পৃথিবীতে কী এক মহামারি এলো, সবাইকেই রেখেছে জীবন শঙ্কায়, প্রায় এক বছর পরেও আতঙ্ক কমেনি এতটুকুও আক্রান্ত হওয়ার। আর এই মহামারি রোগের সঙ্গে অনেকের জীবনে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা।
কারো বা সংসারেই অশান্তি দেখা দিয়েছে, এর সঙ্গে প্রিয়জনের অসুস্থতা বা প্রিয়জন হারানোর কষ্টও রয়েছে অনেকের। আর এখন দেখা দিল বন্যা। সব মিলিয়ে মনের ওপর যে চাপ পড়েছে, তার প্রকাশ ঘটছে প্রতিদিনের কাজে, কথায় আর আচরণে। সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না অনেকেরই। কথায় কথায় মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে, কোনো কথাই যেন সহ্য হচ্ছে না, ভালো কথাও ভালো লাগছে না। আবার ছোট ছোট কারণেও অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়ে যাচ্ছে।
পরে যখন মনে হচ্ছে এটা তো না বললেও হতো, ততক্ষণে হয়তো দেরি করে ফেলেছেন। যাকে বলা হয়েছে সে তো কষ্ট পেয়েই গেছে, আর এতে করে সম্পর্ক যেমন নষ্ট হতে পারে, বাড়তে পারে শত্রুতাও। এই মহামারির সময়ে রাগ নিয়ন্ত্রণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষ বা নারী, সবারই প্রায় একই অবস্থান রাগ প্রকাশের ক্ষেত্রে।
সম্প্রতি সানফ্রান্সিসকোর কংগ্রেস ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে,নার্সিং বিভাগের অধীনে গবেষকরা ৮০ জন পুরুষ এবং ১২৩ জন নারীর ওপর দীর্ঘদিন গবেষণা করেন।
গবেষণায় রাগের প্রকাশ, আত্মসম্মানবোধ, অনুভূতি এবং সাফল্যের জন্য নারী ও পুরুষের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন করা হয়। বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যলোচনা করে দেখা যায়, রাগী পুরুষের বৈশিষ্ট্য হলো রাগ বা ক্ষোভ প্রকাশের ক্ষেত্রে সরাসরি পথটি বেছে নিতেই পছন্দ করেন।
অপরদিকে অল্পতেই সরাসরি রাগ প্রকাশে অস্বস্তিবোধ করেন নারী। কিন্তু যখন সে রাগ প্রকাশ করে তখন পুরুষদের কাছাকাছিই থাকে সে প্রকাশভঙ্গি।
কোনো করণে রাগ হলেও অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। কারণ মানবিক গুণাবলীর জন্যই আমরা সেরা। রাগের জন্য হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে কোনো কাজ করা ঠিক নয়।
তারপরও যদি রাগ হয়েই যায়
• রাগী অবস্থায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন না
• যার ওপর বা যে কারণে রাগ হয়েছে কিছুক্ষণের জন্য তার কাছ থেকে দূরে থাকুন
• প্রয়োজনে কোথাও ঘুরে আসুন
• মন শান্ত করতে খুবই গভীর থেকে দম নিন
• ভালোগান শুনলেও অনেকের রাগ কমে যায়
• কারো সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করতে পারেন
• রাগ বা টেনশন কমানোর জন্য খানিকটা হাসি ঠাট্টাও করা যেতে পারে, তাতে মনটা হালকা হয়ে যায়।
রাগ পুষে না রেখে প্রকাশ করাই ভালো পথ মনে করেন অনেকে। তবে যদি সম্ভব হয়, একটু ধৈর্য ধরে প্রথমে শুনতে হবে অন্যজন কী বলছেন, আগে কথাটি ভালোভাবে বুঝে তারপর উত্তর দিতে হবে। কিছু একটা বলার আগেই ভেবে নিন, কথা তো আর ফিরিয়ে নেওয়ার তেমন সুযোগ থাকে না।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে