ভালো থাকার কোনো বিকল্প নেই: নিশাত মজুমদার

[int-intro]বাংলাদেশের প্রথম নারী পর্বতারোহী হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন তিনি। তিনি বিশ্বাস রাখেন মানসিক শক্তিতে। তিনি নিশাত মজুমদার। মনেরখবরের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি বলেছেন মনের কথা, মানের শক্তির কথা, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষায় তাঁর ভাবনার কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুহাম্মদ মামুন।[/int-intro]

[int-quote]মানুষের মন একটা উদ্ভট জিনিষ! কেন যে ভালো লাগে তাঁর সংজ্ঞা কখনও হয়তো পাওয়া যায়না। মানুষের কিসে যে ভালো লাগবে আর কিসে লাগবে না ব্যাপারটা হয়তো অনেকটাই যুক্তিহীন।[/int-quote]

[int-qs]কেমন আছেন?[/int-qs]
[int-ans]ভালো আছি।[/int-ans]
[int-qs]কেন ভালো আছেন?[/int-qs]
[int-ans]ভালো না থাকলে তো বেঁচে থাকা দায় হয়ে যাবে![/int-ans]
[int-qs]বাঁচার জন্য কি ভালো থাকতেই হবে?[/int-qs]
[int-ans]অবশ্যই, বাঁচার জন্য ভালো থাকার কোনো বিকল্প নেই।[/int-ans]
[int-qs]পর্বতে গেলে কি ভালো থাকা যায়?[/int-qs]
[int-ans]ভালো থাকা যায় বলেই তো সেখানে যাওয়া।[/int-ans]
[int-qs]কেন?[/int-qs]

[int-ans]ভালো লাগে। মানুষের মন একটা উদ্ভট জিনিষ! কেন যে ভালো লাগে তাঁর সংজ্ঞা কখনও হয়তো পাওয়া যায়না। মানুষের কিসে যে ভালো লাগবে আর কিসে লাগবে না ব্যাপারটা হয়তো অনেকটাই যুক্তিহীন। তবুও অনেকের মতো আমারো প্রকৃতি ভালো লাগে পাহাড় ভালো লাগে। যতক্ষণ প্রকৃতির কাছে থাকি ততক্ষণ ভালো থাকি।[/int-ans]

[int-qs]এভারেস্টে উঠতে কোনটি বেশি প্রয়োজন? শরীরের জোর নাকি মনের জোর?[/int-qs]
[int-ans]মনের জোর। মাউন্টেইনিয়ারিং-এর একটা সময় আর শরীরের জোর সেভাবে থাকে না, তখন মনের জোরে চালতে হয়।[/int-ans]
[int-qs]কেমন লাগে পৃথিবীর সর্বোচ্চ বিন্দুতে দাঁড়িয়ে?[/int-qs]

[int-ans]এটা এক অদ্ভুত অনুভূতি। এতদিনের স্বপ্ন সাধনা পূরণ হয়েছে এর আনন্দ আবার একই সাথে এতদিন ধরে দেখে আসা স্বপ্ন আজ বাস্তব তাই স্বপ্নকে বিদায় নিতে হবে তার একটা মন খারাপ করা অনুভূতি।[/int-ans]

[int-qs]স্বপ্ন দেখা কি জরুরি?[/int-qs]
[int-ans]হ্যাঁ স্বপ্ন তো দেখতেই হবে। এবং তা প্রতি মুহুর্তে। স্বপ্ন দেখতে না পারলে মানুষ তো বাঁচতে পারবে না।[/int-ans]
[int-qs]ভূত দেখেছেন কখনও?[/int-qs]

[int-ans]নাহ, ভুতে ভয় পাইনা বলে হয়তো ভূত আমাকে এড়িয়ে চলে (হাসি)। তবে ছোটবেলায় একবার ভৌতিক আবহে পড়েছিলাম। যার কোনো লজিক পাচ্ছিলাম না।[/int-ans]

