পেশার কারণে সারাদিন অফিসের কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছেন। তার ওপর আবার রাতের খাবারটা খেতে হয়েছে অফিসের বসদের সঙ্গেই। এদিকে সংসারে যে আপনার সঙ্গী আপনার জন্য অধীর অপেক্ষায় বসে আছেন।
আবার আপনি যখন চাকরি থেকে বাড়ি ফিরলেন তখন আপনার স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান ঘুমিয়ে পড়েছে। সকালে যখন অফিসে যাচ্ছেন তখন আপনার সন্তান ঘুমিয়ে আছে। এ রকম ঘটনা দু-এক দিন ঘটলে মানিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু প্রতিনিয়ত আপনার পেশাগত ব্যস্ততা সম্পর্কের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে বাধ্য।
নবদম্পতির কথায়ই ধরুন। মাস ছয়েক বিয়ে হলো। এর মধ্যেই স্বামীকে প্রায়ই অফিসের কাজে সপ্তাহে বা মাসে এক-দুই দিন বাসার বাইরে থাকতে হয়। কখনো দেশের বাইরেও যেতে হয়। কর্মব্যস্ত জীবনের এসব প্রভাব এসে পড়ে দুজন মানুষের মিষ্টি সম্পর্কের মধ্যে।
কখনো কখনো তা দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। জীবনে তো কর্মব্যস্ততা থাকবেই। পেশাগত জীবনের ব্যস্ততা সামলে নিজেকে একটু গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। আলাদা করে সময় দিন আপনার পার্টনারকে। যাদের সন্তান আছে তাদের রয়েছে বাড়তি দায়িত্ব।
ইট-পাথরের এই নাগরিক জীবনে কেউ কারও দিকে তাকানোরই সময় পায় না। কথা তো দূরে থাক। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে কোনোভাবে নাশতা সেরেই অফিসে যেতে হয়। এর মধ্যেও প্রয়োজন পার্টনারকে আপনার একটু সময় দেওয়ার।
বিখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায় বলেছেন, প্রতিদিন একবার স্ত্রীকে আমি তোমাকে ভালোবাসি বললে মাথার সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়। প্রতিদিন সকালে অফিসে যাওয়ার আগে এই একটি কথাই হতে পারে আপনাদের সম্পর্কের ছোট যত্নে বাড়তি ভালোবাসা।
ভালোবাসা কখনো পুরোনো হয় না। প্রতিদিন নতুন করে ভালোবাসতে শিখুন আপনার পার্টনারকে। ধরুন অফিস বা ব্যবসায়িক কাজে অনেক রাত হয়ে গেছে বাসায় ফিরতে। তবু বাসার প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ভুলবেন না। অথবা মাঝে মাঝে প্রিয় মানুষটার জন্য বই, ফুল, আইসক্রিম, চকলেট বা পছন্দের কিছু জিনিস কিনে বাসায় ফিরতে পারেন। এতে আপনার পার্টনার খুব খুশি হবে।
সারা দিনের মিটিং, বায়ারদের সঙ্গে কথা বলা সবকিছু মিলিয়ে হয়তো আপনার ত্রাহি অবস্থা। তার মধ্যেও মিনিট খানেকের জন্য হলেও ফোন দিন আপনার পার্টনারকে। অফিসে পৌঁছে ফোন দিয়ে জানাতে পারেন নিরাপদে অফিসে পৌঁছেছেন।
কিংবা লাঞ্চ টাইমে ফোন দিয়ে জানতে পারেন খেয়ে কিনা। এসব স্বল্প আলাপে নিজেদের মধ্যে ভালোবাসার উষ্ণ সম্পর্ক বজায় থাকে। পেশাগত ব্যস্ততার খারাপ প্রভাব তখন এড়িয়ে চলা যায়।
সপ্তাহের ছুটির দিনে পার্টনারকে নিয়ে আশপাশে কোথাও ঘুরতে যান। তা রেস্তোরাঁ হতে পারে অথবা কোনো পার্ক। তবে প্রকৃতির মাঝে দুজনে সময় কাটাতে পারলে বেশি ভালো হয়। এ সময় টেকনোলজি কম ব্যবহার করুন। একে অপরকে বুঝতে শিখুন, জানতে শিখুন।
কাজ করতে গিয়ে অফিসে বসের ঝাড়ি খেয়েছেন, খুব স্বাভাবিক ঘটনা। এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে যে, অফিসে বসের ঝাড়ি খায়নি। তাই বলে সারাদিন মন খারাপ করে থাকবেন না। বাসায় ফিরুন হালকা মনে।
সপ্তাহের ছুটির দিনে পারিবারিক দাওয়াত পড়েছে। হুট করেই একই দিনে আপনার খুব গুরুত্বপূর্ণ মিটিং পড়ে গেল। অ্যাটেন্ড না করলেই নয়। এক কথাতেই পারিবারিক দাওয়াত ক্যানসেল করে দেবেন না।
পার্টনারের সঙ্গে কথা বলুন শান্ত হয়ে। সুন্দরভাবে বোঝানোর চেষ্টা করুন আপনি কেন পারিবারিক দাওয়াতটিতে থাকতে পারছেন না। আপনার পার্টনার নিশ্চয়ই পরিস্থিতি অনুধাবন করবেন। আরএভাবেই আপনি আপনার পেশার প্রভাবে সাংসারিক জীবনে মনোমালিন্য থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে