কোভিড-১৯ এবং অসংক্রামক রোগ

মানসিক উৎকন্ঠা: করোনায় সুস্থদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে

যারা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত বা যাদের পরিবারে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন তাদের মধ্যে সব বয়সের মানুষই করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। ৬০ বছর এর উপরে যাদের বয়স তাদের বেলায় এই ভাইরাসে গুরুতর ভাবে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যাদের আগে থেকে অসংক্রামক রোগ রয়েছে তারা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে আরো বেশি দুর্বল এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।

অসংক্রামক রোগের মধ্যে রয়েছে:
১. বিভিন্ন হৃদরোগে (যেমনঃ উচ্চরক্তচাপ, সেসব ব্যাক্তি যাদের হার্ট এ্যাটাক বা স্ট্রোক হয়েছে বা হওয়ায় ঝুঁকি আছে)
২. দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসতন্ত্রের রোগ (যেমনঃ সিওপিডি, হাঁপানি ইত্যাদি)
৩. ডায়াবেটিস
৪. ক্যান্সার

করোনা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত রোগ (কোভিড-১৯) এর জন্য কারিগরি নির্দেশিকা:

রোগী ব্যবস্থাপনা
রোগীর কো মর্বিডিটি বা অন্য অসুস্থতা আছে কিনা জেনে নিতে হবে এবং ঐসকল রোগের অবস্থা ও মাত্রা বুঝে বর্তমান রোগের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। রোগী এবং তার পরিবারের সাথে যত দ্রুত সম্ভব যোগাযোগ করতে হবে।

কোভিড-১৯ এ গুরুতর অসুস্থ রোগীর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে, কোন ঔষধটি রোগীকে দেয়া হবে আর কোন ঔষধটি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে এটা প্রথমে ঠিক করতে হবে । রোগী এবং তার পরিবারের সাথে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ রাখতে হবে এবং রোগীর চিকিৎসা এবং সুস্থ হয়ে উঠা নিয়ে নিয়মিত খবরাখবর দিতে হবে। রোগীর জীবন সঙ্কটাপন্ন হলে, যে কোন জীবন রক্ষাকারী ব্যবস্থা বা চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে রোগীর ইচ্ছা এবং মতামতের উপর শ্রদ্ধা রেখে পরিবারকে অবহিত করে তা করা বাঞ্ছনীয়।

যে সকল ঝুঁকির কারণ এবং অবস্থা কোন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীকে গুরুতর অসুস্থ করে দিতে পারে:

  • ধূমপায়ীদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি কারন যারা ধূমপান করেন তাদের হাত বারবার ঠোঁটে মুখে লেগে যায় সেখান থেকে সহজেই ভাইরাস মুখে বা নাকে চলে যেতে পারে আর এভাবেই তাদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুন বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া ধূমপায়ীদের এমনিতেই ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা থাকে বা ফুসফুসের ক্ষমতা কম থাকে যার কারনে এই মানুষদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এ গুরুতরভাবে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • ধূমপান এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত “ শিসা”, “হুক্কা্‌” ইলেক্ট্রনিক সিগারেট অনেক সময় একাধিক ব্যক্তি একসাথে ব্যবহার করে যার ফলে কোভিড-১৯ সংক্রমনের ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুন।
  • যে সকল রোগের কারনে শরীরে অক্সিজেন চাহিদা বেড়ে যায় বা শরীরের অক্সিজেন ব্যবহার করার ক্ষমতা কমে যায় সে সকল অবস্থায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • একটি স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন যেমন স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ঠিকঠাক ভাবে কাজ করা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা, ধূমপান এবং মদপান থেকে বিরত থাকা, পর্যাপ্ত ঘুম ইত্যাদি মেনে চললে কোভিড-১৯ এ গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় সম্ভাবনা কমে যাবে।

অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত বা তাদের সাথে বসবাস করা মানুষদের জন্য পরামর্শঃ
১. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিকমত ঔষধপত্র খেতে হবে।
২. যদি সম্ভব হয় তাহলে একমাসের মত ঔষধ সংরক্ষনে রাখতে হবে।
৩. যাদের হাচি কাশি বা এই জাতীয় রোগ আছে তাদের থেকে অন্তত এক মিটার বা ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৪. সাবান পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুতে হবে।
৫. ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে
৬. মাদক বা এর সাথে সম্পর্কিত কোন কিছু গ্রহন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৭. নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে হবে।

তাই বয়স্ক ব্যক্তিদের শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করা এবং সমস্যা থাকলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার জোরদার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

সূত্র: ডা. মো. রিজওয়ানুল করিম, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর ফেসবুক পোস্ট  থেকে  নেওয়া।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

 

Previous articleঅতিরিক্ত পরিচ্ছন্নতা কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে?
Next articleকরোনা টিকার জন্য নাল কাঁকড়া দরকার কেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here