[int-qs]জীবনের জন্য লজিক কি খুব প্রয়োজন?[/int-qs]
[int-ans]না বোধহয়। লজিক ছাড়াই ভালো! লজিক এলেই জীবনের সমীকরণ যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ মেলাতে কত জটিলতা পোহাতে হয়।[/int-ans]
[int-qs]রাগ হয়?[/int-qs]
[int-ans]মেজাজ খারাপ হয়।[/int-ans]
[int-qs]মেজাজ খারাপ হলে কি করেন?[/int-qs]
[int-ans]নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করি মেজাজ ঠান্ডা করার।[/int-ans]
[int-qs]মানসিকভাবে অসুস্থ হয়েছেন কখনও?[/int-qs]
[int-ans]সেভাবে হইনি। তবে মন খারাপ, মেজাজ খারাপ এগুলোকেও তো ছোটখাটো অস্থায়ী মানসিক রোগ বলা যায়।[/int-ans]
[int-img name=””]https://monerkhabor.com/wp-content/uploads/2016/02/nishat-majumdar-2.jpg[/int-img]
[int-qs]বাংলাদেশের কোনো মেয়ে কিভাবে মনের জোর বাড়িয়ে এভারেস্ট অথবা অন্য কিছু জয় করবে?[/int-qs]

[int-ans]তাকে বিশ্বাস করতে হবে যে সে পারবে। নারীরা দুর্বল এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে নিজের বিশ্বাস ও মনের জোরের উপর। প্রকৃতি নিজের তাগিদেই নারীকে তৈরি করেছে তুলনামূলক কম শক্তিশালী করে। কারণ প্রকৃতির টিকে থাকা নির্ভর করছে নারীর উপর। [/int-ans]

[int-qs]এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?[/int-qs]

[int-ans]আমার মনেহয় আমাদের সবার আগে প্রয়োজন শিশুদের প্রতি মনোযোগ দেয়া এবং শিশুশিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হয়ে গেছে যে শিশুরা শুধু মুখস্তই করে যাচ্ছে কিন্তু কিছু নিতে পারছে না। যার কারণে শিশুরা পরিপূর্ণভাবে বিকশিতও হতে পারছে না। তাই তাদের নৈতিক শিক্ষা বা নিজেদের অধিকার এবং পারষ্পরিক সম্মানের ব্যাপারে তারা সচেতন হতে পারছে না।[/int-ans]

[int-qs]অনিরাপদ পরিবেশে একটি শিশুকে সার্বিক ভাবে বিকশিত করা কি সম্ভব?[/int-qs]

[int-ans]আমরা একটা খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। অতিরিক্ত পড়ার চাপ, বাইরে অনিরাপত্তা, খেলাধুলার পরিবেশ কম সব মিলিয়ে এখনকার শিশুরা (ছেলে মেয়ে উভয়েই) আগের চাইতে অনেক বেশি ঘরমুখী। এরজন্য দেশের সরকারকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। শিশুদের নিরাপত্তা ও বিকশিত হওয়ার পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। প্রয়োজনে শিশুর কল্যাণে কঠোর আইন প্রণয়ণ এবং তার বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ যতদিন শিশুরা সুন্দর ভাবে বিকশিত হতে না পারবে ততদিন জাতিগত ভাবে আমাদের উন্নয়ন সম্ভব নয়।[/int-ans]

[int-qs]মনেরখবর পাঠকদের বিশেষ করে নারী পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?[/int-qs]

[int-ans]আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এবং স্বপ্নটা দেখতে হবে। স্বপ্ন দেখা ছাড়া যাবে না। দেখা যায় অনেক মেয়েই কিছুদূর যাওয়ার পর হাল ছেড়ে দেয়। হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। নিজের স্বপ্নটা দেখতে হবে এবং পরিবার ও মা-বাবাকে সাথে নিয়েই স্বপ্নটা দেখতে হবে। খুব কম মা-বাবাই আছেন যারা একগুঁয়ে। সন্তানের ব্যাপারে প্রায় সব মা-বাবাই অনেক উদার থাকেন।[/int-ans]

[int-qs]মনেরখবরে সময় দেয়ার জন্য পাঠকদের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।[/int-qs]
[int-ans]ধন্যবাদ মনেরখবরের সকলকে।[/int-ans]
[int-quote]আমার মনে হয় আমাদের সবার আগে প্রয়োজন শিশুদের প্রতি মনোযোগ দেয়া এবং শিশু শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হয়ে গেছে যে শিশুরা শুধু মুখস্তই করে যাচ্ছে কিন্তু কিছু নিতে পারছে না। যার কারণে শিশুরা পরিপূর্ণভাবে বিকশিতও হতে পারছে না। তাই তাদের নৈতিক শিক্ষা বা নিজেদের অধিকার এবং পারষ্পরিক সম্মানের ব্যাপারে তারা সচেতন হতে পারছে না।[/int-quote]

Previous articleমানসিক রোগ থেকে ফিরে আসার গল্প
Next articleআমি সব সময় অস্থির থাকি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here