অতি মাত্রায় খাওয়ার অভ্যাস? আত্মসংযমই পরিত্রাণের উপায়

অতি মাত্রায় খাওয়ার অভ্যাস? আত্মসংযমই পরিত্রাণের উপায়

পছন্দের খাবারের প্রতি মোহ অনেকের জন্যই শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করে। পছন্দের হলেও অতিরিক্ত খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে অসমর্থ ব্যক্তিদের জন্য আত্মসংযম একটি কার্যকরী সমাধান হতে পারে।

প্রত্যেক ব্যক্তির তার নিজস্ব কিছু পছন্দের খাবার থাকে। কিছু কিছু সময় পছন্দের খাবার বেশী মাত্রায় খেয়ে ফেলা নেতিবাচক কোন বিষয় নয়। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা কখনোই খাওয়ার প্রতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। তারা তাদের পছন্দসই খাবার, সেটি অতিরিক্ত তেল যুক্ত বা অস্বাস্থ্যকর হলেও প্রায়শই অধিক মাত্রায় খেয়ে ফেলেন এবং এই প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হন।

এর ফলে তাদের বিভিন্ন ধরণের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্ত চাপ, স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি অনীহা, শারীরিক ও মানসিক অস্থিরতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, সহজে অসুস্থ হয়ে পড়া, না খেতে পারলে মানসিক অবসাদে ভোগা ইত্যাদি।

অনেকেই এসব সমস্যা সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও নিজের এই অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারেন না। মনস্তত্ত্ববিদগণ বলেন, অতিরিক্ত খাওয়ার এই সমস্যা প্রকৃতপক্ষে মানসিক সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে আত্ম সংযমের মতো বিষয়গুলো সহায়তা করতে পারে।

আত্মসংযম মানে এমন নয় যে আপনি আপনার পছন্দসই খাবারগুলো খাওয়া থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকবেন। অথবা এমনটিও নয় যে, জোর করে নিজেকে আটকে রেখে মানসিক চাপ বাড়াবেন। তাহলে এই পুরো বিষয়টি আসলে কেমন?

আত্মসংযম হল এমন একটি চলমান প্রক্রিয়া যেটি যে কোন ভালোলাগা, মন্দলাগা, ইচ্ছা বা সমালোচনার ঊর্ধে। আত্ম সংযম হল সচেতনতা বোধ যা আপনাকে এটি অনুধাবন করতে সাহায্য করবে, নিজের ইচ্ছা বা সচেতনতার প্রতি আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করবে এবং আত্ম নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ অতিরিক্ত খাওয়া সহজভাবে কমাতে আপনার মানসিকতা পরিবর্তন করবে।

না খেয়ে থেকে কিংবা নিজের অতি মাত্রায় খাওয়ার অভ্যাস নিয়ে মানসিক চাপে না ভুগে আপনি যদি নিজের মাঝে সংযম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারেন এবং অবশ্যই কোন রকম মানসিক চাপ ছাড়া আপনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেন।

সব সময় মনে রাখবেন, অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস বা পছন্দের খাবার বেশী খেয়ে ফেলার অভ্যাস কোন অপরাধ নয়। তাই এটি নিয়ে কারও সমালোচনায় মন খারাপ করা চলবে না কিংবা নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে অন্যদের কথার জন্য খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে গিয়ে বিষণ্ণতা বা মানসিক পীড়ায় আক্রান্ত হওয়া যাবে না।

আপনি যখনই মনে করবেন যে আপনার অতি মাত্রায় খাওয়া আপনার শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে, তাহলে নিজের মাঝে পর্যাপ্ত আত্মবিশ্বাস, মনোবল এবং সচেতনতার মাধ্যমেই নিজের অভ্যাসকে বদলানোর প্রচেষ্টা করুন, সহজ ও স্বাভাবিক উপায়ে। তাহলেই মানসিক সমস্যা এড়িয়ে সফল ভাবে অতি মাত্রায় খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

নিজের ইচ্ছেগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করে বরং সচেতনতার সাথে, আত্মবিশ্বাসী হয়ে তথা আত্মসংযম ধারণ করে মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্য গড়ে তোলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করা এবং সুফল পাওয়া সম্ভব হবে।

লিখেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

Previous articleবুকের দুধই শিশুর পুষ্টির সঠিক উৎস
Next articleসহযোগী হয়ে উঠুক জীবনসঙ্গী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here