ছোট-বড় যেকোনও অফিসে কাজের চাপ থাকবেই। তবে কিছু সহজ উপায় মানলে এই চাপ অনেকটাই কাটিয়ে অফিসে স্ট্রেস ফ্রি থাকা যায়।
দশটা-পাঁচটা অফিস হোক বা কর্পোরেট সেক্টরের টানা ন’-দশ ঘণ্টার শিফট, দিনের অনেকটা সময়ই আমাদের কাটে কর্মজগতে। কর্মজীবনের এই প্রবল চাপ ক্ষতি করছে ব্যক্তিগত ও সাংসারিক জীবনেরও। ছোট-বড় যেকোনও সংস্থাতে কাজের চাপ থাকবেই। আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ঠিক ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ করে উঠতে পারি না।
তবে কিছু সহজ উপায় মানলে এই চাপ কিন্তু অনেকটাই কাটিয়ে অফিসে স্ট্রেস ফ্রি থাকা যায়। এমনকি সময়ে অফিস গিয়ে বরাদ্দ সময়ের মধ্যেই সেরে ফেলা যায় অফিসের সব কাজ।
কর্ম পরিকল্পনা
দিনের শুরুতেই ঠিক করে নিন কোন সময় কোন কাজটা করবেন। তবে দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাতে একাধিক নতুন কাজ আসতেই থাকে। এক এক করে নোট করে রাখুন সেইসব কাজের তালিকা। এবার কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী ঠিক করে নিন কোনটা আগে সারবেন।
সময় ব্যবস্থাপনা
জমে থাকা অতিরিক্ত কাজের চাপই আপনার ধকল আর দুশ্চিন্তার মূলে। প্রতি দিনের কাজ সে দিনই সেরে ফেলার চেষ্টা করুন। অহেতুক কাজ জমিয়ে রেখে দেবেন না। আর খুব বেশি প্রয়োজন না থাকলে অফিসের কাজ বাড়ি নিয়ে যাবেন না। বাড়িতে যেটুকু সময় পাচ্ছেন, তা একান্তই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটান। কাজের চাপ আর কান্তি কাটিয়ে তুলতে ‘ফ্যামিলি টাইম’ খুবই জরুরি।
সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতনের সাথে সম্পর্ক
কর্মক্ষেত্রে আপনার সহকর্মী এবং বসের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ঠিক কেমন, আপনার অফিস টাইমে আপনার চারপাশে কেমন লোকজন কাজ করছে তার উপরেও আপনার কাজ নির্ভর করে অনেকখানি। সকলের সঙ্গেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার মতো সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। বিশেষ করে টিম ওয়ার্কের ক্ষেত্রে এই পারস্পরিক সম্পর্কই কাজের গতিকে বেঁধে রাখে। তবে কোনও কোনও সহকর্মী এই সুসম্পর্কের সুযোগ নিয়ে আপনার উপর অতিরিক্ত কাজের ভার চাপাচ্ছেন কি না, সে সম্পর্কে সচেতন থাকুন। প্রয়োজনে কথা বলুন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
আলোচনা
কোনও বিষয় সম্পর্কে যে কোনও রকম সন্দেহ থাকলে বা বুঝতে না পারলে সঙ্গে সঙ্গে সিনিয়ারদের পরামর্শ নিন। অনেক সময় এমনটা করতে অনেকেই সঙ্কোচ বোধ করেন। আর তাতেই কাজে সময় ব্যয় হয় বেশি। ভুলের পর তার দায় থেকে একটা মানসিক চাপ তো জন্ম নেয়ই, এছাড়া ভুল ঠিক করার জন্যও ব্যয় হয় অতিরিক্ত সময়।
আড্ডা
কাজ চলাকালীন টুকটাক হাসি-মস্করা-আড্ডা সব অফিসেই হয়। সে সবে দোষ নেই, বরং এতে কাজে গতি আসে।কিন্তু এই আড্ডার জন্য কাজ বাকি রাখার মতো ভুল করবেন না। আড্ডার সময়টুকুও নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কতক্ষণ কোন আড্ডায় যোগ দেবেন, এই হিসেবটা কাজের চাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ঠিক করুন। অফিসে মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সচেতন হোন। মোবাইলে বেশি মন দিতে গিয়ে হাতের কাজ শেষ হয় না অনেকেরই।
সাময়িক বিরতি
অনেকেই ভাবেন, একটানা বসে কাজ করে গেলে সময়ে কাজ শেষ হয়। তাই তাঁরা জায়গা ছেড়ে খুব একটা ওঠেন না। এই ধারণায় সায় নেই মনোবিদদের। বরং তাঁদের মতে, এক-দু’ঘণ্টা অন্তর সিট ছেড়ে উঠুন। সহকর্মীদের সঙ্গে কথা-বার্তা বলুন, কয়েক পা হেঁটে আসুন। এতে একটানা বসে থাকার বদভ্যাস থেকেও কিছুটা ছাড় মিলবে, কাজের গতিও ফিরবে এতে।