সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিজেকে ভাগ্যবান ভাবলে দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে সুবিধা হওয়ার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির মতো আত্ম উৎকর্ষমূলক গুণাবলির বিকাশ ঘটে।
আমরা দৈনন্দিন জীবনে ভাগ্য বলতে যা ভাবি এবং মনস্তত্ত্বে ভাগ্যের যে পরিভাষা এই দুটির মাঝে পার্থক্য রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই ভাগ্যকে একটি আলাদা স্বত্বা হিসেবে দেখে, যা আমাদের প্রত্যেকের জীবনকে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রণ করে।
মনস্তত্ত্ব পরিসংখ্যানের বিভিন্ন তত্ত্বে ভাগ্য নিয়ে সব থেকে অভিনব যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে সেগুলোর মধ্যে একটি হল, ভাগ্যকে বিশ্বাস করলে একজন মানুষের জীবন যাপন ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলাফলই বদলে যেতে পারে।
দেখা গেছে, যারা নিজের সক্ষমতা বা সামর্থ্যের থেকে প্রাকৃতিক বিভিন্ন এনার্জির উপর বিশ্বাস রাখেন তারাই ভাগ্যকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করেন। এ ধরণের মানুষ সাধারণত বিভিন্ন মানসিক সমস্যা যেমন বিষণ্ণতা, দুশ্চিন্তা, হতাশার মতো বিষয় গুলোকেও উক্ত চিন্তা ভাবনা বা বিশ্বাস প্রসূত ফলাফল হিসেবে দেখেন।
তাদের সাথে যা কিছু ঘটুক তারা মনে করেন সেগুলো কোন কোন বাহ্যিক শক্তির কারণেই ঘটছে। এ ধরণের চিন্তা ভাবনা বা মানসিকতাকে বিচার করলে সাধারণভাবে এটিকে ইতিবাচক কোন মানসিকতা বা চিন্তাভাবনা হিসেবে অভিহিত করা যায় না। কারণ এটি মানুষকে নিজের উপর থেকে আস্থা, নিয়ন্ত্রণ এবং বিশ্বাস হারিয়ে ফেলার জন্য বাধ্য করে।
তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় উপরের এই ভাগ্য সংক্রান্ত নীতিতে বদল এসেছে। সম্প্রতি দেখা গেছে, যদি কেউ ভাগ্যকে এমন একটি স্বত্বা হিসেবে কল্পনা করে যা তাকে জয়ী করতে পারবে, সেটি তার জন্য ইতিবাচক এবং উপকারী হয়ে উঠতে পারে।
একজন মানুষ যদি নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারে তাহলে তার মধ্যে মানসিক শক্তি তথা মনোবল বাড়ে, যা তাকে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থায়ও আশাবাদী করে তোলে। এই গবেষণাগুলোতে সৌভাগ্য, আশাবাদ এবং ইতিবাচক মানসিকতার মধ্যে বেশ গভীর একটি সূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।
দেখা গেছে, যে ব্যক্তির মধ্যে নিজেকে ভাগ্যবান হিসেবে ভাবার মানসিকতা যত প্রবল, সে ততো বেশী আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী। তাদের মাঝে যে কোন বিপদ, যে কোন প্রকারেই হোক না কেন তা মোকাবেলা করার মনোবল থাকে।
তাদের মাঝে এই আত্মবিশ্বাস থাকে যে তারা যে কোন ভাবেই হোক সফল হবেই। আর এই আত্মবিশ্বাসকেই মনস্তত্ত্ব বিজ্ঞানে সফলতার মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
একইভাবে যারা নিজেদের দুর্ভাগ্যের অধিকারী হিসেবে মনে করে, তাদের মাঝে সব সময়ই সবকিছু নিয়ে একটি নেতিবাচক মানসিকতা কাজ করে। তাদের মনে হয় যে কোন কাজই তাদের দ্বারা সম্ভব নয় বা তারা কোন কাজেই সফল হতে পারবে না।
অর্থাৎ নিজেকে দুর্ভাগ্যের অধিকারী ভাবলে স্বভাবতই তাদের মনোবল কমে যায়। তারা কোন বিপদে পড়লে অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়ে এবং সেই বিপদ থেকে মুক্তির কোন উপায়ই খুঁজে পান না। ফলে, এ ধরণের মানুষ সফলতা থেকে বেশ দূরেই থাকে।
নিজেকে দুর্ভাগ্যের অধিকারী ভাবার মানসিকতা সরাসরি হতাশা বা বিষণ্ণতার সৃষ্টি করেনা বরং এটি তার মনোবল কমিয়ে দেয়, যা ধীরে ধীরে তাকে এই পরিণতির দিকে নিয়ে যায়।
তাই নিজেকে ভাগ্যবান ভাবা বা সৌভাগ্যের অধিকারী মনে করা কোন খারাপ কাজ নয়। নিজেকে সব সময় ইতিবাচক শক্তির আওতাধীন ভাবলে জীবন ইতিবাচক দিকেই ধাবিত হবে এবং ভালো কিছু করার আত্মবিশ্বাস ও মনোবল বাড়বে।
লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/what-are-the-chances/202109/luck-and-executive-function
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে