Close Menu
    What's Hot

    BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

    চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

    লক্ষ্য নির্ধারন নিয়ে মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিনের জুলাই সংখ্যা ২০২৫

    মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Thursday, November 27
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম November 20, 2025

      BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

      Recent

      BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

      চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

      মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর August 7, 2025

      অতিরিক্ত চিন্তা আমার পড়ালেখার হ্যাম্পার করছে

      Recent

      অতিরিক্ত চিন্তা আমার পড়ালেখার হ্যাম্পার করছে

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      সাক্ষাৎকার November 5, 2025

      মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

      Recent

      মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

      বর্তমানেও অনেকেই মানসিক রোগকে লজ্জার বিষয় মনে করেন — ডা. মো. শাহেদুল ইসলাম

      পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি ও বিরক্ত কাজ করছে

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      তারকার মন August 5, 2023

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      Recent

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

      কার্ল সেগান : যিনি বিশ্বাস করতেন মহাবিশ্ব একটি মমতাপূর্ণ জায়গা

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » নিজের পরিচয়কে ধরে রাখতে পারা আধুনিকতার চেয়েও আধুনিক
    জীবনাচরণ

    নিজের পরিচয়কে ধরে রাখতে পারা আধুনিকতার চেয়েও আধুনিক

    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লবBy অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লবApril 16, 2023No Comments7 Mins Read0 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    ছোটবেলায় দেখতাম, বাংলাদেশের মাথার উপর রোদের রং মাসে মাসে পরিবর্তন হতো। বছরের ভিন্ন মাসে ভিন্ন আকাশ, ভিন্ন রোদ। শীতের রোদ, হেমন্তের রোদ, বর্ষার রোদ এবং আরো অনেকরকম রোদ।

    আজকাল শহুরে আকাশের অনেক বড় বড় ছাদের কারণেই কিনা কে জানে, রোদ কিংবা আকাশ কোনো কিছুর পরিবর্তনই সেভাবে চোখে পড়ে না। গ্রামের আকাশের রংগুলো কেমন, তাও খুব বেশী দেখা হয় না। শুনা যায় বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নাকি আগের মতো আর নিজেদের মহিমা ছড়াতে পারছে না। ঋতুগুলি তাদের বৈশিষ্ট হারাচ্ছে। পাল্লাদিয়ে আমাদের অনুভব বা অনুভূতির বিষয়গুলিও মনে হয়ে কমে আসছে।

    রোদ, আকাশ, গাছ বা পাখী দেখার সময়ইবা কোথায়? পরিবর্তন সবখানে, মনের ভিতর ও বাইরে। প্রকৃতিতে ও চিন্তায়। এই পরিবর্তনে কারো কোনো হাত নেই জানি। পরিবর্তন চলছে চলবে। আবার কেন যেনো মনে হয়, এসব পরিবর্তনে কারো কিছু আসে যায়ও না। কেমন যেনো! মনে হয় পরিবর্তন হচ্ছে তো কি হয়েছে? সমস্যা কী?

    সত্যিইকি এসব পরিবর্তনে কারো কিছু আসে যায় না? যদি গাছ পালা নদী পাখি বিল হাওর বাওর রোদ বৃষ্টি সব পরিবর্তন হয়ে যায়, তাতে কারোরই কি কিছু আসবে-যাবে না? যেভাবে পরিবর্তন হয়, যেভাবে হবে, যেভাবে হচ্ছে সবই কি আমরা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবো!

    ‘‘নিজের পরিচয়কে ভেসে যেতে না দিয়ে সেসবকে ধরে রাখা যে, আধুনিকতার চেয়েও আধুনিক!’’

    আমাদের ঋতু, আমাদের রোদ, আমাদের হেমন্ত, আমাদের আকাশের যেকোনো অনিচ্ছাকৃত পরিবর্তনে আমরাও কি পরিবর্তনশীল? আমাদের মন! আমাদের চাওয়া, আমাদের পাওয়া, আমাদের ইচ্ছা, আমাদের ইতিহাস, আমাদের পরিচয়! ভেসে যাওয়া জলজের মতো, এভাবে একদিন ভাসতে ভাসতে অজান্তেই হয়তো আমাদের অনেক কিছু চলে যাবে অনেক দূর, গভীরে! সাগরে, দূর দরিয়ায়!!

    কে জানে, আমরা হয়তো তখনো ছাদের কিনারায় চোখ ঠেকিয়ে বলবো, কই আকাশইতো দেখা যায় না। রংয়ের পরিবর্তন দেখবো কি করে? জলে ভাসতে ভাসতে সাগরের গভীরে যখন যাবো, তখন হয়তো একদিন, হয়তো কেন, সত্যিই ডুবেই যাবো। পরিচয়, শিকড়, শিকড়ের টান, শিকড়ের আগপাছ কোথাও কিছু থাকবে না। ভাসতে ভাসতে শিকড়ের মূল উৎস থেকেই হয়তো তখন যোজন যোজন দূরে থাকবো, কে জানে!

    • এই পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে পরিবর্তিত হতে হতে আমাদের নিজেদের বলে কিছু ছিলো, নিজেদের বলে কিছু আছে, নিজেদের বলে কিছু থাকবে, সেটার নিশ্চয়তাই কোথায় পাবো? আমাদের ঘর সংসার, মা-বাবা, বাড়ী গ্রাম, হাট ঘাট, গল্প কাহিনী, বিশ্বাস বন্ধন, প্রথা প্রচলন, ইতিহাস পরিচয়, লুঙ্গি গামছা, উঠোন বাড়ান্দা, হাডুডু, দাঁড়িয়াবান্ধা, যাত্রা রামায়ন, গাজী কালু, জারি সারি, ভাওয়াইয়া মুর্শিদি, পিঠা পার্বন, পরব উৎসব, মেলা, খেলা, পাড়া মহল্লা, কাপড় চোপড়, খাওয়া বিছানা সব কি পরিবর্তন হয়ে যাবে?

    ভয় পেতে চাই না। তবে আশঙ্কা হয়, প্রকিৃতিই যেখানে তার নিজের রুপ গন্ধ মহিমা আদল ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে বিফল হচ্ছে। সেখানে প্রকৃতির মতো পরিবর্তিত হতে হতে, কিংবা গল্প কাহিনীর মতো ভেসে ভেসে দূরে কোথাও গিয়ে না আমাদের নিজেদের অস্তিত্বও ডুবে যায়!

    চোখ বন্ধ করে একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশের এখানে ওখানে ঘরে বাইরে প্রতিটি কোণায়, রাস্তাঘাটে হাজার হাজার গল্প, হাজার হাজার বিশ্বাস, হাজার হাজার কাহিনী, হাজার হাজার ঐতিহ্য এবং হাজার বছরের বিভিন্ন প্রথা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কথা, রুপকথা বা উপকথারও অন্তু নেই। অন্ত শুধু সেসবকে নিজেদের মতো করে ভাবতে পারা। আরো সোজা কথায়, নিজেদের ভাবতে পারা। নিজেদের অস্তিত্বের অংশ হিসেবে উপলব্দি করতে পারা। সেই সাথে বিশ্বাসগুলোকে অন্যদের ভিতর ছড়িয়ে দেয়ার আকূতি। ছোটদেরকে এসব নিয়ে সময়মতো ও সঠিক বিষয়গুলি ভাবতে শেখানো। আমরা হয়তো অনেকেই জানি, বিষয়গুলি আমাদের। কিন্তু আমরা কার কাছে স্পষ্ট করে বলেছি, এসবকে টিকিয়ে রাখতে হলে যত্ন দরকার!

    আমি ধৃষ্ঠতা দেখাচ্ছি না। তবে, এটা স্পষ্ট করেই বলছি, বিষয়গুলি সার্বজনীন করার ব্যপারে আমাদের শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ কোথায়? নতুন নতুন মানুষ, শিশুকিশোর, ছেলেমেয়েদের কাছে এসবের কতটুকু পরিচয়ইবা আমরা করিয়ে দিচ্ছি? বলতে একটু দ্বিধা হলেও বলছি, অনেককেই আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের অনেক বিষয় নিয়ে নাক সিটকানো অভিব্যক্তি, প্রকাশ্যেই প্রকাশ করে থাকে ন। কেনো করেন জানি না, তবে এমনতর উন্নাসিকতা আমাদেরকে ঘরে বাইরে পরিচয়হীন করে তুলতে পারে! জারি সারি ভাটিয়ালি, এমনকি প্রতিদিনের চলার বিভিন্ন প্রথাকে পুরনো হিসেবে চালিয়ে দিতে চান অনেকে।

    ‘‘ঐতিহ্য পুরাতন হলেও ঝকঝকে ঝলমলে সম্পদ। আধুনিকতার নামে সবার সাথে দৌঁড়ানোর কোনো মানে নেই। এক পা পিছিয়ে গিয়ে নিজেকে চিনাটা ক্ষতিকর কিছু নয়।’’

    নিজের আধুনিকতাকে জাহির করার জন্য কোনো না কোনো বিদেশী সংস্কৃতিকে অজান্তেই নিজের করে নিচ্ছেন। সুযোগ পেলেই সেসব সম্মন্ধে দুচার কথা বাড়িয়েই বলছেন। একটা কথা স্পষ্ট করে মনে রাখতে হবে, যে সংস্কৃতিকে আপনি আমন্ত্রন জানাচ্ছেন, তাদের কোনো সমস্যা বা অসুবিধা নেই। বরং অজান্তেই তাদের সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করছেন। সেটিও সমস্যা নয়। সমস্যা হলো, বুঝে না বুঝে নিজেদের সংস্কৃতিকে, শিকড়কে অগ্রাহ্য করা। নিজের এবং নিজস্ব অস্তিত্বকে অবহেলা করা। সবাই এমনটা করেন, তাও নয়! অনেকেই ছেলেমেয়েদেরকে সময়মতো সঠিক তথ্যই দিয়ে থাকেন, সন্দেহ নেই। আমাদের পরিবার, আমাদের সমাজ, আমাদের নিজস্ব শিল্প সাহিত্য ও জীবনাচারণকে নিজেদের সম্পদ বলে গর্ববোধও করেন অনেকে।

    ভিন্ন সংস্কৃতি জানা, বুঝা এমনকি আত্বস্ত- আয়ত্ব করা সমস্যা নয়। সমস্যা তখনই, যখন নিজেদের স্বকিয়তাকে বাদ দিয়ে বা ভুলে গিয়ে অন্যগুলিকে আমন্ত্রন জানানো হয়। হাস্যকর হয় তখন, যখন আমরা আমাদের নিজেদের পরিচয়কে সঠিকভাবে ধারণ করতে না পারি। যদি ভিন্ন সংস্কৃতিকে আমন্ত্রন জানানোর বিষয়টি নাও থাকে। তবু আমাদের বিষয়ে আমরা কতটুকু সজাগ, এ প্রশ্ন আসতেই পারে? নিজেদের স্বকিয়তার প্রশ্নে সবারই শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা থাকা বাঞ্চনীয়।

    আমাদের ঋতুগুলির মতো অজান্তেই পরিবর্তন হতে দেয়া উচিত নয়। ভেসে ভেসে দূরে গিয়ে নষ্ট হবার আগে অন্তত কোন কোন বিষয়গুলি একান্তই আমাদের নিজেদের, সেসব ব্যাপারে সার্বজনীন সচেতনতা তৈরী হওয়া দরকার। দরকার মনের ভিতর গেঁথে নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

    কেন আসছে একথা? আমি আমার নিজের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার না করলেই নয়। নিজেদের ঐতিহ্যগত বিষয় নিয়ে অনেক সময় বিভ্রান্তিতে পরতে হয়। পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অন্যান্য কোন কোন বিষয়, একান্তই আমাদের নিজস্ব, মজ্জাগত, ভূমিগত, ঐতিহ্যগত সেসব স্পষ্ট নয়। কোন কোন বিষয়ে আমাদের আরো যত্নবান হওয়া প্রয়োজন, তারও নিজের কাছে স্পষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা নেই।

    আমাদের ভাষার একটি দিক এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। যেমন; তুই, তুমি, আপনি। পৃথিবীতে খুব কম ভাষায় বা কম সাংস্কৃতিক গোষ্ঠিতে তিন স্তরের এমনতর সম্বোধন দেখা যায়। এটা আমাদের নিজস্ব একটি সম্পদ সন্দেহ নেই। কিন্তু আজকাল প্রায়ই বিভিন্ন মিডিয়াসহ, অনেক ক্ষেত্রে মিস্টার এমুক বা মিস্টার তমুক বলে সম্বোধন করতে দেখা যায়।

    ব্যাক্তিগত ভাবে আমি আহত হই। মনে হয়, সম্বোধনহীন এই সম্বোধনতো আমাদের নয়। নিজেদের মতো করে বললে দোষ কোথায়? হায়, হ্যালোর যুগে ফেইসবুক কিংবা রাস্তাঘাটেও এসব সম্বোধন করে কেউ কেউ পুরো বিষয়গুলিকে সেরে ফেলতে চায়। আমার প্রশ্ন, কেন? তুই, তুমি আপনিকে আমরা যেভাবে ব্যাবহার করতে অভ্যস্ত সেটা টিকিয়ে রেখে সম্বোধন করলে দোষ কোথায়?

    জাপানিরা জাতি হিসেবে মুখটিপা ধরনের জাতি হলেও, তারা তাদের নিজেদের ঐতিহ্যের গল্প অন্যদেরকে বোঝাতে ও শুনাতে খুবই আগ্রহী। তারা চায় অন্যরা তাদের ঐতিহ্যকে বুঝুক, জানুক এবং নিজেদের দেশে গিয়ে সেসব নিয়ে আলোচনা করুক। ভালো দিকগুলো তুলে ধরুক।

    জাপানীদের, নিজেদের ঐতিহ্যের প্রতি ভালোবাসার গল্প এখানে এনে ছেড়ে দিলে ভুলই হবে। এ প্রসঙ্গে চমৎকার একটি উদাহরন এখানে বলা যায়…

    • বৃত্তি নিয়ে কিংবা অন্য কোনোভাবে যারা জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে যায়, তাদের জন্য বিশেষ একধরনের সুযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করে দেন (ব্যাক্তিগত ভাবেও করা যেতে পারে)। সেই ছাত্র বা ছাত্রিটির জন্য জাপানী একটি পরিবার নির্ধারণ করা হয়। যে পরিবারে ছাত্রটি গিয়ে থাকেন। পদ্ধতিটিকে ইংরেজীতে ‘হোমস্টে’ (Homestay Program) বলা হয়।

    বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পর, সেই পরিবারের সদস্যগন একটি নির্দিষ্ট দিনে এসে ছেলে বা মেয়েটিকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। তাদের সাথে থেকে জাপানী পারিবারিক রীতি, বিভিন্ন প্রথা, নিয়ম কানুন ঐতিহ্য, প্রাত্যহিক জীবন বিধান, সংস্কৃতি দ্রুত ও দক্ষতার সাথে শেখা হয়। আরো মজার বিষয় হলো, পরিবারের কর্তা এবং কর্তৃকে ‘বাবা- মা’ বলে সম্বোধন করার নিয়মও সেখানে দেখা যায়।

    তারাও যথাসাধ্য চেষ্টা করেন, ছেলেমেয়েদেরকে সন্তানের মতো তাদের ঐতিহ্য ও প্রথাগুলি শেখাতে। ব্যাক্তিগতভাবে আমার পরিচিত একজন আছেন, যিনি জাপানে গিয়ে এমন একটি পরিবারের সাথে ছিলেন। তবে সবাইকে এ বিষয়টি করতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। কেউ না চাইলে, এ বিষয়টি এড়িয়েও যেতে পারেন।

    এমন পদ্ধতি বিশ্বের আরো অনেক দেশেই প্রচলিত আছে। নিজস্ব ঐতিহ্যকে জেনে বুঝে অন্যদের ভিতর ছড়িয়ে দেয়ার এরচেয়ে চমৎকার উদাহরণ আর কী হতে পারে! বলা বাহুল্য তারা তারা তাদের ঐতিহ্যের বিষয়ে কতটুকু সচেতন।

    আরেকটি উদাহরণ এখানে প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে করছি। অতি সম্প্রতি (জুলাই মাসে) ভারতের মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি ডি হরিপরান্থমন, ভেশতি (নিজস্ব পোষাক) পরে তামিলনাডু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নিজস্ব ক্লাবে ঢুকতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভেশতি পরার কারণে তাঁকে সেখানে ঢুকতে দেয়া হয়নি। পরবর্তিতে বিষয়টি কোর্টে যায় এবং তামিলনাডুর রাজ্য বিধানসভায় একটি বিল পাশ হয়। শুধুমাত্র এই ভেশ্তি পরার জন্য কোনও প্রতিষ্ঠান যদি কাউকে ঢুকতে বাধা দেয়, তাহলে তাদের জেল ও জরিমানা করা হবে। ঐতিহ্যবাহী পোশাক ভেশ্তি অর্থাৎ লুঙ্গির মতো জড়িয়ে নেওয়া ধুতি পরেই এখন থেকে যে-কেউ যেকোনো প্রাইভেট ক্লাব বা সোসাইটিতে স্বচ্ছন্দে যেতে পারবেন।

    ঐতিহ্য পুরাতন হয় কিনা জানি না। ঐতিহ্যকে আধুনিক বলতে আমার কোনো আপত্তি নেই। নিজের পরিচয়কে ভেসে যেতে না দিয়ে সেসবকে ধরে রাখা যে আধুনিকতার চেয়েও আধুনিক, এ ব্যপারে আমার কোনো সন্দেহ নেই। অতিআগ্রহী কিংবা আগ্রহহীন হয়ে নিজের স্বকীয়তা ভুলে গিয়ে, স্রোতে ভাসা উচিত নয়।

    ঐতিহ্য পুরাতন হলেও ঝকঝকে ঝলমলে সম্পদ। আধুনিকতার নামে সবার সাথে দৌঁড়ানোর কোনো মানে নেই। এক পা পিছিয়ে গিয়ে নিজেকে চিনাটা ক্ষতিকর কিছু নয়, অতিব জরুরী। চলুন না এক পা পিছিয়ে দাড়াই এবং নিজেকে নিয়েই সামনে আগাই।

    লিখেছেন,
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপব
    সম্পাদক, মনের খবর
    মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও সেক্সহেলথ স্পেশালিস্ট
    সিনিয়র অধ্যাপক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান
    মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বিএসএমএমইউ, ঢাকা।

    /এসএস/মনেরখবর/

    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিএসএমএমইউ মনোরোগবিদ্যা বিভাগ সাইকিয়াট্রি সাইকিয়াট্রিস্টস
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleডাক্তার-রোগী সম্পর্কের দূরত্ব ঘোচানোর দায় সরকারের : ডা. জাফরুল্লাহ
    Next Article কোলকাতায় সম্পন্ন হলো ডব্লিউপিএ’র আঞ্চলিক কংগ্রেস
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব

    চেয়ারম্যান, মনোরোগবিদ্যাি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

    Related Posts

    মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

    November 5, 2025

    অলসতা কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে

    October 19, 2025

    বর্তমানেও অনেকেই মানসিক রোগকে লজ্জার বিষয় মনে করেন — ডা. মো. শাহেদুল ইসলাম

    October 13, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 2021316 Views

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025300 Views

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025209 Views

    পর্নোগ্রাফি থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ দূরে রাখবেন যেভাবে

    March 13, 2022118 Views
    Don't Miss
    কার্যক্রম November 20, 2025

    BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

    বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট মেন্টাল হেলথ BACAMH সদস্যপদ নবায়ন শুরু । ২০২৫ সালের…

    চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

    লক্ষ্য নির্ধারন নিয়ে মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিনের জুলাই সংখ্যা ২০২৫

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Ad Blocker Enabled!
    Ad Blocker Enabled!
    Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please support us by disabling your Ad Blocker.