ডা. ফয়সাল রাহাত : মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের অন্য সদস্যদের সাথে মিলেমিশে ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেই তাকে বাঁচতে হয়। কিন্তু Social anxiety disorder বা সামাজিক উদ্বেগমূলক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সামাজিক পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে পারে না। তারা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড, যেমন- সামাজিক আন্তঃসম্পর্ক বজায় রাখতে, বক্তব্য প্রদান করতে কিংবা স্বল্পপরিচিত মানুষের সাথে আলাপ করতে অনীহা প্রকাশ করে। মানুষের সম্ভাব্য নেতিবাচক মন্তব্য ও সমালোচনার ভয়ে তারা নিজেকে গুটিয়ে রাখতে চায়। এ সকল কারণে সামাজিক উদ্বেগমূলক রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
রোগটি শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদেরই হয় না, বরং শিশু-কিশোররাও এ রোগে ভুগতে পারে। স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কেমন তা নির্ণয় করতে ইথিওপিয়ায় ৩৮৬ জন স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। ২০১৭ সালে করা এ Cross sectional গবেষণায় সোশাল অ্যাংজাইটি নির্ণয়ের জন্য Social Phobia Inventory (SPIN) নামক স্কেলটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
গবেষণায় দেখা যায়- উল্লিখিত কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ২৭.৫% সামাজিক উদ্বেগমূলক রোগে আক্রান্ত, যার মধ্যে ৩.২% কিশোরী। একক পিতা-মাতার সন্তানদের মধ্যে এর হার যথেষ্ট বেশি, তা হলো ৫.৭২%! সবচেয়ে ভয়ংকর যে ফলাফল পাওয়া গিয়েছিল তা হলো- সামাজিক উদ্বেগমূলক রোগে আক্রান্ত কিশোর-কিশোরীর ১.৭৫% মদ্যপান করে থাকে!
গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে এটি স্পষ্ট যে স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সোশাল অ্যাংজাইটি তথা সামাজিক উদ্বেগমূলক রোগ ক্রমবর্ধমান। তবে স্কুলভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে খুব সহজেই এর প্রতিকার করা সম্ভব, প্রয়োজন শুধু সচেতনতার।
মনের খবর টিভির নিয়মিত সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করুন
লিখেছেন,
ডা. ফয়সাল রাহাত
রেসিডেন্ট, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বিএসএমএমইউ
Reference
High Magnitude of Social Anxiety
Kindie Mekuria, Haregwoin Mulat, Habtamu derajew,
Tesfa Mekonen, Wubalem Fekadu, Amsalu Belete, Solomon Yimer,
Getasew Legas, Malek Menberu, Asmamaw Getnet, and Simegnew Kibret
Academic Editor: Arif Khan