অহেতুক টেনশন, শারীরিক ছোট সমস্যাকে বড় করে দেখা

0
30
প্রশ্ন

প্রতিদিনের চিঠি – আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সেসবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন ‘প্রতিদিনের চিঠি’ বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আপনিও লিখতে পারেন আমাদেরকে এই ইমেইলে monerkhaboronline@gmail.com। সেজন্য ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজMk4c Adsসমস্যা- আমার নাম কাজল। বাসা সিলেট। বয়স ২৭ বছর। আমার বয়স যখন ১৮ তখন আমার উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে, আজ পর্যন্ত আমি এই সমস্যায় ভুগছি। গত দুই বছর থেকে আরো কিছু সমস্যায় আমি জর্জরিত। অহেতুক টেনশন, শারীরিক ছোট সমস্যাকে বড় করে দেখা, ঘর থেকে বাইরে বের হতে মন চায় না। অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, ভয়ভীতি, খিচুনি, শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় করা, একই চিন্তা বারবার করা, গাড়িতে করে কোথাও গেলে অস্থিরতা আরো বেড়ে যায় এবং কিছুক্ষণ পর আপনাআপনি ঠিক হয়ে যায়। মসজিদে জামাতে নামাজ পড়তে পারি না ভয় করে, বাড়ির বাইরে যেতে ভয় করে, এখন আমি কী করতে পারি দয়া করে বলবেন, আমি গত ৫ বছর ধরে ওষুধ খাচ্ছি, এখনো চলছে। cardon 25, sentix 0.5 ।

পরামর্শ – ভাই কাজল, আমার কাছে আপনার সমস্যার সমাধান জানতে চাওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনার সমস্যার বর্ণনা শুনে মনে হয়, শুরুতেই আপনি একধরনের ব্যক্তিত্বের সমস্যায় ভুগছিলেন, যা পরবর্তীতে মানসিক অসুখে রূপ নেয়, যার নাম Panic Disorder With Agoraphobia, এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য ওষুধের পাশাপাশি আপনারও যথেষ্ট ভূমিকা আছে। ভয়কে উপেক্ষা করে এটাকে জয় করার চেষ্টা করতে হবে। যে কাজে ভয় সেটা বার বার করতে হবে। যেখানে যেতে ভয় সেখানে বারবার যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

অস্থিরতা বেশি বেড়ে গেলে অবস্থা বুঝে মনে মনে কোরআন শরীফের যে কোনো সূরা পাঠ করা, মুখ দিয়ে বুক ফুলিয়ে লম্বা লম্বা শ্বাস নেওয়া, মোবাইলে গেম খেলা বা খাতা-কলম নিয়ে কিছু লিখতে বসা ইত্যাদি উপায়ে চিন্তাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করিয়ে ভয়কে দূর করার চেষ্টা করতে হবে।

বার বার চেষ্টার ফলে ধীরে ধীরে ভয়ও কেটে যাবে। অন্যদিকে ওষুধের ধরন, পরিমাণ ও মেয়াদ এবং সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসার জন্য আপনাকে অবশ্যই নিকটবর্তী কোনো অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অথবা এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে। আপাতত আপনি Tab. Esita 5mg সকালে খাওয়ার পর ১টা এবং Tab. Zolium 0.5mg রাতে ১টা যেতে পারেন। আশা করি উপকৃত হবেন।

মনে রাখবেন, এই ধরনের মানসিক রোগে চিকিৎসার সুফল পেতে একটু সময় লাগে। তাই অস্থিও না হয়ে ধৈর্য ধরে চিকিৎসা চালিয়ে গেলে অবশ্যই উপকার পাবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পরিশেষে আবারও আপনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুত রোগমুক্তির কামনা করে শেষ করছি। খোদা হাফেজ।

পরামর্শ দিয়েছেন-

অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন
প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ, কুমিল্লা

  • প্যানিক ডিজর্ডার সম্পর্কে আরও জানুন-

আরও দেখুন-

Previous articleমন ও মানসিক রোগ কতটুকু জানি?
Next articleসাইকিয়াট্রি বিভাগের নভেম্বর মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here