দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টা এবং ধৈর্যের ফল পেতে যেমন মনোবল অক্ষুণ্ণ রাখতে হয় তেমনি লক্ষ্যে স্থির থাকতে হয়। কিছু কৌশল অবলম্বন করে এভাবেই সফলতা পাওয়া সম্ভব।
চরম প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই সমাজে সবকিছু ছাপিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছানো একজন ব্যক্তির জীবনে সফলতা প্রাপ্তির পথে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। লক্ষ্য ভিন্ন ভিন্ন হলেও সমাজের সব স্তরের মানুষের মাঝেই সফলতা প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা থাকে। সেটি হতে পারে একজন ছাত্র, যে একটি ডিগ্রী অর্জনের চেষ্টা করছে। হতে পারে একজন উদ্যোক্তা, যে ব্যবসায় সফল হবার প্রয়াস করছে।
আবার হতে পারে একজন পরিশ্রমী চাকুরীজীবী, যিনি কর্ম ক্ষেত্রে পদোন্নতির চেষ্টা করছেন। এভাবে প্রতিটি মানুষ তার নিজ নিজ জায়গা থেকে সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে সফল হবার প্রচেষ্টা করে চলেছে। এসব পরিশ্রমী মানুষের জন্য নিচে কিছু টিপস প্রদান করা হলো। যেগুলো তাদের মনোবল বাড়াবে এবং মানসিক চাপ দূর করে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে সহায়তা করবে।
উদ্যেশ্য ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করুন
যে কোন যাত্রায় সফল হতে হলে গন্তব্য এবং যাত্রা পথ দুটির বিষয়েই সুনিশ্চিত হওয়া আবশ্যক। এমন অনেক সময়ই আসবে যখন আপনি আশাহত হবেন। কারণ যাত্রা পথ সব সময় অনুকুল থাকবে না এবং আশানরুপ হবে না। আপনাকে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ এবং বিলম্বের শিকার হতে হবে। যা আপনার যাত্রা পথকে আরও দীর্ঘ এবং গন্তব্যে পৌঁছানকে আরও কঠিন করবে।
কিন্তু সবকিছু সত্ত্বেও থেমে গেলে চলবে না। আপনাকে সদা সর্বদা আপনার উদ্যেশ্যকে স্মরণ রাখতে হবে এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে। তাহলেই সব বাঁধা কাটিয়ে আপনি গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন, তথা সফল হতে পারবেন।
সুপরিকল্পনা করুন
নিজেকে বিফল ভেবে নেওয়া অনেক সহজ। প্রতিকূল অবস্থায় এমন মনে হতেই পারে যে আপনি ব্যর্থতার চোরাবালিতে ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছেন। আর ঠিক এমন মন দশা থেকে আপনাকে মুক্তি প্রদান করতে পারে সু-কর্মপরিকল্পনা।
কর্ম পরিকল্পনা আপনাকে প্রদান করবে সঠিক দিক নির্দেশনা। এমন অনেকেই আছেন যারা হয়তো বেশ সহজে লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন। আর তাদের সাথে নিজেকে তুলনা করলে আপনার হয়তো মনোবল কমে যেতে পারে।
কিন্তু আপনাকে এটা মনে রাখতে হবে যে আমরা সবাইই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকে নিজেদের লড়াই লড়ছি। তাই তুলনা না করে বরং কর্ম পরিকল্পনা নির্দিষ্ট করে দৃঢ় মনোবল নিয়ে সেই অনুসারে এগিয়ে যান। অবশ্যই আপনি সফল হবেন।
স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন
এমনটা ভেবে নেওয়ার কোন উপায় নেই যে সফলতা রাতারাতি এসে যাবে। সত্যিকার অর্থে দৃঢ় মনোভাব, কঠোর অধ্যাবসায় এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনই একজন মানুষকে ধীরে ধীরে সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দেয়।
একজন ভাস্কর্য নির্মাতা যেভাবে ধীরে ধীরে খোঁদাই করে শক্ত পাথরের গায়ে সঠিক ও ইচ্ছা অনুসার আকার প্রদান করে ঠিক তেমনি সঠিক ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে প্রচেষ্টা করে ধীরে ধীরে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়। নিজের জীবন যাপন এবং অভ্যাস স্বাস্থ্যকর হলেই লক্ষ্য অর্জনে সফল প্রচেষ্টা করা যায়।
নিজেকে পুরস্কৃত করুন
পুরস্কার বা প্রশংসা মানুষকে সব সময়ই সামনের দিকে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা যোগায়। তাই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর সম্পূর্ণ যাত্রা পথে নিজেই নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে চেষ্টা করুন। আর এ লক্ষ্যে ছোট ছোট সফল পদক্ষেপ গুলোকে উদযাপন করুন এবং নিজেই নিজেকে পুরস্কৃত করুন। এতে লক্ষ্যে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা বাড়বে।
প্রয়োজনে অন্যদের সহায়তা নিন
মানুষ একা বাস করতে পারে না। আর মনোবল এবং মানসিক শক্তি বাড়াতে আমাদের কাছের মানুষেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই যে কোন সমস্যায় কাছের মানুষদের পরামর্শ নিন। তাদেরকে মনের কথা খুলে বলুন। এতে বিষণ্ণতা বা মানসিক চাপের মতো সমস্যাগুলো অনেকটা প্রশমিত হবে।
উপরের কৌশলগুলো অনুসরণ করলে আমরা সবাইই সেই কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যতের আশা করতেই পারি যেখানে আমরা সবাইই নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজেদের সফল বলতে পারবো।
লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/anxiety-in-high-achievers/202107/how-stop-procrastinating
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে