চিঠি : স্যার আমার বয়স প্রায় ৩০ হবে। আমার মনে সব সময় একটা ভাল না লাগার অনুভূতি কাজ করে। কেন জানি নিজেকে সব সময় একা মনে হয়। ভবিষৎ নিয়ে অনেক চিন্তায় থাকি। আমার ফ্যামিলি রিলেটেড কিছু মানুষের আচরণে আমি খুবই বিরক্ত। উনারা সবাই উচ্চশিক্ষিত কিন্তু তাদের আচরণ আমাকে কষ্ট দেয়। আমি একটু ছোটবেলা থেকেই বই পড়তে, লেখালেখি করতে পছন্দ করি।
আমি মুসলিম কিন্তু আমার সকল ধর্মের প্রতি অনেক ভালোবাসা। স্বামী বিবেকানন্দ তো মহাপুরুষ। তার বাণি আমার অনেক ভালো লাগে। কিন্তু আমি যখন তাদের বই পড়ি বা কিছু লেখালেখি করি। তখন তারা আমাকে মানসিকভাবে টর্চার করে। তারা বলে আমি মুসলিম হয়ে কেন এগুলা পড়ি বা লিখি। শিক্ষার কাজ হলো মানুষকে বিকাশিত করা। শিক্ষিত মানুষের আচরণ কেন তাহলে এরকম হবে। এটা নিয়ে আমি খুব মর্মাহত। আমাকে কিছু পরামর্শ দিবেন প্লিজ।
-অহিদুর রহমান অনিক
পরামর্শ : ধন্যবাদ আপনাকে প্রশ্ন করার জন্য। আপনার বক্তব্যে দুইটা বিষয় উঠে এসেছে। একটা হলো আপনার মন খারাপ থাকে। ভালো লাগা খুঁজে পান না। ভালো না লাগার অনুভূতি আপনাকে ঘিরে রাখে। আরেকটা হলো ধর্মীয় বিভিন্ন বাণী আপনার ভালো লাগে। কিন্তু আপনি মুসলিম তাই অন্যান্য ধর্মের বিষয়ে পড়লে আপনার পরিবারের কেউ কেউ আপনাকে তিরস্কার করে। প্রথম কথা হলো আপনাকে ভালো থাকতে হবে। সেটা মানুষ হিসেবে যেমন নিজের জন্য তেমনি অন্যদের জন্যেও আপনাকে ভালো থাকতে হবে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আপনাকে ভালো থাকতে হবে। আপনি যদি ভালো থাকতে না পারেন তাহলেই সেটা কিন্তু আপনারই ক্ষতি।
সুতরাং কী করলে আপনি ভালো থাকবেন সেগুলো আপনাকেই রপ্ত করতে হবে। প্রতিদিন বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্নরকম সমস্যা আসবে, ভালো না লাগার কারণ আসবে এটাই স্বাভাবিক।
- কোনো মানুষ যদি জীবনের চাওয়া-পাওয়ার সর্বোচ্চটুকুও অর্জন করে তবুও কিন্তু ভালো না লাগার কারণ থাকে। প্রতিদিনই মানুষের মন খারাপের কারণ ঘটে। এর ভিতরে দিয়েই মানুষ ভালো থাকে, ভালো থাকতে হয়। আপনাকেও ভালো থাকতে হবে। ভালো থাকতে পারাটাই জীবনে বেঁচে থাকার অবলম্বন।
কোনো কারণে কষ্ট পেলে সেটা নিয়ে বেশি ভাববেন না। এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। যা করলে ভালো লাগবে সেটা করবেন বেশি। ভালো লাগার ছোট ছোট উপলক্ষগুলোও বেশি বেশি উপভোগ করবেন। বারবার চর্চা করবেন। ভবিষ্যত নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করবেন না। বরং নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে আস্তে আস্তে এগোতে থাকুন। সময় আপনাকে পৌঁছে দিবে। আর ধর্মীয় বিষয়ে এভাবে আমাদের কথা না বলাই ভালো। সরাসরি কথা বলতে পারলে সেটা ভালো হয়। তাছাড়া ধর্মীয় বিষয়ে কিছু কিছু আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে। আপনি সঠিকটা খুঁজে বের করুন। এছাড়া এই প্রসঙ্গে মনের খবর-এ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রসঙ্গে লেখা এসেছে। সেসব লেখা পড়ুন, মনের খবর এর সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।
- পরামর্শ দিয়েছেন,
অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব- সম্পাদক, মনের খবর
অধ্যাপক– মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সেকশন মেম্বার– মাস মিডিয়া এন্ড মেন্টাল হেলথ সেকশন অব ‘ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন’।
কোঅর্ডিনেটর– সাইকিয়াট্রিক সেক্স ক্লিনিক (পিএসসি), মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সাবেক মেন্টাল স্কিল কনসাল্টেন্ট – বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট টিম।
এই বিভাগের অন্যান্য লেখা পড়তে ক্লিক করুন এখানে :
প্রতিদিনের চিঠি : আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সেসবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন ‘প্রতিদিনের চিঠি’ বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আপনিও লিখতে পারেন আমাদেরকে। সেজন্য ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
মানসিক স্বাস্থ্যের যে কোনো প্রশ্ন/পরামর্শ পেতে চিঠি পাঠাতে পারেন পেজের ইনবক্সে অথবা মেইল করুন monerkhaboronline@gmail.com -ঠিকানায়।
[প্রতিদিনের চিঠি পর্বে দেয়া উত্তরগুলো কেবলমাত্র প্রাথমিক দিকনির্দেশনা। সঠিক ও পূর্নাঙ্গ চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের সাথে সরাসরি কথা বলে চিকিৎসা নিতে হবে।]
- মাসিক মনের খবর প্রিন্ট ম্যাগাজিন সংগ্রহ করতে চাইলে কল করুন : 01797296216 এই নাম্বারে। অথবা মেসেজ করুন পেজের ইনবক্সে। লেখা পাঠাতে পারেন monerkhaboronline@gmail.com বা এই 01844618497 হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে।
/এসএস/মনেরখবর