দাম্পত্য জীবনে দুজন সঙ্গীর মানসিকতা যদি একে অপরের প্রতি ইতিবাচক না হয়, তবে সে সম্পর্ক কখনোই বাস্তবিক রূপে অর্থবহ হয়না। নেতিবাচক মানসিকতা ধীরে ধীরে সম্পর্কের মাঝে চিড় ধরায় এবং সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়।
প্রায়শই দেখা যায় নেতিবাচক মানসিকতার ফলে কোন সুন্দর সম্পর্কে জুড়ে থাকা কোন দম্পতি শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পারেনি। বর্তমান সময়ে আমাদের কাছে এমন ঘটনা বেশ স্বাভাবিক। এর কারণ হল দম্পতীদের মাঝে এমন কলহ, একে অপরের সমালোচনা, একে অন্যের সম্বন্ধে খারাপ কথা বলা এবং নেতিবাচক সম্পর্কের উদাহরণ আমরা টেলিভিশন, চলচিত্র, এমনকি বাস্তব জীবনে এত পরিমাণে দেখি যে এগুলো আমাদের কাছে খুব স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। খুব স্বাভাবিক বা সচরাচর ঘটনা মনে হলেও এই নেতিবাচক মানসিকতা এবং কাজকর্ম কোন সম্পর্কের জন্য মোটেও শুভকর নয়। বরং গবেষণায় দেখা গেছে যে নাতিবাচক শব্দের ব্যবহার, আচার আচরণ, এবং মানসিকতা একটি সুন্দর সম্পর্ককে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয় এবং দুজন দম্পতীকে আলাদা হতে বাধ্য করে।
অনেক সময় দেখা যায় অনেক ছোট বিষয় নিয়ে দাম্পত্য জীবনে দুজনার মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর ধরে চলা অননুরক্ত ব্যবহার এবং শারীরিক ও মানসিক অশান্তি চলতে থাকে। এরকম অবস্থায় একে অপরের প্রতি বিশ্বাস রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, ধীরে ধীরে একে অপরের প্রতি এই নেতিবাচক মনোভাব তাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করে এবং এক সময় সম্পর্ক পূর্ণরূপে ভেঙ্গে যায়।
এই নেতিবাচক মানসিকতা এবং আচার ব্যবহারের পেছনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করা কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল দাম্পত্য জীবনে দুজন সঙ্গী একে অপরের ইতিবাচক দিকে মনোযোগ না দিয়ে একে অপরের নেতিবাচক দিকগুলোর প্রতি বেশী মনোযোগী হয়। তারা তাদের মধ্যাকার ইতিবাচক এবং ভালবাসা পূর্ণ সময় গুলো মনে না রেখে শুধুমাত্র নেতিবাচক সময়গুলোই মনে রাখে। এ কারনেই এক বার হওয়া অপমান দশ বার হওয়া প্রশংসা থেকে অত্যধিক প্রভাব ফেলে। এভাবে তাদের দাম্পত্য জীবনে ধীরে ধীরে বিচ্ছেদের সূত্রপাত হয়।
দাম্পত্য সম্পর্ককে এই নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা করতে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যায়। তবে এর প্রথম শর্ত হল সমস্যাকে সমস্যা রূপে আগে চিহ্নিত করতে হবে। যদি আপনি মন থেকে অনুভব করতে পারেন যে আপনার নেতিবাচক মনোভাব এবং আচরণ আপনার দাম্পত্য জীবনকে ধীরে ধীরে বিনষ্ট করছে তাহলে প্রথমেই এই নেতিবাচক মানসিকতা পরিবর্তনের চেষ্টা করুন। আপনার নেতিবাচক ভাবনা, অনুভূতি, এবং আচার আচরণের দিকে লক্ষ্য করুন, সেগুলোকে একটি কাগজে লিপিবদ্ধ করুন এবং সেগুলো পরিবর্তনে আপনি কি কি পদক্ষেপ নিতে পারেন সেটির দিকে মনোনিবেশ করুন। নিজের আচার ব্যবহার এবং মনোভাব আপনার নিজের থেকে বেশী আর কেউই বুঝতে বা পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারবেনা। দয়াশীল মনোভাব, সঙ্গীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, ক্ষমাশীল মনোভাব, এবং নিজের ও আপনার সঙ্গীর প্রতি আরও যত্নশীল আচরণ আপনাকে একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে এবং দাম্পত্য জীবনকে আরও সুখের ও অর্থবহ করবে।
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে