আমরা প্রায়ই বলি বা শুনি যে, আমি খুব স্ট্রেস এ আছি। বৈজ্ঞানিক ভাবে স্ট্রেস কাকে বলে, কি হয়, ভালো না খারাপ, কিভাবে কমানো বা মোকাবেলা করা যায় সেটা নিয়ে আগামী বেশ কয়েকটা লেখা রাখতে পারব বলে চেষ্টায় নামা গেলো।
স্ট্রেস কাকে বলেঃ অনেকে অনেক ভাবে স্ট্রেস কে সংজ্ঞায়িত করেছেন বা করা যায়ও। খুব সহজভাবে অর্থ ঠিক রেখে বোঝার জন্য বলা যায়, “স্ট্রেস এমন একটা অবস্থা যা আমাদের বিদ্যমান সম্পদ দ্বারা মোকাবেলা করতে হুমকির মুখে পরতে হয়”।
স্ট্রেসকে যদি আমরা ভালো করে বিশ্লেষণ করতে চাই, তাহলে দেখতে পারি স্ট্রেস এর কয়েকটা অংশ আছে। প্রথম অংশ হল স্ট্রেস এর জন্য একটা উদ্দীপনা। দ্বিতীয় অংশ হল যিনি এই উদ্দীপনার প্রতি সংবেদনশীল হবেন। তৃতীয় উপাদান হল তার হাতে বিদ্যমান সম্পদ দিয়ে তিনি কিভাবে এই স্ট্রেসকে মোকাবেলা করবেন বা ওই ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া, সেটা স্বাস্থ্যকরও হতে পারে আবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে। যেমনঃ একজন মানুষ বাঘ দেখল। স্বাভাবিকভাবে তিনি হয় পালানোর চেষ্টা করবেন বা বাঘের সাথে লড়াই করার চেষ্টা করবেন নিজের সকল শক্তি দিয়ে। স্ট্রেস হিসাবে আমরা এটা যদি দেখি তাহলে বাঘটা হল উদ্দীপনা, বাঘটা জীবন নাশকারী এটা হল অনুভূতি এবং পালিয়ে বাঁচা বা সমস্ত শক্তি দিয়ে লড়াই করে বাঁচা হল প্রতিক্রিয়া।
আমাদের ব্যক্তিত্ব অনেকভাবে এই প্রতিক্রিয়া পরিবর্তন করতে পারে। কয়েকটা ঘটনা চিন্তা করা যাক
১) লোকটি আসলেই বাঘ দেখেছিলেন এবং তিনি বাঁচার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। এটা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কারণ লোকটি মনে করেছিলেন তার শক্তি বাঘের শক্তির তুলনায় নেহাতই নগন্য।
২) লোকটি আসলে একটা বিড়াল দেখেছিলেন এবং বাঘ মনে করে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। এটা নিশ্চিত করে অস্বাভাবিক বলা যায় এবং এর প্রধান অসুবিধা হল লোকটির ব্যক্তিত্বে বা অনুভূতিতে। শেষ পর্যন্ত লোকটির সম্পদের অপচয় হল মাত্র।
৩) লোকটি আসলেই বাঘ দেখেছিলেন, কিন্তু তিনি বিড়াল মনে করে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখান নাই। এর ফলাফল কি হতে পারে একটু চিন্তা করলেই আমরা বুজতে পারব। এর কারণ হল লোকটি বাঘের জায়গায় বিড়াল দেখার ফলে ওটাকে আর হুমকি হিসাবে দেখেন নাই। সুতরাং তিনটি অংশের সুন্দর সমন্বয় প্রয়োজন।
স্ট্রেস কি শুধু জীবনের খারাপ অংশকেই বোঝায়? “The father of stress” Hans Selye এর মতে স্ট্রেস সুখের সময়ও হতে পারে। সুখের সময় যে স্ট্রেস হয় Eustress তাকে বলে। আর দুখের সময় যে স্ট্রেস হয় তাকে Distress বলে।
চলবে…
প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।