণ নিয়ে প্রকাশিত হয়। বিশেষ করে আনডুয়িং (undoing) একধরনের ডিফেন্স যার মধ্যে দিয়ে অস্বস্তিকর অনুভূতি, চিন্তা, পূর্বের করা কোন কাজের জন্য অনুতাপ মন অচেতনেই সংশোধনের চেষ্টা চালায়। এছাড়া সোমাটাইজেশন (somatization) নামক ডিফেন্সের মাধ্যমে মন তীব্র আবেগের ভারকে শারীরিক লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ করে। কারণ ব্যক্তির মন তীব্র আবেগের ভার নিতে পারেনা। অনেক সময় রিএয়াকশন ফরমেশন (Reaction Formation) নামক পদ্ধতিতে মনের ভেতরে জন্ম নেওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত দুঃশ্চিন্তা উদ্রেককারী চিন্তাকে থেকে বাঁচতে মন সম্পূর্ণ বিপরীত আচরণ বা চিন্তা তৈরি করে। ঘটনা গুলি ব্যক্তির সচেতন মনের অজান্তে ঘটে থাকে। প্যানিক ডিজওর্ডারে এই সব ডিফেন্স মেকানিজমের ভূমিকা আছে বলে ধারণা করা হয়।

    অনেকে মনে করে থাকেন এই ডিজওর্ডারের পিছনে মানসিক ও পরিবেশগত কারণ থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে এই অসুখে আক্রান্তদের জীবনে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে এরকম ঘটনা বেশি ঘটেছিল! এছাড়া শৈশবে শারীরিক বা যৌননিগ্রহের স্বীকার হলেও এরকম সমস্যার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বলে অনেক গবেষকের ধারণা! এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নিগ্রহকারীর সাথে সম্পর্কের যে অন্তর্ছবি মনে উপস্থাপিত হয়ে থাকে তার প্রকৃতি! প্যানিক ডিজঅর্ডারের সাইকোডাইনামিক তত্ত্বের মূলকথার সংক্ষেপ নিম্নরূপ- হয়তো এই ব্যক্তিদের নিজেদের রাগকে সহ্য করার ক্ষমতা কম হয়; যা প্যানিক হিসেবে সামনে চলে আসে! আবার শৈশবকালে অথবা পরবর্তী পূর্ণ বয়সের কালে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের সাথে দূরত্ব থাকলে এরকম হতে পারে! কর্মক্ষেত্রে অত্যধিক দায়িত্বের ভারে পিষ্ট হওয়াটাও ভূমিকা পালন করতে পারে প্যানিকে আক্রান্ত হওয়ার! সন্তানের কাছে বাবা মা বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ, ভীতিকর, সমালোচনাকারী হিসেবে বিবেচিত হলে জমে থাকা আবেগীয় আঘাত প্যানিক অ্যাটাক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। কোন ব্যক্তি যদি এরকম অবস্থায় পড়ে যায় যেখান থেকে তার মুক্তি পাওয়া নিজের কাছে অসম্ভব বলে মনে হয়, নিজেকে ফাঁদে আবদ্ধ হওয়ার বোধ তৈরী হয় তখনো হতে পারে। সন্তান শৈশবে কোন কারণে পিতা মাতার কাছে প্রত্যাখ্যান সুলভ আচরণের সম্মুখীন হলে তার মনে তীব্র অভিমান ও রাগ জমতে থাকে। আবার একই সাথে এরকম দুঃশ্চিন্তাও তার হয় যে পিতা মাতা এই রাগের কথা জানতে পারলে হয়তো তার সাথে সম্পর্ক রাখবেনা! এই পুষে রাখা যুগপৎ রাগ ও দুঃশ্চিন্তা পরবর্তীতে প্যানিক অ্যাটাক আকারে তীব্র ভাবে বের হয়ে আসতে পারে। এছাড়া আরো ধারণা করা হয় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ইগো দুঃশ্চিন্তা বা ভয়ের কোন সংকেত পেলে অনেকটা যেন খন্ড বিখন্ড হয়ে পড়ে! ফলশ্রুতিতে বাঁধ ভাঙ্গা দুঃশ্চিন্তা ও ভয়ে আক্রান্ত হয়ে যায় মন! সেফটি বিহ্যাভিয়ার বা নিরাপদ আচরণ খোঁজার প্রবণতা ভয়কে আরো বাড়িয়ে দেয়।

