সেলাই বা বুনুনির কাজের শখ অনেকেরই রয়েছে। আর এই শখ মানসিক অস্বস্তি কাটাতেও সাহায্য করে। সেলাইয়ের কাজ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যারাই করবেন, তাদেরকে হতাশা, মানসিক অস্বস্তি, ‘ডিমেনশিয়া’ রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি বিলম্বিত করা এবং দীর্গদিন ধরে যে ব্যথায় ভুগছেন তা থেকে আরাম দেবে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হলো বিস্তারিত।
১৫ হাজারেরও বেশি শৌখিন বুননকারী মিলে যুক্তরাজ্যে গড়ে ওঠা এক সংগঠনের নাম ‘নিট ফর পিস’। তারা সেলাই করেন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য, আর সেলাইয়ের কাজের উপকারী দিক সম্পর্কে যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে এখানেই।
এই সংগঠনের একাধিক সদস্য দাবী করেন সেলাইয়ের কাজ করার মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থায় অনেকটা উন্নতি হয়েছে। একাধিক মন্তব্যের ভিত্তিতে এবিষয়ে বিস্তারিত গবেষণার পদক্ষেপ নেয় সংগঠনটি।
‘ব্রিটিশ জার্নাল অফ অকুপেশনাল থেরাপি’ শীর্ষক জার্নালে ওই গবেষণার ফল প্রকাশ পায়। সেখানে বলা হয়, ‘সংগঠনের প্রায় ৮১ শতাংশ সদস্যের দাবী সেলাইয়ের কাজ করার পর তারা মানসিক শান্তি অনুভব করেন। সুঁইয়ের ফোঁড়ের পুনরাবৃত্তি, সুতার নরম স্পর্শ মস্তিষ্কের নিঃসরণ করে ‘সেরোটোনিন’, যা সেলাইকারীর মন প্রফুল্ল করে এবং প্রায় সবধরনের শারীরিক ব্যথা থেকে আরাম দেয়।
২০০৭ সালে হার্ভার্ড মেডিকাল স্কুলের ‘মাইন্ড অ্যান্ড বডি ইনস্টিটিউট’ এই বিষয়ে গবেষণা চালায়। সেই গবেষণা মতে, নিয়মিত সেলাইয়ের কাজ করার কারণে হৃদস্পন্দনের গতি নেমে আসে প্রতি মিনিটে ১১টি স্পন্দনে এবং মনকে শান্ত করে। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বাড়ায়, পাশাপাশি এর জ্ঞানীয় ক্ষমতার ক্ষয় কমায়।
সেলাইয়ের কাজের সুফল এখানেই শেষ নয়। শখ হিসেবে সেলাই করাটা অত্যন্ত আরামের একটি অভ্যাস এবং এর সুফলগুলো অনেকাংশেই ধ্যানের সমতুল্য। সেলাই করার সময় পুরো মস্তিষ্ক কর্মরত থাকে। এতে করে যারা ‘পারকিনসন’স ডিজিজ’য়ে ভুগছেন তাদের চলাফেরার ক্ষমতার উন্নয়ন হয়।
উলের বল থেকে পরিধানযোগ্য পোশাক বানানো কিংবা বাতিল কাপড় আর সুতা থেকে সুন্দর কাঁথা তৈরি করতে পারাটা তুচ্ছ বিষয় নয় মোটেও, তাই কাজ শেষে আপনার আত্মতুষ্টির অনুভুতি হবে অতুলনীয়।