মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে মানুষের মাঝে রয়েছে ভ্রান্ত ধারণা, রয়েছে নানান কুসংস্কার। দেশে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কুসংস্কার দূরকরণে সাধারণ মানুষ কি ভাবছে তা জানতে অনলাইনে জনমত জরিপ করেছে মনের খবর।
১ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত মনের খবর অনলাইন পোর্টালে পরিচালিত জরিপে ১৬৬৭ জন অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নেদারল্যান্ড, সৌদি আরব থেকেও প্রবাসী বাঙালিরা অনলাইন জরিপে অংশগ্রহণ করেন।
জরিপে ”মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কুসংস্কার দূর করতে কোনটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন?” প্রশ্নের বিপরীতে সামাজিক সচেতনতা, পাঠ্যক্রমে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ের অর্ন্তভূক্তি, ধর্মীয় নেতাদের সচেতনতা, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ এবং অন্যান্য সহ ৫ টি অপশন দেওয়া হয়। এছাড়া কোনো সুপারিশ থাকলে সেটি লেখারও অপশনও দেওয়া হয়।
জরিপে অংশগ্রহকারীদের ৪৬.৫৫% (৭৭৬ জন) সামাজিক সচেতনতা, ২৩.৬৯% (৩৯৫ জন) পাঠ্যক্রমে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ের অর্ন্তভূক্তি, ১৬.৯৮% (২৮৩ জন) ধর্মীয় নেতাদের সচেতনতা, ১০.৫০% (১৭৫ জন) রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ এবং ২.২৮% (৩৮ জন) অন্যান্য অপশন বেছে নেন।
এছাড়া অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই তাদের লিখিত মতামত জানান। সেগুলির মধ্যে রয়েছে:
- সামাজিক সচেতনতাকে একটি সামগ্রিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে সম্পৃক্ত করতে হবে। একেক জনের কাজ একেক রকম। আাবার সবারটা মিলেই হবে হার্মনি।
- মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বিশেষ কোন অধ্যায় নবম দশম শ্রেণীর পাঠ্যক্রমে রাখা উচিত। অনেক চিকিৎসকই মানসিক রোগ নিয়ে অবহেলা করে থাকেন এবং তারা যথেষ্ট অজ্ঞতাপূর্ণ মন্তব্য করে থাকেন মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে। তাই MBBS এর কারিকুলামে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে অর্ন্তভূক্ত করতে হবে।
- সামাজিক সচেতনতার সাথে সাথে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা,পারিবারিক সচেতনতা এবং বিদ্যাপীঠগুলোতে বিজ্ঞান মনস্ক শিক্ষাক্রম বৃদ্ধি করা।
- সরকারি ভাবে মিডিয়াতে প্রচার করা।
- বাধ্যবাধকতা ছাড়া যেহেতু মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন হয় না তাই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
- সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি রাষ্ট্রকেও এগিয়ে আসতে হবে। এর পাশাপাশি মিডিয়ার দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
- মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থায় লোকবল বাড়াতে হবে।
- সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে ভুমিকা রাখতে হবে সবাইকেই। শুধু রাষ্ট্র নয় সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ, পেশাজীবি এবং সকল সেক্টরকে।
- পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে। মানসিক রোগকে অন্য সাধারণ রোগের মতো মনে করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। একজন মানসিক রোগীর পরিবারের সদস্যদের লোকলজ্জার ভয়ে বর্তমানে যেভাবে লুকোচুরি খেলতে হয় রোগীর চিকিৎসা নিয়ে, সেটা থেকে বের হওয়ার জন্যই জনসচেতনতা সৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন। মিডিয়াও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এজন্য প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ।
সূত্র: লেখাটি মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন ম