    প্রথমবার প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রবল সম্ভাবনা থাকে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার। একবার অ্যাটাকের পর স্বস্তির বদলে তৈরি হয় আতংক। এরপর আরো বেশি তীব্রতা নিয়ে বেশি সংখ্যক বার এটা ঘটতে থাকে। যদিও অ্যাটাক হুট করেই হয় তবে এর পিছনে ধীরগতির প্রস্তুতি থাকে যেটা আক্রান্ত ব্যক্তি বুঝতে পারেনা। মানসিক কিছু সহযোগী প্রক্রিয়া (associative channels) একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে প্রতিবার কাজ করে। ভূমিকম্পে আহত ব্যক্তি যেমন সামান্য কম্পনে আঁতকে উঠে সেভাবে এখানে মন শরীরের সামান্য পরিবর্তন খেয়াল করে, যেমন- নাড়ীর গতি সামান্য বৃদ্ধি পাওয়া কিংবা মাংসপেশীতে সামান্য টান খাওয়া। এসব খুব স্বাভাবিক লক্ষণ বুঝতে পারলেও তৈরি হয় দুঃশ্চিন্তা। সেখান থেকে কল্পনায় অনেক বড় বিপদ ভেবে বসে ব্যক্তির মন। বিপদের বোধ থেকে জন্ম নেয় ভয়ের অনুভূতি! এই আবেগকে সামাল দিতে না পারলে উৎপন্ন হয় শারীরিক লক্ষণগুলি! আর মৃত্যুভয় অধিকার করে নেয় মনকে!

    এখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা কল্পনার! এটা পুনরায় ঘটার কারণ হচ্ছে মন উত্তেজক, কল্পনা ও আবেগীয় প্রতিক্রিয়ার মাঝে কন্ডিশনিং করে ফেলে। একটার সাথে আরেকটি জড়িয়ে যায়। একটি বাস্তব ও সাধারণ শারীরিক অনুভূতি রূপান্তরিত হয় মৃত্যুভয়ে। যখন মুক্তি ঘটে সেই বোধটাই রিইনফোর্সার হিসেবে কাজ করে পরবর্তী অ্যাটাক গুলির জন্য। কল্পিত মৃত্যুভয় বা দুর্যোগের বিশ্বাস এতোটাই প্রবল থাকে আক্রান্ত ব্যক্তি মাইক্রোডিলিউশন (micro-delusional state) বা ভ্রান্ত বিশ্বাসের মধ্যে আটকে পড়ে। তারা ভাবে যে ভয়টা পাচ্ছে সেটা অবশ্যই তাদের সাথে ঘটবে বা ইতমধ্যেই ঘটেছে। প্যানিক অ্যাটাক গুলো নিজেরাই বড় ধরনের মানসিক আঘাত বা ট্রমা হিসেবে কাজ করে। প্রথনমদিকে যে বস্তু, ব্যক্তি বা পরিস্থিতিতে অ্যাটাক হয় সেগুলোকে মন প্যানিক অ্যাটাকের সাথে যুক্ত করে। পরবর্তীতে ওই পরিস্থিতি সামনে আসলে আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। প্যানিকের সাথে নতুন নতুন পরিস্থিতিকে মানসিক ভাবে যুক্ত করার ঘটনা বাড়তে থাকে। এমন একটা সময় আসে যখন ব্যক্তির নিজস্ব স্বাধীনতা বাঁধাগ্রস্ত হয়। অনেক পরিস্থিতিতে অ্যাটাকগুলি ঘটতে থাকে! এমনকি এটার কথা ভাবলেও অ্যাটাক শুরু হয়ে যায়!

    রূপক অর্থে মনকে এমন একটা পাত্র (mental container) ভাবা যেতে পারে যা ভয় ও দুঃশ্চিন্তাকে ধারণ করে রাখে। যতোক্ষণ পাত্র ঠিক থাকে ব্যক্তি বুঝতে পারে সে কি দুঃশ্চিন্তা করছে অথবা কি নিয়ে ভয় করছে এবং সেটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এই পাত্র বা কন্টেইনার কাজ না করলে সব দুঃশ্চিন্তা যেন শরীরের উপর উপচে পড়ে; অনেক শারীরিক সমস্যা শুরু হয়; সাথে কাজ করে মৃত্যুভয়! সোজা কথায় বলতে গেলে তাদের মানসিক আচ্ছাদন (psychic skin) ছিড়ে যায়। মনের ভিতর আর বাহিরের শরীরের মধ্যে অদৃশ্য সীমারেখা বিলুপ্ত হয়। এখানে নিজস্বতা বা self সুগঠিত থাকেনা! নিজের শরীরের অখন্ডতা নিয়ে তৈরি হয় সংশয়! এছাড়া সিম্বোলাইজেশনের মতো ডিফেন্স অকেজো হয়ে যাওয়ায় অবদমিত ভয় বা দুঃশ্চিন্তাকে অন্য সিম্বোলিক বা প্রতীকী উপায়ে প্রকাশ করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে! এটাই প্যানিক ডিজঅর্ডারের সমস্যার মূল একটি জায়গা! ফ্রয়েড (১৯২০) সালে এই ধারণাকে বলেছিলেন মনের প্রতিরক্ষা দেয়াল (protective barrier) নামে। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে মা এই দেয়াল হিসেবে কাজ করে। শিশুরা হয়তো মনে করে যে তাদের চাহিদামতো মা সাড়া না দিলে তারা মারা যেতে পারে; যা তাদের ভেতর থেকে উৎসারিত আদিম মৃত্যু ভয়ের প্রকাশ! এটা মায়ের সাথে তাদের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে। শিশুরা তাদের মৃত্যুভয় কতোটুকু কাটিয়ে উঠবে তা মূলত নির্ভর করে মায়েরা তাদের কতোটুকু বুঝতে পারছে ও কি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তার উপর। খান (১৯৭৩) এ বিষয়ে বলেছেন মা যখন ধারাবাহিক ভাবে এই কাজে ব্যর্থ হয় তখন শিশুর মন আঘাতপ্রাপ্ত হয়; তারা দুঃশ্চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখেনা! অনেক সময় মা নিজেই শিশুর জন্য দুঃশ্চিন্তার উৎস হিসেবে কাজ করে তখন!

    তবে প্যানিক অ্যাটাকের ব্যখ্যায় যেমন মনোস্তাত্ত্বিক দিক রয়েছে তেমনই রয়েছে জিনগত, নিউরোবায়োলজিকাল, নিউরোকেমিক্যাল এর পরিবর্তনগত কারণ। আমাদের ভয়কে নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের যে অংশগুলো, যেমন- এমাইগডালা, হাইপোথ্যালামাস ইত্যাদির সমন্বয়ে তৈরি ফিয়ার সার্কিটে অস্বাভাবিকতা থাকে। মনোস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি এই বিষয়গুলো সমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

    ডা. সৌবর্ণ রায় বাঁধন

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞ

    সূত্রঃ মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিন, ৪র্থ বর্ষ, ১০ম সংখ্যায় প্রকাশিত।

    স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
    করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
    মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে 

    “মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪
    মনের খবর মানসিক চাপ মানসিক রোগ মানসিক সমস্যা মানসিক স্বাস্থ্য
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleঅতিরিক্ত চিন্তা থেকেই দুশ্চিন্তা
    Next Article বদলে যাচ্ছে আমাদের যৌন জীবন: পর্ব-২
    মনের খবর ডেস্ক

    Related Posts

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    July 5, 2025

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    July 3, 2025

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025277 Views

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025194 Views

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 2021107 Views

    অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়

    August 22, 202159 Views
    Don't Miss
    প্রতিদিনের স্বাস্থ্য July 5, 2025

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    ডা. রিফাত আল মাজিদ জনস্বাস্থ্য গবেষক ও চিকিৎসক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ,  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ গ্রীষ্মের…

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.